লিভারপুল থেকে বেয়ার্নের সাদিও মানে এক আর সেনেগালের মানে আরেক। আঘাত আছে, শেষ পর্যন্ত সংশয়ও আছে। কিন্তু মানে খেললে সেনেগাল ভয়ঙ্কর। কৃষ্ণ মহাদেশের পাঁচ দেশ কাতারে এসেছে। সেনেগাল, তিউনিশিয়া, ঘানা, মরক্কো, ক্যামেরুনের প্রথম একাদশে অনেক খেলোয়াড়ই মানের মতো— বিশ্ব ফুটবলে চেনা ক্লাব পরিচিতি দিয়ে। প্রশ্ন হলো, আফ্রিকা কতদূর যেতে পারে?
অনেক দূর, মনে করছেন রজার মিল্লা। তিন বিশ্বকাপ খেলা ক্যামেরুনের এই স্ট্রাইকার তাঁর গোলের জন্য এবং গোল—পরবর্তী আনন্দ প্রকাশের ধরনের জন্য জনপ্রিয় ছিলেন গোটা বিশ্বেই। মিল্লা বলেছেন, এখনই আফ্রিকার ভালো সময় যখন তারা দেখাতে পারে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের অনেকেই তাদের দলে। তাদের বোঝাতে হবে তারা বড় দলগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সক্ষম। কয়েক বছর খারাপ সময় কাটিয়ে এখন আফ্রিকার ফুটবল অনেক উন্নতি করেছে। এই হলো বিশ্বকে দেখানোর সময়ে।
একটি বৈশিষ্ট্য চোখেই পড়ছে। এই প্রথম আফ্রিকার পাঁচ দেশের ম্যানেজার সেই মহাদেশেরই। সাধারণত লাতিন আমেরিকা বা ইউরোপের কোচ বিশ্বকাপ দলকে তৈরি করতেন, সেই প্রথা ভেঙেছে। এ পর্যন্ত আফ্রিকার কোনও দলই সেমি ফাইনালে পৌঁছায়নি। এই ইতিহাস বদলই এবার চ্যালেঞ্জ।
সেনেগালের কোচ আলিউ সিসে যিনি ২০০২ বিশ্বকাপে দলের অধিনায়ক ছিলেন। ফ্রান্সকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল সেই দল। শেষ পর্যন্ত কোয়ার্টার ফাইনালে গিয়েছিল। মানের খেলায় ভরপুর বৈচিত্র। বাঁ দিক দিয়ে শুরু করে মাঝখানে ঢুকে বিপক্ষের রক্ষণকে হেলিয়ে দেন। কোনও কারণে তিনি মাঠে না নামতে পারলে এই ফাঁক বোজানো কঠিন হবে। তবে এও ঠিক যে দলে একগুচ্ছ প্লেয়ার আছেন যাঁরা অনেকদিন একসঙ্গে খেলছেন। সংগঠন ভালো। ইসমালিয়া সার, ইদ্রিসা গুয়ে ছাড়াও ভ্যালেন্সিয়ার নিকোলাস জ্যাকসন চমক দিতে পারেন।
ক্যামেরুন কাতারে এসেছে চাঞ্চল্যকর প্লে অফ খেলে। আলজেরিয়ার বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে ক্যামেরুন জিতেছিল ১২৪ মিনিটে দেওয়া গোলে। ক্যামেরুনের হয়ে চারবার বিশ্বকাপ খেলা রিগোবার্ত সঙ কোচ। দলের সবচেয়ে ধারালো তির এরিক-ম্য্যাক্সিম চুপো মোটিঙ। বয়স ৩৩ পেরোলেও শেষ ৯ ম্যাচে ১২ গেল করেছেন। আফ্রিকার গোল্ডেন বুট জয়ী আবুবকর রয়েছেন। অ্যাঙ্গুইসার মতো বিশ্বমানের প্লেয়ার রয়েছেন।
মরক্কোর দলে রয়েছেন পিএসজি’র আসরাফ হাকিমি, চেলসির হাকিম জিয়েচের মতো প্লেয়ার। হাকিমি যেমন ডান প্রান্তে এখন মেসিকে বল জোগান, জিয়েচ খেলা তৈরি করতে পারেন। সেভিয়ার বোনো গোলরক্ষক। ঘানার সমস্যা শুরু হয়েছে গোলরক্ষক দিয়েই। প্রথম পছন্দের দু’জনই চোট পেয়ে দলের বাইরে। এমন একঝাঁক খেলোয়াড় রয়েছেন যাঁদের জন্ম ঘানার বাইরে। তারিক লেম্পটে, আন্তোইন সেমেইনোর জন্ম ও খেলা ইংল্যান্ডে। ক্লাব ব্রুগের ডিফেন্ডার ডেনিস ওডোই ইংল্যান্ডে বেড়ে উঠেছেন। ইনাকি উইলিয়ামস স্পেনের বদলে ঘানাকে বেছে নিলেও তাঁর ভাই নিকো খেলছেন স্পেনে। তিউনিশিয়ার ওয়াহাবি খাজরি বিপক্ষের রক্ষণের পক্ষে ত্রাস। কিন্তু পর্যবেক্ষকদের নজরে রয়েছেন তরুণ বিস্ময় হানিবাল মেজব্রি।
Comments :0