তবে শুধু মুসলিমদের নয়, শিখ, খ্রীষ্টান সহ হিন্দু নন, এমন অংশের মানুষকেও এই স্লোগান দেওয়ার নির্দেশ দিতে শোনা গিয়েছে আরএসএসের এই নেতাকে।
কুমার বলেন, ‘‘দেশের ৯৯ শতাংশ মুসলিম ও অহিন্দুরা আসলে ভারতের অংশ। তাঁদের জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করানো হয়েছিল। এই গোটা অংশটার অভিন্ন পূর্বপুরুষ রয়েছে।’’
বস্তুত আরএসএস’র এই জাতীয়তাবাদের তত্ত্ব নতুন নয়। অন্য ধর্মবিশ্বাসীদের স্বাতন্ত্র্য এবং বহুত্বের সাংবধানিক ধারণাকে বিভিন্ন সময়েই অস্বীকার করতে দেখা গিয়েছে আরএসএস’কে।
ইন্দ্রেশ কুমার আরএসএস পোষিত মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চেরও অন্যতম মূল হোতা। সেই পরিচয় সামনে এনে তিনি বলেছেন, ‘‘মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চের তরফে আগেও আবেদন করা হয়েছে। আমি আজও বলছি, রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন মক্তব, মাদ্রাসা এবং মসজিদগুলি থেকে ১১বার শ্রী রাম, জয় রাম, জয় জয় রাম স্লোগান দেওয়া হোক। তারপর আপনারা আপনাদের মত করে ধর্মীয় রীতি পালন করুন।’’
এখানেই থেমে না থেকে তিনি বলেছেন, ‘‘গীর্জা, গুরুদ্বার সহ অন্যান্য ধর্মের ধর্মীয়স্থানকেও রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিন সাজিয়ে তোলা উচিত। আমি ইবাদত গাহ, প্রেয়ার হল গুলিকে ২২ জানুয়ারি সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টো অবধি সাজিয়ে রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি।’’
প্রসঙ্গত, ২২ জানুয়ারি সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টো অবধি রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে।
আরএসএস’র এই নেতা আরও বলেছেন, ‘‘দেশে শান্তি, সৌভ্রাতৃত্ব ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আমি অ-হিন্দুদের সেইদিন সন্ধ্যাবেলাতেও প্রদীপ জ্বালানোর অনুরোধ করছি।’’
ইন্দ্রেশ কুমার বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘‘আমি ‘ইন্ডিয়া’-র দলগুলিকে বলতে চাই, রামলালা সবার। তাই আমন্ত্রণপত্র না পেলেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিন।’’
এর আগেও বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে ইন্দ্রেশ কুমারকে। ১২ ডিসেম্বর একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি অ-হিন্দুদের অনুরোধ করছি, সমস্ত বিতর্কিত ধর্মস্থান হিন্দুদের হাতে তুলে দিন। কারণ হিন্দু মন্দিরগুলিকে ভেঙেই অহিন্দুদের ধর্মস্থানগুলি তৈরি হয়েছে।’’
ওয়াকিবহাল মহল বলছে, রাম মন্দিরকে ঘিরে উগ্র ধর্মীয় ভাষ্য নির্মাণের কাজ আরও জোরালো করেছে বিজেপি এবং আরএসএস। লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে ধর্মীয় ভাবাবেগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা চলছে পুরোদমে। তবে, কর্মসংস্থান, বেকারত্বের হার বৃদ্ধি, মূল্যবৃদ্ধি, অর্থনৈতিক ও লিঙ্গগত বৈষম্যের মতো মাপকাঠির ভিত্তিতে ভোটে মতদানের প্রচারও জোর পাচ্ছে।
Comments :0