EAST BENGAL

সঙ্কটের চক্রব্যূহে লাল হলুদ

খেলা

EAST BENGAL INTER KASHI HYDERABAD FC ISL CHENNAIYIN FC I LEAGUE KOLKATA FOOTBALL BENGALI NEWS

চোটের জন্য চলতি আইএসএলের বাকি সময়টুকুর জন্য ছিটকে গিয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হোসে পারদো। বৃহস্পতিবার ক্লাবের তরফে ঘোষণা করা হয়, পারদো’কে ছেড়ে দিচ্ছে ক্লাব। তাঁর জায়গায় আসতে চলেছেন সার্বিয়ার বয়সভিত্তিক দলের প্রাক্তন সদস্য অ্যালেক্স্যান্ডার পানটিচ । 

ডুরান্ড কাপের ফাইনাল, সুপার কাপ জয়, আইএসএল-সুপার কাপ মিলিয়ে মোট ১১ ম্যাচ অপরাজিত থাকা। ২০২৩-২৪ মরশুমের ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে ফের স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন লাল হলুদ সমর্থকরা। কিন্তু দলের নিয়মিত বিদেশীদের চোট আঘাত ক্রমেই সেই স্বপ্নকে অলীক কল্পনায় পরিণত করবে কিনা, উঠে গিয়েছে সেই প্রশ্ন। 

সুপার কাপ জয়ের পরে ২৪ ঘন্টা পেরোতে না পেরোতেই ইস্টবেঙ্গল ঘোষণা করে, দলের নির্ভরযোগ্য আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার বোরহা হেরেরাকে লোনে ছেড়ে দেওয়া হবে। ক্লাবের তরফে বলা হয়, বোরহা নিজে আইএসএল মরশুমের বাকি সময়টুকুর জন্য এফসি গোয়া’র কোচ মানালো ডিয়াজের প্রশিক্ষণে খেলতে চেয়েছেন। প্রসঙ্গত, মানালো ডিয়াজ বোরহা’র প্রাক্তন কোচ। 

বোরহা’র পাশাপাশি দলের ‘ব্যাকআপ’ স্ট্রাইকার জাভিয়ের সিভেরিও’কেও লোনে জামশেদপুর এফসি’তে পাঠিয়ে দেয় লাল হলুদ ম্যানেজমেন্ট। আইএসএল এবং ডুরান্ডে কোনও গোল না পেলেও সুপার কাপে ছন্দে ফেরার লক্ষণ দেখা যায় সিভেরিও’র খেলায়। গোলও করেন তিনি। সেই খেলোয়াড় জামশেদপুরে গিয়ে গোল করছেন, করাচ্ছেনও। অপরদিকে সিভেরিও’র বদলি হিসেবে চীনের সুপার লিগ থেকে ফেলিসিও ব্রাউন ফোর্বসকে সই করিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। তাঁর নামের পাশে ঝকঝকে বায়োডেটা থাকলেও, ভারতীয় পরিবেশে মানিয়ে নিতে সমস্যায় পড়ছেন তিনি। প্রথম খেলতে নেমে নর্থইস্ট ম্যাচে গোল পেলেও খেলায় যথেষ্ট আড়ষ্টতা রয়েছে ফোর্বসের।

একইসঙ্গে দলের মাঝমাঠের মূল চালিকা শক্তি সল ক্রেস্পো চোট পেয়ে মাঠের বাইরে। তিনি এই মুহূর্তে সুস্থ হতে স্পেনে রয়েছেন বলে খবর। মাঝমাঠে বোরহার বদলি হিসেবে বার্সেলোনা অ্যাকাডেমিতে লিওনেল মেসি’র অধিনায়ক ভিক্টর ভাসকুয়েজ’কে সই করায় ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ৩৭ বছর বয়সী ভিক্টরের খেলা থেকেই স্পষ্ট, পুরো ম্যাচ ফিট হয়ে উঠতে ‘যথেষ্ট’ সময় লাগবে তাঁর। 

লালহলুদ ম্যানেজমেন্টের ছক ছিল, সল ক্রেসপো’র সঙ্গে জুড়ে মাঝমাঠ থেকে খেলা তৈরি করবেন ভিক্টর। কিন্তু ক্রেস্পোর চোট সব অঙ্কে জল ঢেলে দিয়েছে। 

এই আবহে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের একটা অংশের আশঙ্কা, ছন্দে ফিরতে বড্ড বেশি সময় নিয়ে ফেলবেন না তো ফোর্বস এবং ভিক্টর? 

লাল হলুদের দুর্ভোগ শুরু হয়েছিল ডুরান্ড কাপের ফাইনাল থেকেই। কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত নিজে পছন্দ করে অস্ট্রেলিয়া থেকে উড়িয়ে নিয়ে এসেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্ডার জর্ডন এলসেকে। তিনি প্রথম থেকেই দারুণ ছন্দে ছিলেন। হয়ে উঠেছিলেন সমর্থকদের আপনজন। কিন্তু ফাইনালে মোহনবাগান ম্যাচে গুরুতর চোট পেয়ে ছিটকে যান এলসে। তিনি এখন অস্ট্রেলিয়ায় রিহ্যাব শুরু করেছেন বলে খবর। 

জর্ডনের পরিবর্ত হিসেবে পশ্চিম এশিয়ার জর্ডন থেকে অপর ডিফেন্ডার হিজাজি মাহেরকে সই করিয়ে পরিস্থিতি সামলান কোচ কুয়াদ্রাত। সেই বদলে সাফল্যও আসে। 

ফুটবল মহল বলছে, সুপার কাপ এবং তারপর আইএসএলের ফিরতি ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গল দুরন্ত সংঘবদ্ধ ফুটবল উপহার দেয়। দারুণ ফুটবল খেলে গোটা দল। কিন্তু তারপর থেকে শুরু হয় ছন্দপতন। সিভেরিও, বোরহা, পারদো এবং ক্রেসপো’র বেরিয়ে যাওয়া মানে দলের ৬ সেট বিদেশীর মধ্যে বিদায় নিয়েছেন ৪জন। রয়েছেন শুধু হিজাজি মাহের এবং অধিনায়ক ক্লেইটন সিলভা। 

দ্বিতীয় পর্যায়ের আইএসএলে ম্যারাথন ক্রীড়াসূচির মুখোমুখি হতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। এখন প্রশ্ন নতুন তিন বিদেশী কত দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবেন দলের সঙ্গে? সল ক্রেস্পো’ই বা কবে ফিরতে পারবেন মাঠে? 

এত দুর্যোগের মধ্যেও আত্মবিশ্বাসী ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। তাঁর দাবি, এখনও আইএসএলের প্রথম ছয়ে শেষ করার সম্ভাবনা রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। 

প্রসঙ্গত, আইএসএলের প্রথম ৬টি দল নক-আউট পর্বের যোগ্যতা অর্জন করবে। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি মরশুমে নকআউন পর্যায়ে ঈর্শনীয় রেকর্ড লাল হলুদের। কিন্তু নক আউটে কি যেতে পারবে টিম ইস্টবেঙ্গল? হঠাৎ করেই জটিল হয়ে গিয়েছে আপাত সহজ এই প্রশ্নের উত্তর। 

Comments :0

Login to leave a comment