অত্যাচার, প্রলোভন সত্ত্বেও সাগরদিঘির মানুষ জয়ী করেছিলেন কংগ্রেস প্রার্থীকে। মানুষের রায়ে পদাঘাত করছেন মমতা ব্যানার্জি। সুবিধা করে দিচ্ছেন বিজেপি’র। সাগরদিঘিতে জয়ী কংগ্রেস প্রার্থীর দলবদল প্রসঙ্গে সোমবার এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে গিয়ে বায়রন বিশ্বাস যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির ‘নবজোয়ার যাত্রা’-য় দল বদলেছেন। গত মার্চের গোড়ায় সাগরদিঘির উপনির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়। বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন জয়ী হন। কেবল তৃণমূল নয়, সাগরদিঘিতে পরাজিত হয়েছিল বিজেপি’ও।
বহরমপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘মানুষের রায়কে পদাঘাত করে তৃণমূল নেত্রী জয়ী হওয়ার চেষ্টা করেন। তৃণমূলের হুমকি, সন্ত্রাস, অত্যাচার, প্রলোভন মানুষের রায়কে পরাজিত করতে পারেনি। মানুষের ইচ্ছা ছিল বায়রন কংগ্রেসের প্রতীকে বিধায়ক হোক। দিদি এবং খোকাবাবুর ইচ্ছা ছিল তারা মানুষের রায়কে পদাঘাত করে এগিয়ে যাবে।’’
চৌধুরীর সরাসরি অভিযোগ দল ভাঙানোর কৌশলে বিজেপি’র সুবিধা করে দিচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। চৌধুরী বলেন, ‘‘বাংলায় বিজেপি’র লাভ করিয়ে দিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। তিনি সিপিআই(এম) এবং কংগ্রেসকে ভাঙিয়ে আজ ৭৭ বিধায়ক এবং ১৮ সাংসদ দিয়েছে বিজেপিকে। ১৯৯৯ সালে বিজেপির সঙ্গে জোট করেছিলেন।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘সাগরদিঘির নির্বাচনের ফলাফলের পর থেকেই তৃণমূলের বিভিন্ন মন্তব্য থেকে স্পষ্ট হয় যে তারা এই পরাজয় মানতে পারেনি। তাই কখনও অভিষেক ব্যানার্জি বলছেন বায়রন তার সঙ্গে আলোচনায় বসলে তার কোনও আপত্তি নেই। আবার বিধানসভা স্পিকার বলছিলেন যে বায়রন নাকি তৃণমূলের সহায়তায় জিতেছে।’’
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘বাংলায় একটি বিষয় প্রমাণিত, বাংলায় তৃণমূলকে পরাজিত করা যায়। মমতা ব্যানার্জি কোন অপরাজেয় রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব নন।’’
উল্লেখ্য এর আগে শুভেন্দু অধিকারি তৃণমূলের পক্ষ থেকে মুর্শিদাবাদের দায়িত্বে থাকাকালীন একাধিকবার কংগ্রেস ভাঙিয়েছে। অতীতের সেই উদাহরণ টেনে প্রদেশ সভাপতি বলেন, ‘‘দিদি দল ভাঙানোর খেলায় সিদ্ধহস্ত। আগেও তিনি কংগ্রেস ভাঙিয়েছেন। কিন্তু আমি দিদিকে বলতে চাই, আজ আপনি যেই খেলা খেলছেন এতে আপনি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আপনার দল আগামী দিনে ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে।’’ সোমবারের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে অধীর চৌধুরি তৃণমূলকে নিশানা করে বলেন, ‘‘তৃণমূলকে এই রাজ্যে শেষ করব। বাংলার মানুষকে যাতে চাকরির জন্য হাহাকার না করতে হয়, দুর্নীতির আখড়ায় যাতে রায, পরিণত না হয় তার জন্য তৃণমূলকে হটানো দরকার।’’
দেশের রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের নেতৃত্বে বিজেপি-কে চিহ্নিত করা হয় দল ভাঙানোর অগণতান্ত্রিক কৌশলের কাণ্ডারি হিসেবে। একাধিক রাজ্যে মানুষের রায়ে পরাজিত হয়েও দল ভাঙিয়ে সরকার চালাচ্ছে বিজেপি। কর্নাটকেও সেই কৌশলে ছিল সরকার, বিধানসভা ভোটে বিজেপি যদিও পরাজিত হয়েছে। এ রাজ্যে সেই কৌশল নিতে বারবার দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। বিরোধীরা পঞ্চায়েত বা পৌরসভায় জয়ী হলেও ভাঙানো ঘটনা দেখা গিয়েছে।
Comments :0