Poush Mela

সিদ্ধান্ত বিশ্বভারতীর, হবে না পৌষমেলা

রাজ্য

এবারও শান্তিনিকেতনে হচ্ছে না ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। সোমবার দীর্ঘ বৈঠকের পর যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। সময়ের অভাব সহ অপরিচ্ছন্ন জলাশয়, মেলার স্টল বুকিংয়ের সফটওয়্যার বিকল সহ একাধিক কারণ দেখিয়ে এবারও পৌষমেলা বাতিল করে দেওয়া হল।
এদিন দীর্ঘ বৈঠকের পর ট্রাস্ট এবং বিশ্বভারতীর তরফে এক বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, ছোট করে এই মেলা আয়োজন করা সম্ভব নয়। পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকার কারণে এবার মেলা করা যাচ্ছে না। পৌষমেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য পর্যাপ্ত জলের ভাণ্ডার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই জলের উৎস হিসাবে ব্যবহৃত হয় শান্তিনিকেতনের তিনটি বাঁধ। সেই বাঁধগুলি দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বেহাল দশায় রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে আরও নানান আয়োজনগত প্রতিবন্ধকতা। আছে সাধারণ প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে বৈঠক করে এত বিপুল মানুষের সমাগমে সামগ্রিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ। এই ঘোষণার পর স্থানীয় অন্যান্য ব্যবসাদারদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। 
প্রবীণ আশ্রমিকদের কথায়, ১৮৪৩ সালে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ঠিক করেছিলেন দীক্ষিত ব্রাহ্মদের নিয়ে একটি মেলা করবেন। ১৮৪৫-র ৭ পৌষ কোলকাতার অদূরে মেলা বসে গোরিটির বাগানে। পরে ১৮৬২ সালে বোলপুরে জনবিরল প্রান্তরের মধ্যে দু’টি নিঃসঙ্গ ছাতিম গাছের তলায় মহর্ষি সন্ধান পান তাঁর শান্তিনিকেতনের। পরে রায়পুরের জমিদার সিংহ পরিবারের কাছ থেকে মৌরসি স্বত্বে জমি কেনেন। ১৮৮৮ সালে ২২ মার্চ মহর্ষি শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ডিড করে তাতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, ‘‘ধর্মভাব উদ্দীপনের জন্য ট্রাস্টিগণ বর্ষে বর্ষে একটি মেলা বসাবার চেষ্টা ও উদ্যোগ করিবেন।’’ এর আগে ১৯১৭ সালে মন্বন্তরের সময় এবং ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলায় দাঙ্গার কারণে পৌষমেলা হয়নি। ২০১৯ সালে শেষবার পূর্বপল্লির মাঠে হয়েছিল পৌষমেলা। ২০২০ সালে কোভিড পরিস্থিতির জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল মেলা। তারপর ২০২১ ও ২০২২ সালে পূর্বপল্লির মাঠে পৌষমেলা বন্ধ করে দেন তৎকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এবারও শান্তিনিকেতনে হচ্ছে না ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা।
 

Comments :0

Login to leave a comment