Doluakhaki

আমি চাই পরীক্ষা দিতে, বলছে দলুয়াখাঁকির আলিমা

রাজ্য জেলা

আলিমা খাতুন। দলুয়াখাঁকি গ্রামের বাসিন্দা। মা গৃহসহায়িকার কাজ করেন। বাবা দিন মজুর। দিদি উচ্চ-মাধ্যমিক পাশ করেছে। আলিমা এবার মাধ্যমিক দেবে। পারবে কি ও পরীক্ষায় বসতে?
আলিমা পরীক্ষা দিতে চায়। সোমবার সকালে বাড়ি হারিয়েছে সে। বাবা সিপিআই(এম) করে তাই সইফুদ্দিন খুনের পর তৃণমূলের দুষ্কৃতিরা গ্রামের একের পর এক বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। আলিমাদের বাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আগামী সপ্তাহ থেকে তার টেস্ট পরীক্ষা। অন্যান্য দিন গুলোর মতো সোমবারও সকালে উঠে পড়তে বসার জন্য তোরজোর করছিল সে। হঠাৎ হামলা চালায় তৃণমূল। চোখের সামনে একের পর এক বাড়িতে আগুন লাগাতে দেখেছে বছর ১৪র মেয়েটি।
তিনি বলেন, ‘‘সকালে উঠে বাড়ির কিছু কাজ করে পড়তে বসার জন্য তৈরি হচ্ছিলাম। সেই সময় হঠাৎ করে হামলা হয় গ্রামে। ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কোন মতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসি। চোখের সমানে দেখেছি বাড়ি পুড়ে যেতে।’’


ফোনে কথা বলতে বলতে কেঁপে উঠছিল তার কন্ঠ। ‘‘বই বাঁচাতে পারিনি। অ্যাডমিট কার্ড সাথে আছে। আমি চাই পরীক্ষা দিতে।’’
ওর বাড়িতে যখন আগুন লাগানো হয় তখন নিজের লেখা পড়ার বই গুলোকে বাঁচানের আপ্রান চেষ্টা করেছিল আলিমা। পারেনি। আলিমার বই খাতা সব পুড়ে ছাই। কোন মতে নিজের অ্যাডমিট কার্ডটা সে বাঁচাতে পেড়েছে। 
আলিমা চায় পরীক্ষায় বসতে। সে চায় লেখা পড়া করে বড় হতে। এসএফআই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে তার বইপত্রের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। বর্তমানে আলিমা সহ দলুয়াখাঁকি গ্রামের বহু মহিলা এবং শিশু দক্ষিণ বারাসাতে সিপিআই(এম)’র দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। সেই ‘পার্টি অফিসে’ বসেই লেখা পড়া চালিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে খোলা আকাশের বাসিন্দা আলিমা খাতুন।

Comments :0

Login to leave a comment