মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হন এক রোগী। শনিবার সন্ধ্যায় চেল নদী থেকে উদ্ধার হয় নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ওই রোগীর দেহ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। জানা গেছে,  মালবাজার ব্লকের রাঙ্গামাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বেদগুড়ি চা বাগানের বাসিন্দা বুধুয়া ওরাও(৪৫) গত ১১ জন বুধবার শারীরিক সমস্যার কারণে মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এলে চিকিৎসকরা ভর্তি হতে বললে পরিবার  তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরের দিন বৃহস্পতিবার রোগীর ছেলে হাসপাতালে এসে দেখেন বেডে রোগী নেই। পাশের বেডে থাকা রোগীদের জিজ্ঞেস করা হলেও কেউ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। 
এরপরই হন্তদন্ত হয়ে রোগীর পরিবারের সদস্যরা সমগ্র হাসপাতাল খুঁজে বেড়ালেও হাসপাতালের বেডে ভর্তি থাকা বুধুয়া ওরাওকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এদিকে হাসপাতলে কর্তব্যরত সিকিউরিটি গার্ড ও অন্যান্য স্টাফদের জিজ্ঞাসা করেও মেলেনি কোন সদুত্তর। অবশেষে বাধ্য হয়ে রোগীর পরিবারের তরফে মালবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। 
প্রশ্ন উঠেছে সরকারি হাসপাতালের ভেতরে ভর্তি থাকা রোগী এভাবে নিরুদ্দেশ হয়ে গেল কি করে?  রোগীর পরিবারের তরফে সুজন ওরাও জানিয়েছেন, ‘‘শারীরিক সমস্যা নিয়ে বাবাকে ভর্তি করেছিলাম হাসপাতলে। পরের দিন সকালে হাসপাতালে এসে দেখি বাবা নিরুদ্দেশ। খোঁজাখুঁজির পরেও কোন সন্ধান না পেয়ে মালবাজার থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেছি। শনিবার সন্ধ্যায় মালবাজার থানার পুলিশ জানায় চেল নদী থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। সেখানে গিয়ে বাবার দেহ শনাক্ত করি।’’
এদিকে রোগীর মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায় মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। পরিবারের সদস্য সহ স্থানীয়রা এসে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। হাসপাতাল চত্বরে প্রচুর পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন থাকায় পরিস্থিতি সামাল দেয় মালবাজার থানার পুলিশ। এরপর পাশে থাকা ১৭ নম্বার জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন রোগীর পরিবার-পরিজনেরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মালবাজার থানার আইসি সৌমজিৎ মল্লিক এর নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী। পরিবার-পরিজনের সাথে দীর্ঘ আলোচনা শুরু হয়। বেশ কিছুক্ষণ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখার পর পিছু হটে বিক্ষোভকারীরা।
রোগীর পরিবার ও বিক্ষোভকারীদের দাবি, দাবি বিগত দিনেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। চিকিৎসা করাতে এসে রোগীর নিরুদ্দেশ হওয়া এবং তার মৃতদেহ উদ্ধার সমস্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বর এলাকা সহ জাতীয় সড়কে। তবে কোনোক্রমে পরিস্থিতি সামাল দেয় মালবাজার থানার পুলিশ। মৃত বধুয়া ওরাও’র পরিবারের তরফে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। রবিবার মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে মালবাজার থানার পুলিশ।