Adivasi and Folk Artists Association

পঞ্চায়েত থেকে লুটেরা হটানোর স্লোগান প্রান্তিক জনতার সমাবেশে

রাজ্য

Adivasi and Folk Artists Association

পুঁজিবাদের আগ্রাসনে আদিবাসী, দলিত, প্রান্তিক মানুষের অবস্থা শোচনীয়। সংবিধানের সংরক্ষণ নীতিরও ইতি টানার চেষ্টা চলছে। ওদিকে চাকরি লুট করে ফুলে ফেঁপে উঠেছে শাসক দল। আরও বড় লড়াই লড়তে হবে আমাদের। মঙ্গলবার কলকাতার ধর্মতলায় প্রতিবাদ সমাবেশে দলিত শোষণ মুক্তি মঞ্চের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ডাঃ রামচন্দ্র ডোম এ কথা বলেছেন। এদিন পশ্চিমবঙ্গ সামাজিক ন্যায় মঞ্চ, পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী অধিকার মঞ্চ এবং পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী ও লোকশিল্পী সঙ্ঘের যৌথ উদ্যোগে রানি রাসমণি রোডে হয়েছে এই সমাবেশ। লুটেরাদের হটিয়ে মানুষের পঞ্চায়েত গড়ার স্লোগান তুলেছে প্রান্তিকতম অংশের লড়াকু মানুষের এই সমাবেশ।

 

 

 

 

সমাবেশে একসুরে আওয়াজ উঠেছে, জল, জমি, জঙ্গল থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ—  রাজ্য জুড়ে চলা ব্যাপক লুট ও দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত শাসক দলের নেতা মন্ত্রীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দিতে হবে। মানুষের হাতে কাজ নেই, রুজি রোজগার চরম বিপর্যস্ত।  আদিবাসী, তফসিলি, দলিত, সহ গরিব শ্রমজীবী সমস্ত অংশের মানুষকে একজোটে দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী অধিকার মঞ্চের সহ সভানেত্রী দেবলীনা হেমব্রম বলেন, রাজ্যের শাসক দল আমাদের ঠকিয়ে নিজেদের পকেট ভরছে। আদিবাসী দলিত মানুষকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে এনআরসি চালুর মাধ্যমে, বিভাজন করছে। এর বিরুদ্ধেও আরও বড় লড়াই আছে সামনে। পঞ্চায়েতে গণতন্ত্র রক্ষা করা জরুরি। পঞ্চায়েত থেকে ওই লুটেরাদের উৎখাত করে মানুষের পঞ্চায়েত গড়তে হবে।  

 

 

 

 
সমাবেশ শুরুর আগে এক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শামিল হন আদিবাসী সমাজের শিল্পীরা। ধামসা, মাদল সহ নৃত্য, গীত, কবিতা পাঠ সহ বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন তাঁরা। তাঁদের গীতবাদ্য, নৃত্যের তালে সাড়া দেন বহু পথচলতি সাধারণ মানুষও। আদিবাসী লোকশিল্পীদের কথায়, এই গান বাজনা হলো আমাদের জীবনের অন্যতম অঙ্গ। এই অধিকারটুকুও কেড়ে নিতে চায় শাসক দল, সরকারের গুণগান না করলে জারি করে নানা ফতোয়া, যেমন হয়েছে পুরুলিয়ায়। আমাদের লড়াই চলবে। এদিনের সমাবেশে এই লড়াইকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ডাক দিয়ে দেবলীনা হেমব্রম বলেন, অনেক হয়েছে, আর নয়। এবার সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তীব্র লড়াই লড়তে হবে আমাদের। লুটেরাদের উৎখাত করতে হবে। প্রতিটি গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে  গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়িয়ে আরও বেশি করে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে তাঁদের।  
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক বাসুদেব বর্মণ, সঞ্চালনা করেন পশ্চিমবঙ্গ সামাজিক ন্যায় মঞ্চের কার্যকরী সভাপতি দেবেশ দাস। বক্তব্য রাখেন পশ্চিমবঙ্গ সামাজিক ন্যায় মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক অলোকেশ দাস, আদিবাসী অধিকার মঞ্চের নেতা পুলিন বিহারী বাস্কে, রবীন্দ্রনাথ হেমব্রম সহ আদিবাসী ও লোকশিল্পী সঙ্ঘের নেতা জলধর কর্মকার, শঙ্কর মুখোপাধ্যায়, দেউচা পচামীবিরোধী আন্দোলনের নেতা সুশীল ধাঙ্গরা প্রমুখ। এদিন সমাবেশের শুরুতে প্রয়াত দলিত-তফসিলি আন্দোলনের নেতা মনোরঞ্জন বড়ালের স্মৃতিচারণা করেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ও তিন সংগঠনের কর্মী সদস্যরা।   
 

Comments :0

Login to leave a comment