রাত পোহালে সপ্তম দফা তথা শেষ দফার লোকসভা নির্বাচন। গোটা দেশের সঙ্গে রাজ্যের তিনটি জেলার ৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে। শেষ দফায় ভোট হবে দমদম, বারাসত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ডহারবার, যাদবপুর, কলকাতা দক্ষিণ, কলকাতা উত্তর কেন্দ্রে। বারাসত, দমদম লোকসভার ভোটের প্রস্তুতি তুঙ্গে। বুথগুলিতে ভোট কর্মীরা এসে গেছেন। অপরদিকে বামফ্রন্ট কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বুথ সাজানোর কাজ সকালের দিকে বৃষ্টির কারণে থমকে থাকলেও সূর্যের মুখ দেখার পর পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। দমদম লোলসভার কেন্দ্রের পানিহাটির ২৯ নং ওয়ার্ডের তৃনমূল কাউন্সিলার অরিন্দম বিশ্বাস স্থানীয় ক্ষুদিরাম নগর প্রাথমিক স্কুলের ভোটারদের থেকে আধারকার্ড নিয়ে নিয়েছে। বলছেন, যদি তৃণমূলের প্রার্থী ভোটে হেরে যায় তাহলে সরকারী প্রকল্পের কোন সুযোগ সুবিধা আর পাওয়া যাবে না। খড়দহের ১৮১ থেকে ২৪১ নং পোলিং স্টেশনের ভোটারদের বাড়ি বাড়ি তৃণমূলের ২৫ থেকে ৩০ জনের দল পৌঁছে ভোটারদের ভোটার কার্ড কেড়ে নিয়েছে। এই সমস্ত অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বারাসত লোকসভার নিউটাউনে পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে না পারলেও এবারে তারা নিজেদের প্রস্তুত রেখেছে বুথ আগলে রেখে তারা ভোট দেবেন। তৃণমূল ভোটারদের এই মনোভাব বুঝতে পেরে বিভিন্ন রাস্তার সরু সরু গলির মুখে বড় করে প্যান্ডেল করে বুথ অফিস বানিয়েছে। বুথ ক্যাম্পের সরকারী নিয়ম হচ্ছে একটি টেবিল দুটি চেয়ার। তাহলে এত বড় প্যান্ডেল কেন? জানা গেল ভোটারদের ভোট দিতে ওই প্যন্ডলের মধ্য দিয়েই যেতে হবে। নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বুথ লেবেল অফিসারের কাজ হচ্ছে সরকারীভাবে ভোটারদেরা বাড়ি বাড় বুথ স্লিপ পৌঁছে দেওয়া। বেশিরভাগ বুথ অফিসার এই কাজ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত করেন নি। হাবড়ার জয়গাছি গ্রামে পুলিশ বামপন্থীদের বুথ করতে বাধা দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে বিডিও কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। দমদম লোকসভা কেন্দ্রের মোট ভোটার ১৬ লক্ষ ৯৯ হাজার ৬৫৬। পুরুষ ভোটার ৮৩ লক্ষ ৮০ হাজার ৯০ জন। মহিলা ভোটার ৮ লক্ষ ৬১ হাজার ৫২১ জন। থার্ড জেন্ডার হলো ৪৫ জন। মোট পোলিং স্টেশন ১৭৯২। বারাসত লোকসভার ভোটার সংখ্যা ১৯ লক্ষ ৫ হাজার ৪০০। পুরুষ ভোটার ৯ লক্ষ ৫৮ হাজর ৮৯২জন। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৯ লক্ষ ৪৬ হাজার ৪৪৩ জন। থার্ড জেন্ডার ৬৫ জন। পোলিং স্টেশনের সংখ্যা ১৯৯১। বরানগর বিধানসভার মোট ভোটার ২ লক্ষ ১৬ হাজারের কিছু বেশি। পোলিং স্টেশনের সংখ্যা ২৫২ জন।
দমদম লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআই(এম) প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেছেন, শনিবার শেষ দফার ভোট। নানারকম প্রচেষ্ঠা আছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যথাযথ ব্যবহার করার রাজ্য প্রশাসনের দুর্বলতা ভয়াবহ। রাজ্য প্রশাসনের এই দুর্বলতা অনান্য নির্বাচন যেমন পঞ্চায়েত, পৌরসভার ক্ষেত্রে বিগত দিনে লক্ষ্য করা গেছে। এটা পঞ্চায়েত নির্বাচন নয়। তা সত্বেও নানাভাবে এই নির্বাচনে কেন্দ্রীয়বাহিনীকে সঠিকভাবে ব্যবহার না কারার গাভিলতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একে রুখে দেওয়ার ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। তিনি বলেছেন, মানুষ স্থির করে ফেলেছেন। রাজ্যে চাকরী বিক্রি, নেতা মন্ত্রীদের জেল , প্রধানমন্ত্রীর দাপট, মুখ্যামন্ত্রীর হাবভাব। বাংলাকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। তৃণমূল রাজ্যের বারোটা বাজিয়েছে এবং বিজেপি তাকে প্রশ্রয় দিয়েছে। প্রচারের শেষে দমদম লোকসভা কেন্দ্রের মনোভাব মোদী ও মমতা বুঝতে পেরেছেন। সপ্তম দফার নির্বাচনের আগে মোদী বিবেকানন্দ রকে গিয়ে ধ্যানে বসেছেন। মানুষ নিজ্জন জায়গায় ধ্যান করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখলাম আলোর ছলকানীতে দেশের সংবাদমাধ্যমকে নিয়ে গিয়ে মোদী ধ্যান করছেন। ধ্যান কে পন্য করেছেন। এটাও রাজনৈতিক ব্যবসা। মানুষের বিশ্বাস নিয়ে ছেলে খেলা করছেন। তিনি বলেছেন, অভিষেক ব্যানার্জি নবীনের না প্রবীনের প্রচারে গেছেন তা নিয়ে মানুষের কোন মাথাব্যাথা নেই। ডায়মন্ডহাবরার মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারলে উনিও হেরে যাবেন।
Comments :0