Mekhela Industry Goalpokhar

বরাত অমিল, গোয়ালপোখরে ধুঁকছে মেখলা শিল্প

জেলা

Mekhela Industry Goalpokhar ক্যাপশান- গোয়ালপোখরের মেখলা ফ্যাক্টরি।

তপন বিশ্বাস - গোয়ালপোখর 


পুজোয় নতুন বস্ত্র পরিধান করা বাঙালির বহু পুরোনো প্রথা। সেই প্রথা আজও বাঙালি মেনে আসছেন। আর বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে বস্ত্র শিল্পিদের মধ্যে জোয়ার দেখা দেয়। আয়ের উৎস খুঁজে পায় তাঁরা। কিন্ত পুজোতে বরাত নেই গোয়ালপোখরের মেখলা শিল্পিদের। গোয়ালপোখরের ব্লকের জৈনগাঁ গ্রামপঞ্চায়েতের গচিনগর গ্রামে কয়েক বছর আগে সাবির আলম আসামের ঐতিহ্যবাহী মেখলা শিল্পকে এলাকায় নিয়ে এসে কারখানা গড়ে তোলেন। শুরুতে রাজ্যের পাশাপাশি ভিন রাজ্য থেকেও মেখলা শাড়ি ও গামছার অর্ডার পেতেন। দুবছর অতিমারির কারণে ফ্যাক্টরির মেশিন প্লাস্টিকে মুড়ে রেখেছিলেন। ফের নতুন করে কাজ শুরু করলেও লোকাল মার্কেট কিংবা রাজ্যের কোন জেলা থেকে তাদের অর্ডার মেলে নি। তাই মন খারাপ সাবিরের পাশাপাশি ফ্যাক্টরির কারিগর বসির, নুরুল, আজাহার, খুদাবক্সদের।    


সাবির বলেন, ‘‘একসময় আমিও কাজ করতাম সুরাটে। সেখানে এমব্রয়ডারি ও ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের কাজ শিখে কলকাতার একটি কারখানায় কাজ করতাম। মেখলার উপরে এমব্রয়ডারি নকশা তোলার কাজ শেখার সময় ওখানেই পরিচয় হয় আসামের মেখলা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। তারপর গ্রামে ফিরে চাষের জমি বিক্রি করে এই কারখানা গড়ে তুলেছি। ফ্যাক্টরি গড়ে তোলার পর বছর খানেক ভালোই চলছিল। তারপর শুরু হয় করোনা কাল। এবার ভেবেছিলাম দুর্গাপুজোর হাত ধরে ঘুরে দাড়াতে পারবো। কিন্ত এবার তা হলো না। মেলে নি কোন সরকারি সহায়তা। কিভাবে ঘুরে দাঁড়াবো সেটাই ভেবে পাচ্ছি না।’’


এলাকার যুবক মহম্মদ সাদিক বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকজন আগে কাজ করতাম সুরাটে। সেখানে বস্ত্র শিল্পের কাজে যুক্ত ছিলাম। কিন্তু সেখান থেকে বাড়ির দেখাশোনা করতে পারতাম না। তাই সাবির ভাই কারখানা খুলেছে তখন আর দ্বিতীয়বার ভাবিনি। এক কথায় সব গুটিয়ে চলে এসেছিলাম গ্রামে। কিন্ত এখন কাজের অবস্থা খুব খারাপ - তাই ফের সুরাটে যাওয়ার কথা ভাবতে হচ্ছে। ’আর একই কথা বলছেন মহম্মদ রিজওয়ান, আনোয়ার, সুলেমান, বসির, নুরুল, আজাহার, খুদাবক্সরা।
গোয়ালপোখরের বিডিও অতনু ঘোষ জানান, ‘‘ রাজ্য সরকার এই ধরনের শিল্পকে উজ্জীবিত করতে কোন প্রকল্প গ্রহণ করলে অবশ্যই তা বাস্তাবায়িত করা হবে এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো হবে।’’
এদিকে উত্তর দিনাজপুর জেলার ক্ষুদ্র শিল্পদপ্তরের এক আধিকারিক জানান, “ আমি ওই গ্রামে গিয়ে তাদের কাজ কর্ম দেখে এসেছি।ক রোনার কারণে সব শিল্পেরই ক্ষতি হয়েছে। ওদের কিধরনের সাহায্য প্রয়োজন – তা আমাদের জানালে অবশ্যই চেষ্টা করা হবে। ”

Comments :0

Login to leave a comment