CBI RAID COACHBIHAR

কোচবিহারে বিএড কলেজ মালিকের বাড়িতেও সিবিআই

রাজ্য

এবার সিবিআই হানা কোচবিহারেও। কোচবিহার ২নং ব্লকের রাজারহাট ট্যাঙ্গনমারি এলাকায় তৃণমূল ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীর  বেসরকারি বিএড এবং ডিএলএড কলেজে সরেজমিনে তদন্তে সিবিআই আধিকারিকরা। এই কলেজের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। 

  বৃহস্পতিবার সকালেই সিবিআই প্রতিনিধিদের একটি দল কোচবিহার ২নং ব্লকের খাগড়াবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মহিষবাথান এলাকায় তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বেসরকারি বিএড এবং ডিএলএড কলেজের কর্ণধার শ্যামল কুমার করের বাড়ি সংলগ্ন একাধিক বাড়িতে প্রথমে হানা দেয়। তৃণমূলের কোচবিহার ২নং ব্লক সভাপতি সজল সরকারের দাদা সুবল সরকারের বাড়িতেও কিছুক্ষণের জন্য ঢুকতে দেখা যায় সিবিআই'র এই দলকে। এর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে অল্প সময়ের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁরা। এরপর তারা শ্যামল কুমার করের বাড়িতে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন তিনি এবং তাঁর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এই বাড়িতে বসবাস করেন না। এরপরই সিবিআই এর এই প্রতিনিধি দল সোজা চলে আসে শ্যামল কোলের বাড়ির কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে ট্যাঙ্গনমারি এলাকায় অবস্থিত সংশ্লিষ্ট এই বিএড এবং ডিএল এড কলেজে। তবে কী কারণে এই অভিযান! তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।

 এই কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ কিশোর কুমার দাস এদিন জানান, সিবিআই'র একটি দল তাদের কলেজে এসেছে ঠিকই, কিন্তু এর সঙ্গে কলেজের পঠন-পাঠন বা অন্যান্য বিষয়ের কোন সম্পর্ক নেই। তিনি জানান, তারা অন্য কোন বিষয়ে কলেজে এসেছেন এবং যে সমস্ত নথির প্রয়োজন তা কলেজের অফিস থেকে সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখছেন।

  তবে, চাকরি দেবার নাম করে প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে বিশাল অংকের টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে কোচবিহার শহর সংলগ্ন খাগড়াবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিষবাথান এলাকার বাসিন্দা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ এই শ্যামল কুমার করের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাদ্য দপ্তরের সাব ইন্সপেক্টর পদের পাশাপাশি গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রায় ৩ শতাধিক যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে সব মিলিয়ে ৫ কোটিরও বেশি টাকা তুলেছেন তিনি। অথচ চাকরি হয়নি একজনেরও। এই পরিস্থিতিতে প্রায় ৯ মাস যাবত  গা ঢাকা দিয়ে আছেন প্রতারনায় অভিযুক্ত তৃণমূল ঘনিষ্ঠ এই ব্যবসায়ী। বেশ কয়েকবার টাকা ফেরতের দাবিতে কোচবিহার ২নং ব্লকের ট্যাঙ্গনমারি এলাকায় এই কীর্তিমানের বেসরকারি বিএড এবং ডিএলএড কলেজের সামনে বিক্ষোভেও শামিল হন প্রতারিতরা।

 এই শ্যামল কুমার কর দীর্ঘদিন যাবতই রাজ্যের শাসক দলের সাথে যুক্ত। নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী বলে প্রকাশ্যে পরিচয়ও দেওয়া আছে তার। তার বাড়ির পার্শ্ববর্তী ট্যাঙ্গনমারি এলাকায় একটি বেসরকারি বিএড কলেজের কর্ণধার তিনি। তার এই বেসরকারি কলেজ থেকে পাস করা ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি প্রচুর অংশের যুবক-যুবতীদের কারও কাছ থেকে ৫০ হাজার, কারও কাছ থেকে ৫লক্ষ, কারও কাছ থেকে ১০ লক্ষ, আবার কারও কাছ থেকে ১২লক্ষ টাকা চাকরির নামে আদায় করেছেন তিনি বলে অভিযোগ। শুধু তাই-ই নয়, চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তুলে তিনি কোচবিহার জেলার সিতাই এলাকায় ১১বিঘা জমি কিনেছেন বলেও অভিযোগ। এর পাশাপাশি ৩২ লক্ষ টাকা দিয়ে লাক্সারি চারচাকার গাড়ি কেনার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
 

Comments :0

Login to leave a comment