পাঁচের মধ্যে চার রাজ্যের নির্বাচনের ফল ঘোষণা হল রবিবার। রবিবার সন্ধ্যায় পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, চারের মধ্যে তিন রাজ্যে সরকার গড়ছে বিজেপি। মধ্য প্রদেশে বিজেপি শাসকদল হিসেবে নির্বাচনের মুখোমুখি হয়। কংগ্রেসের হাতছাড়া হল রাজস্থান এবং ছত্তিশগড়। যদিও দক্ষিণ ভারতের তেলেঙ্গানায় চমকপ্রদ উত্থান হয়েছে কংগ্রেসের। দুর্বল বিরোধী থেকে সরাসরি ক্ষমতায় এসেছে হাত শিবির।
নির্বাচন কমিশন থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজস্থানে বিজেপি এবং কংগ্রেস যথাক্রমে পেয়েছে ১১৫ এবং ৬৯ আসন। বিজেপি পেয়েছে ৪১.৬৯ শতাংশ, এবং কংগ্রেস পেয়েছে ৩৯.৫৩ শতাংশ। মধ্যপ্রদেশে বিজেপি জয়ী কিংবা এগিয়ে ১৬৪ আসনে। কংগ্রেস ৬৫ আসনে। ভোট শতাংশের হিসেবে, বিজেপি পেয়েছে ৪৮.৬১ শতাংশ ভোট। কংগ্রেসের বাক্সে গিয়েছে ৪০.৪৪ শতাংশ ভোট।
ছত্তিশগড়ে বিজেপি ৫৪ আসনে জয়ী কিংবা এগিয়ে। কংগ্রেস জয়ী কিংবা এগিয়ে ৩৫ আসনে। বিজেপি পেয়েছে ৪৬.২৮ শতাংশ ভোট। কংগ্রেসের বাক্সে গিয়েছে ৪২.১৯ শতাংশ ভোট। তেলেঙ্গানায় কংগ্রেস জয়ী কিংবা এগিয়ে রয়েছে ১১৯টির মধ্যে ৬৪ আসনে। বিআরএস জয়ী কিংবা এগিয়ে ৩৯ আসনে। ভোট শতাংশের নিরিখে কংগ্রেস পেয়েছে ৩৯.৪০ শতাংশ ভোট। বিআরএস পেয়েছে ৩৭.৩৯ শতাংশ ভোট।
২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে রাজস্থানের ২০০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস জিতেছিল ১০০টি আসনে। বিজেপি জয়ী হয় ৭৩ আসনে। সিপিআই(এম) জয়ী হয়েছিল ভাদরা এবং দুঙ্গরগড় আসনে। এবারে ভাদরায় বলওয়ান পুনিয়ে ১৯ রাউণ্ড শেষে ১১০০ ভোটে বিজেপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। দুঙ্গরগড়ে ত্রিমুখী লড়াই হয়। ৫৬ হাজারের বেশি ভোট পেয়েও বিজেপির কাছে ৮ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন গিরিধারীলাল মাহিয়া। রাইসিংনগর আসনে সিপিআই(এম) প্রার্থী শোপৎরাম মেঘওয়াল ৬১ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন। ধোঁধ আসনে ৭২ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছেন সিপিআই(এম) প্রার্থী প্রেমা রাম। যদিও তিনি বিজেপির কাছে ১৩ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন।
২০১৮’র বিধানসভা নির্বাচনে, মধ্যপ্রদেশের ২৩০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছিল ১১৪ আসন। বিজেপি জিতেছিল ১০৯ আসনে। নির্দলরা ৪ আসনে, বিএসপি সহ অন্যান্য’রা জয়ী হয় ৩ আসনে। সেই নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছিল ৪১.০২ শতাংশ ভোট, এবং কংগ্রেস পেয়েছিল ৪০.৮৯ শতাংশ। এবারের ফলাফল অনুযায়ী, কংগ্রেস নিজের পুরো ভোট ধরে রাখতে পারলেও, বিএসপি সহ অন্যান্য দলগুলি এবং নির্দলদের ভোট বাক্সে ধ্বস নামিয়েছে বিজেপি।
মধ্যপ্রদেশ ভেঙে ২০০২ সালে তৈরি হওয়া ছত্তিশগড়ে মোট বিধানসভা আসন ৯০টি। ২০১৮’র নির্বাচনে কংগ্রেস ৬৮ আসনে জিতেছিল। বিজেপি পায় ১৫টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছিল ৪৩ শতাংশ, এবং বিজেপি পেয়েছিল ৩৩ শতাংশ ভোট। মধ্যপ্রদেশের মত এরাজ্যেও নিজেদের ভোটবাক্স সুরক্ষিত রাখলেও, বিজেপির ঝড় আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে কংগ্রেস। প্রতিবেশি রাজ্যের মত এখানেও বিএসপি, নির্দল সহ অন্যান্যদের ঘরে সিঁদ কেটে নিজেদের পুষ্ট করেছে বিজেপি।
২০১৪ সালে অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে তেলেঙ্গানা তৈরি হয়। সেই থেকে টানা ১০ বছর রাজ্য চালিয়েছিল তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি। চলতি বছর দলের নাম পাল্টে হয় ভারত রাষ্ট্র সমিতি, সংক্ষেপে বিআরএস। সেই বিআরএস’কে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দক্ষিণ ভারতে আরও একটি রাজ্যের ক্ষমতায় এল কংগ্রেস।
তেলেঙ্গানায় বিজেপি ৮, এবং এআইমিম ৭টি আসনে জিতেছে। ২০১৮’র বিধানসভা নির্বাচনে ৪৬.৮৭ শতাংশ ভোট নিয়ে ৮৮ আসনে জয়ী হয় বিআরএস। কংগ্রেস পায় ২৮.৪৩ শতাংশ ভোট এবং ১৯টি আসন। মিম ২০১৮’র নির্বাচনেও পুরনো হায়দরাবাদ অঞ্চলের ৭টি আসনে জয়ী হয়েছিল। বিজেপি জিতেছিল ১টি আসনে।
তেলেঙ্গানায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে ছিল সিপিআই। কোঠগুদাম আসনে সিপিআই প্রার্থী কে শম্ভাশিব রাও ২৬ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন।
Comments :0