অমিত কুমার দেব-তুফানগঞ্জ
ঘর এবং বাড়ির উঠোন থেকে নদীর জল নামতে শুরু করলেও সোমবার সকাল থেকেই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে রায়ডাক নদীর ভাঙন। সীমাহীন আতঙ্কে তুফানগঞ্জ ২নং ব্লকের বারকোদালি ১ ও ২নং গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকায়। সবচেয়ে বেশি সংকটে এই দুই গ্রাম পঞ্চায়েতে লাঙ্গল গ্রাম ও বেগারখাতা এলাকার বাসিন্দারা।
শনিবার রাত থেকেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে এই এলাকার প্রায় দুই শতাধিক বাড়ি। তুফানগঞ্জের লাঙ্গল গ্রাম ও বেগারখাতা এলাকার রায়ডাক নদীর বাঁধ ভেঙ্গে নদীর জল প্রবেশ করে চাষের জমি সহ বাড়ি-ঘরে। প্রশাসনের তরফ থেকে এই এলাকার মানুষদের উদ্ধার করে তুফানগঞ্জ ১ নং ব্লকের নাককাটি গঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কুটিমারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এখানেই রয়েছেন বন্যা বিধ্বস্ত প্রায় ২৫০জন। বন্যার জল নামলেও নদী ভাঙনের এই ভয়াবহ সংকটের সম্মুখীন বানভাসী মানুষেরা।
আর রায়ডাক নদীর জল নামতে শুরু করলেই সোমবার সকাল থেকে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকায় অবিলম্বে প্রশাসন যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ না করলে চরম বিপদে পড়বে নিয়ে এলাকার মানুষেরা। গোটা গ্রাম চলে যাবে নদীর গর্ভে বলে আশঙ্কা তাদের। তাদের অভিযোগ প্রতিবারই বর্ষা সময়ে প্রস্তুতি সম্মুখীন হন তারা প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা আসেন দেখেন এবং অস্থায়ী বাঁধের ব্যবস্থা করেন কিন্তু আজ পর্যন্ত পাথরে স্থায়ী বাঁধের ব্যবস্থা করা হয়নি। তাদের দাবি অবিলম্বে পাথরের স্থায়ী বাঁধের ব্যবস্থা করুন প্রশাসন।
ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া বন্যা ও ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষেরা।
বন্যা বিধ্বস্ত এই এলাকার বাসিন্দা হরেকৃষ্ণ সূত্রধর, বাবলি বর্মন, কার্তিক দাস, অনিতা রবিদাস, ভবেশ সরকার প্রমুখেরা জানান, এক ভয়াবহ দুরবস্থার মধ্যে রয়েছেন তারা। কারও ঘর জলের তোড়ে ভেসে গেছে, আবার কারও কারও ঘর হেলে পড়ে রয়েছে। ঘরের ভেতর ঢুকে পড়েছে বিভিন্ন বিষাক্ত সাপ এবং পোকামাকড়। এই পরিস্থিতিতে নিজের, নিজের সন্তান-সন্ততিদের এবং গৃহ পালিত পশুদের নিরাপত্তার স্বার্থেই তারা এই ত্রাণ শিবিরে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রশাসন তাদের খাবারের সংস্থান করলেও, পর্যাপ্ত খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাদের গৃহপালিত পশুরা। রীতিমতো বিপর্যয় নেমে এসেছে তাদের জীবনে। তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবারই এই সমস্যার সম্মুখীন হন তারা এবং এভাবেই দিনের পর দিন ত্রাণ শিবিরে কাটাতে হয় তাদের। অথচ প্রশাসন সবকিছু জানা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট এলাকায় রায়ডাক নদীতে পাথরের স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করে না। তাই এদিন বন্যা বিধ্বস্ত এই অসহায় মানুষেরা প্রশাসন এবং সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রীতিমতো আবেদন জানান, দ্রুততার সাথে পাথরের স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হোক সংশ্লিষ্ট এলাকায়, তাহলেই এই ভয়াবহ সংকট থেকে মুক্তি পাবেন তারা।
Comments :0