SINGUR TATA FACTORTY

টাটাকে চড়া হারে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্যকে

রাজ্য জেলা

tata

সিঙ্গুরের অধিগৃহীত জমিতে শিল্প না হওয়ায় টাটা মোটরসকে ৭৬৫ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমকে। সোমবার টাটা মোটর্স জানিয়েছে তিন সদস্যের বিরোধ নিষ্পত্তি ট্রাইবুনাল সর্বসম্মতিতে ক্ষতিপূরণের রায় দিয়েছে। একইসঙ্গে টাটা মোটরস জানিয়েছে, মোট অর্থের উপর ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে শিল্পোন্নয়ন নিগমকে। মূলধনী বিনিয়োগের ক্ষতিপূরণ চেয়ে ট্রাইবুনালে আবেদন জানিয়েছিল টাটা মোটর্স।

প্রসঙ্গত, সিঙ্গুরের টাটা কারখানার জমি ফেরত নিয়ে নেয় রাজ্যের তৃণমূল সরকার। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৩ সদস্যের আরবিট্রাল ট্রাইবুনালে যায় টাটা মোটর্স কর্তৃপক্ষ। সোমবার ট্রাইবুনালের তরফে টাটা মোটরস পক্ষে রায় দেওয়া হয়েছে। 

এদিন টাটা  মোটর্স জানিয়েছে , ‘‘৩ সদস্যের আরবিট্রাল ট্রাইবুনাল তাঁদের আবেদনের নিষ্পত্তি করেছে সোমবার। সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমের থেকে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাবে টাটা মোটরস। বকেয়া অর্থের উপর ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর তারিখ থেকে ১১ শতাংশ হারে সুদ ধার্য হবে। যতদিন না পুরো বকেয়া শিল্পোন্নয়ন নিগম মিটিয়ে দিচ্ছে, ততদিন সুদ জমা হতে থাকবে।’’

একইসঙ্গে বিবৃতিতে টাটা মোটরস জানিয়েছে, ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি টাটা মোটরসের আইনি খরচের ভারও বহন করতে হবে শিল্পোন্নয়ন নিগমকে। সেই খাতে আরও ১ কোটি টাকা পাবে টাটা মোটরস। 

সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমে প্রতিক্রিয়া, ‘‘ধ্বংসাত্মক এবং ঔদ্ধত্যের রাজনীতির খেসারত দিচ্ছে রাজ্য। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে একটি প্রায় সম্পূর্ণ কারখানাকে, গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের স্বপ্নকে।’’

২০০৬ সালে হুগলী জেলার সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠীর ন্যানো গাড়ির কারখানার জন্য ১ হাজার একর জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। রাজনৈতিক স্বার্থে সেই গাড়ি কারখানা হওয়া আটকে দেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। তাঁর হিংসাত্মক আন্দোলনের চাপে সিঙ্গুর থেকে কারখানা সরিয়ে নিতে বাধ্য হওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় টাটারা। ২০০৮ সালে টাটা গোষ্ঠীর তৎকালীন কর্ণধার রতন টাটা ঘোষণা করেন সিঙ্গুর থেকে গুজরাটের সানন্দে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ন্যানো কারখানা। 

দীর্ঘদিন সিঙ্গুরের টাটা কারখানার জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। সেই অঞ্চলের মানুষের আবেগের সঙ্গে মস্করা করে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা করেছিলেন, টাটা কারখানার জমিতে ফের চাষ করা হবে। ২০১৬ সালে বুলডোজার এবং ডিনামাইট দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয় পরিত্যক্ত কারখানার কাঠামো। সরকারের যুক্তি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ধ্বংস হয় পশ্চিমবঙ্গের একটা গোটা প্রজন্মের কর্মসংস্থানের সমস্ত আশা। 

সোমবার সেই সরকারি মস্করা আরও একবার প্রমাণিত হল গোটা দেশের সামনে। 

Comments :0

Login to leave a comment