প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ঘিরে উত্তাল ২০২৩’র প্রাথমিক টেট পরীক্ষা। রবিবার দুপুর ১২টা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়। অভিযোগ, ১২টার কিছু পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় টেটের প্রশ্নপত্র ঘুরতে শুরু করে।
সিপিআই(এম)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ সামনে আসছে।’’ যদিও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালের দাবি, প্রশ্ন ফাঁস হয়নি।
এই অব্যাবস্থায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন সিপিআই(এম)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেছেন, এই বছর টেট পরীক্ষা দিচ্ছেন ৩ লক্ষ পরীক্ষার্থী। ২০২২ সালে সংখ্যাটা ছিল ৬লক্ষ। পরক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। কোথায় যাচ্ছি আমরা?
চক্রবর্তীর সংযোজন, ‘‘রাজ্যে মাধ্যমিক পড়ুয়া কমেছে ৪লক্ষ। কেন্দ্র এবং রাজ্যের সরকার শিক্ষা সংহারি। প্রতি বছর টেট হয়না এই রাজ্যে। তৃণমূল ১২বছর ধরে রাজ্য চালাচ্ছে। কিন্তু টেট হয়েছে মাত্র ৪বার।’’
সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘তৃণমূল আসার পরে প্রথম টেট পরীক্ষা যাঁরা দিয়েছিলেন, তাঁদের সবার এখনও চাকরি হয়নি। এর আগের টেট উত্তীর্ণদের ইন্টারভিউ হয়নি এখনও। এবারের টেট নিয়ে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ সামনে এসেছে। এদের মনোভাব শিক্ষার বিরোধী। তারফলেই এই ঘটনাগুলি ঘটছে।’’
যদিও বিতর্কের মাঝে উল্টো সুর শোনা গিয়েছে পর্ষদ সভাপতির গলায়। তিনি গোটা ঘটনার দায় এড়িয়ে বলেছেন, ‘‘পর্ষদকে বদনাম করার জন্য কিছু মানুষ এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। এর ফলে কোনও পরীক্ষার্থী সুবিধা পাননি।’’
পর্ষদ সভাপতির যুক্তি, ‘‘পরীক্ষার্থীরা সকাল ১১টার মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে গিয়েছিলেন। পরীক্ষা শুরু হয়েছে দুপুর ১২টার সময়। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন ঘুরতে শুরু করে বেলা ১টা নাগাদ। যেহেতু পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্ন ফাঁস হয়নি, তাই একে সামগ্রিক ভাবে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা বলা যায়না।’’
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানাচ্ছে, রাজ্যে মোট ৭৭৩টি কেন্দ্রে রবিবার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার ফর্ম পূরণ করেছিলেন ৩ লক্ষ ৯ হাজার ৫৪ জন। পরীক্ষায় বসেন ২ লক্ষ ৭২ হাজারের কাছে পরীক্ষার্থী।
পর্ষদ সভাপতি জানাচ্ছেন, ‘‘প্রতিটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের ভালো করে দেহ তল্লাশি করা হয়েছে। কাউকে মোবাইল নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।’’
তারপরেও কীভাবে প্রশ্নের ছবি ভাইরাল হল সেই বিষয়ে স্পষ্ট ভাবে পর্ষদ কিছু বলতে পারছে না। সাধারণত গৌতম পাল নিজে সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নেন। রবিবার তাঁর জায়গায় উপস্থিত ছিলেন তাঁর সচীব পার্থ কর্মকার। এর থেকেই স্পষ্ট, সমালোচনা ও কঠিন প্রশ্ন এড়াতেই আড়ালে থেকেছেন পর্ষদ সভাপতি।
পরীক্ষার্থীদের একটা অংশের বক্তব্য, কোনও পরীক্ষার্থী যে প্রশ্নের ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়েনি তার নিশ্চয়তা কোথায়? তিনি ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়তে পারলে, ইন্টারনেট ঘেঁটে প্রশ্নের উত্তরও তো খুঁজে বের করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে পর্ষদ সভাপতি কীভাবে বলছেন যে প্রশ্ন ভাইরাল হওয়ার ফলে কোনও পরীক্ষার্থী সুবিধা পাননি?
Comments :0