স্টেট ব্যাঙ্ককে বন্ডের নম্বর প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই নির্দেশকে স্বাগত জানালো সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো। শুক্রবার বিবৃতিতে পলিট ব্যুরো বলেছে, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলিকে টাকা দেওয়ার ধরন ফাঁস হয়ে গিয়েছে।
দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ রক্ষায় আগ্রহী সব রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী এবং জনতার কাছে নির্বাচনী গণতন্ত্রের ওপর এই অন্তর্ঘাতের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার আবেদনও জানিয়েছে পলিট ব্যুরো।
শুক্রবার সকালেই সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় যে স্টেট ব্যাঙ্ককে প্রতিটি বন্ডের ‘আলফা নিউমারিক কোড’ বা নম্বর দাতা ও গ্রহীতার তালিকায় নির্দিষ্ট করতে হবে। স্টেট ব্যাঙ্ক বারবারই তথ্য আড়ালের চেষ্টা চালিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ১২ মার্চ তথ্য নির্বাচন কমিশনকে দিতে বাধ্য হয় দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক। সেই তথ্য বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশ করে কমিশন। কিন্তু তথ্য অসম্পূর্ণ রয়েছে। বন্ডের নম্বর না জানানোয় কোন দলকে কোন সংস্থা কত টাকা দিয়েছে নিশ্চিত করা যায়নি। তবে ঘটনাক্রম থেকে দেওয়া-নেওয়ার ধরন বোঝা গিয়েছে।
শুক্রবার পলিট ব্যুরো বলেছে, দাতা এবং গ্রহীতার সম্পর্ক নির্দিষ্ট হয় যাতে তার জন্য বন্ডের নম্বর প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই নির্দেশকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে যে সুপ্রিম কোর্টের আগের নির্দেশ পুরোপুরি মান্য করেনি স্টেট ব্যাঙ্ক। রাজনৈতিক দলগুলিকে অর্থ দেওয়ার ধরন যাতে জনতার কাছে স্পষ্ট হয়, তার জন্য রায় দেওয়া হয়েছিল।
নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত মামলায় আবেদনকারী ছিল সিপিআই(এম)। গোপন এবং অস্বচ্ছ নির্বাচনী বন্ডে তহবিলে কোনও অর্থ নেয়নি সিপিআই(এম)। ২০১৭’তে নির্বাচনী বন্ড চালু করার আইন পাশ করে বিজেপি সরকার। ২০১৮ থেকে স্টেট ব্যাঙ্কের ছাড়া এই বন্ডেত মাধ্যমে লেনদেন শুরু হয়। সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী বিজেপি। এক রাজ্যে সরকার চালিয়েও তৃণমূল রয়েছে এর পরেই।
সুপ্রিম কোর্ট ফেব্রুয়ারিতেই এই বন্ডকে অসাংবিধানিক এবং অস্বচ্ছ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে। ৬ মার্চের মধ্যে লেনদেনের নির্দিষ্ট তথ্য নির্বাচন কমিসনের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় স্টেট ব্যাঙ্কে। কিন্তু ‘বিপুল তথ্য নথিভুক্ত করার’ কারণ দেখিয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চায় স্টেট ব্যাঙ্ক। সময়সীমা শেষ হওয়ার আটচল্লিশ ঘন্টা আগে আবেদন জানায় সুপ্রিম কোর্টে। সেই আবেদন খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। এরপরও যে তথ্য কমিশনকে দেওয়া হয়েছে তা অসম্পূর্ণ। কমিশন সেই তথ্যই প্রকাশ করে দিয়েছে। সিপিআই(এম) এর আগে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে দায়ী করেছিল স্টেট ব্যাঙ্কের ওপর চাপ দিয়ে তথ্য প্রকাশ আটকানোয়।
এদিন পলিট ব্যুরো বলেছে, অসম্পূর্ণ হলেও কমিশন প্রকাশিত তথ্য থেকে ধরা পড়ছে যে বন্ডে টাকার দেওয়ার বিনিময়ে বরাত পাওয়ার মতো দেওয়া-নেওয়া হয়েছে। ইডি’র মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কাজে লাগিয়ে কর্পোরেটের ওপর তোলাবাজি করে তহবিলে টাকা নেওয়া হয়েছে।
Polit Bureau Electoral Bond
বন্ডে দেওয়া-নেওয়ার ধরন ফাঁস, বন্ড রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলল পলিট ব্যুরো
×
Comments :0