STORY — SOURISH MISHRA — SAYLUT— NATUNPATA — 19 APRIL 2025, 3rd YEAR

গল্প — সৌরীশ মিশ্র — স্যালুট — নতুনপাতা — ১৯ এপ্রিল ২০২৫, বর্ষ ৩

ছোটদের বিভাগ

STORY  SOURISH MISHRA  SAYLUT NATUNPATA  19 APRIL 2025 3rd YEAR

গল্পনতুনপাতা

স্যালুট 
সৌরীশ মিশ্র

বিকেলবেলা। মামাতো দিদি মামের সঙ্গে বেড়াতে বেড়িয়েছে বাবাই।
গতকাল মামার বাড়িতে এসেছে ও। অ্যানুয়াল পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত পরশু। রেজাল্ট বেরোতে দেরী আছে। তাই, কয়েকটা দিন মামার বাড়িতে কাটাতে এসেছে সে। প্রতি বছরই অ্যানুয়াল এক্সাম হয়ে গেলেই সে মামার বাড়িতে এসে থাকে ক'দিন।
ভীষণ গরম পড়েছে। এই একটু আগে মামদিদি বাবাইকে একটা কাঠি-আইসক্রিম কিনে দিয়েছে। সেটা চেটে-চেটে খেতে-খেতেই হাঁটছে মামদিদির পাশে-পাশে বাবাই।
বাস-রাস্তা ছেড়ে বাবাই-এর মামার বাড়ির পাড়ার রাস্তায় ঢুকল ওরা। এই পাড়াতে ঢোকার দুটো রাস্তা। একটা, যেটা দিয়ে ওরা ঘুরতে বেড়িয়েছিল। আর এটা, যেটা দিয়ে এখন ওরা ফিরছে বাড়ি।
আর একটু এগিয়েছে সবে ওরা, হঠাৎই ওদের দুজনেরই চোখ আটকে গেল রাস্তাটার ডান পাশের একতলা বাড়িটার সামনের দেওয়ালটায়। কারণ, একটা সুন্দর পোট্রেট আঁকা হয়েছে তিন-তিনবার মহাকাশে পাড়ি দেওয়া এবং সম্প্রতি মহাকাশে ন'মাস কাটিয়ে পৃথিবীতে ফেরা নভশ্চর সুনীতা উইলিয়ামস-এর ঐ দেওয়ালে। বাবাই জানে, এই পাড়ায় যে ক্লাবটা আছে সেই ক্লাবের বাড়ি এটা।
"সুনীতা উইলিয়ামসের ছবি যে আমাদের ক্লাব ক্লাব-ঘরের দেওয়ালে আঁকাবেই, তা জানতাম।" স্বগোতোক্তি করে মাম।
"কি করে জানতে? কারো কাছে শুনেছিলে?" জিজ্ঞেস করে বাবাই।
"দূর বুদ্ধু! অন্য কারোর কাছে জানতে হবে কেন! আমাদের পাড়ার ক্লাব ভারতীয় কেউ বা ভারতীয় বংশোদ্ভূত কেউ কোনো দারুণ কিছু করলেই তাঁকে সম্মান জানায় তাঁর একটি ছবি আঁকিয়ে ক্লাব-ঘরের বাইরের এই দেওয়ালে। তুই আগে লক্ষ্য করিসনি ব্যাপারটা?"
"হ্যাঁ গো, এখন মনে পড়ছে। গতবছর অলিম্পিকের পর তো মানু ভাকেরের ছবি আঁকা হয়েছিল, তাই না?"
"হ্যাঁ। তাহলে এখন সুনীতা উইলিয়ামস-এর ছবি যে আঁকাবে ক্লাব, সে তো জানাই কথা। কি অ্যাচিভমেন্ট ওনার, ভাব তো! উনি যা করলেন, মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে তা তো একটা মাইলস্টোন হয়ে রয়ে গেল। এমনি-এমনি কি জয়ধ্বনি উঠছে তাঁর নামের, সারাটা বিশ্বজুড়ে।"
"একদম ঠিক বলেছো মামদিদি।"
এইটুকু বলেই চুপ করে যায় কয়েকক্ষণের জন্য বাবাই। অপলকে সে তাকিয়েই থাকে 'মহাকাশ-কন্যা' সুনীতা উইলিয়ামস-এর পোট্রেটটার দিকে। 
ভাই-এর এই ব্যাপারটা চোখ এড়ায় না মামের। সে তাই বলে ওঠে, "কি রে পুরো চুপ করে গেলি কেন? কি ভাবছিস এতো ছবিটার দিকে তাকিয়ে?"
মামদিদির মুখের দিকে এবার তাকায় বাবাই। বলে, "মামদিদি, মনে-মনে স্যালুট জানালাম সুনীতা উইলিয়ামস-কে।"
ভাই-এর কথাখানা ভাল লাগে খুব মামের। সে বলে, "বেশ করেছিস। ওনাকে স্যালুট করবি না তো কাকে করবি!" আর একথা বলতে বলতেই বাবাই-এর মাথার চুলগুলো আদর করে হাত দিয়ে এলোমেলো করে দেয় সে।
 

Comments :0

Login to leave a comment