Brinda Karat at Howrah

মুক্তিরচকের লড়াইকে অভিবাদন জানিয়ে সমাবেশ আমতায়

রাজ্য

Brinda Karat at Howrah

শুভাশিস দেব সরকার - চিরন্তন পাড়ুই


মুক্তিরচকের ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীদের সাজা হয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত লড়াইকে কুর্নিশ জানাতেই সমাবেশ হল আমতায়। রবিবার আমতা পীতম্বর হাইস্কুলের মাঠে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির হাওড়া জেলা কমিটির ডাকে হয়েছে সমাবেশ। উপচে পড়েছে ভিড়।
মহিলা আন্দোলনের সর্বভারতীয় নেত্রী বৃন্দা কারাত অভিবাদন জানিয়েছেন লড়াইকে। তিনি বলেছেন, মুক্তিরচকের নির্যাতিতারা মাথা নত করেননি। আমরাও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করি না, করবো না। মুক্তিরচকের অপরাধীদের বাঁচাতে হাসপাতালে গিয়ে, থানায় গিয়ে ঘটনা চাপতে পুলিশকে চাপ দিয়েছিলেন যে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক নির্মল মাজি, তাঁকেও গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন।


সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কনিনীকা ঘোষ, সভানেত্রী জাহানারা খাতুন, হাওড়া জেলা সম্পাদক দুলু দাস, মহিলা নেত্রী অপর্ণা পুরকাইতও। সমাবেশ পরিচালনা করেন কেয়া দাস। প্রখর গরমকে উপেক্ষা করে সমাবেশে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মহিলারা সমাবেশে উপস্থিত হন। 
নারী নির্যাতন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং আনিস খানের খুনীদের শাস্তির দাবিতে সরব হয় সমাবেশ। পঞ্চায়েত ও পৌরসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার দাবি ওঠে সমাবেশ থেকে।
২০১০ সালের মুক্তিরচকের ঘটনাকে চাপা দিতে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কের ভূমিকার কড়া নিন্দা করেন কারাত। তিনি বলেন, হাথরসে ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীরা মুক্তি পেয়েছে। কারণ উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার অপরাধীদের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা নেয়নি। পশ্চিমবঙ্গেও একইভাবে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার অপরাধীদের অপরাধ চাপা দিতে চেষ্টা করেছিল। কারাত বলেন, রাজ্যে  মহিলাদের উপর নির্যাতনে রাজ্যেলর মুখ্যেমন্ত্রী নীরব থাকেন । থানায় গিয়ে ওনাকে অপরাধীদের ছাড়াতে দেখা গেছে। মুক্তিরচকে লড়াইতে লাল ঝাণ্ডার পার্টি, মহিলা সংগঠন, আইনজীবীরা নয় বছর ধরে লড়াই করেছে। ফেব্রুয়ারিতে ঘটনা ঘটেছে। তিন মাসের মধ্যে ছেড়ে দিয়েছে জামিনে। জামিনের পর যে ভয়ঙ্কর চাপ দিয়েছিল তাতেও মহিলারা মাথা নত করেননি। কামদুনির মতো মুক্তিরচকের দুই অত্যাচারিত মহিলার পরিবারকে চাকরি দিতে হবে। আমরা তাঁদের পুনর্বাসনের দাবি করছি।

কেন্দ্রের মোদি সরকার ও পশ্চিমবঙ্গের মমতা সরকার যে নীতির দিক থেকে এক একথা উল্লেখ করে বৃন্দা কারাত বলেছেন, বিজেপি খেলা করছে সংবিধানের সাথে। মমতা ব্যানার্জিও খেলা করছে সংবিধানের সাথে। ওদের জন্যই বাংলায় আরএসএস ও বিজেপি ঘৃণা ছড়াতে পারছে। তাই আমরা বিকল্প চাই। প্রতিদিন নতুন ভারতে ৮৭ জন মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়‌। হাথরসে যোগী সরকার বলেছিল কোনো ধর্ষণ ঘটেনি‌। উত্তরপ্রদেশে সরকার কোনো আপত্তি করেনি। তাই অপরাধীরা ছাড়া পায়। পশ্চিমবঙ্গেও একই ঘটনা ঘটছে। 
কনীনিকা ঘোষ বলেন, মুক্তিরচক গোটা পশ্চিমবঙ্গের কাছে অন্যতম আলোকবর্তিকা। ধর্ষিতারা বলেছেন তাঁরা মুখ ঢাকবেন না। মুখ ঢাকার কথা দুষ্কৃতীদের। আইনজীবীদেরও কুর্নিশ। একজনও কেউ ওই দুষ্কৃতীদের পাশে দাঁড়াননি। লড়াই করেছে আমতা, শ্যামপুর, বাগনান, সাঁকরাইল সহ গোটা রাজ্যে। মুক্তিরচকের লড়াইতে থামলে হবে না। জাহানারা খাতুন বলেন, মুক্তিরচকের আন্দোলন গোটা রাজ্যের বুকে সাহস জুগিয়েছে। ২০১১ সালের পর তৃণমূল জমানায় হাঁস, মুরগী ছাগল চুরির পর এখন বালি, গোরু, কয়লা থেকে সিণ্ডিকেটের ঘটনা সামনে আসছে। সব অপরাধীদের, চোরদের ধরতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

Comments :0

Login to leave a comment