প্রচার শেষের পর থেকে সর্বত্র চলেছে হুমকি। ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের কর্মী থেকে সমর্থকদের শাসিয়েছে বিজেপি’র দুষ্কৃতীবাহিনী। বাগবাসা বিধানসভার একটি বুথে প্রিসাইডিং অফিসারকে টেনে হিঁচড়ে বার করার ভিডিও ছড়িয়েও পড়েছে। তবে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ বলেছেন পূর্ব ত্রিপুরা আসনের তুলনায় ভোট লুটের প্রচেষ্টা অনেকটাই ঠেকানো গিয়েছে পশ্চিম ত্রিপুরায়।
অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম দফায়, ১৯ এপ্রিল, ভোট হয় পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা আসনে। শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, দ্বিতীয় দফায়, ভোট হয়েছে রাজ্যের অপর আসন পশ্চিম ত্রিপুরায়। শনিবার সিপিআই(এম) ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির ফেসবুক পেজে বিজেপি’র তাণ্ডবের চেহারা তুলে ধরা হয়েছে। পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভার বাগবাসা বিধানসভায় ২ নম্বর বুথে বিজেপি নেতার দলবল নিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারের ওপর হামলার ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে ভোট লুটের টাটকা অভিজ্ঞতা রয়েছে জনতার। তৃণমূল কংগ্রেসের দুষ্কৃতীবাহিনীর সেই তাণ্ডব পঞ্চায়েত নির্বাচনে দেখা গিয়েছিল ভোটের আগে, ভোটের দিন তো বটেই। এমনকি গণনাকেন্দ্রেও ব্যাপক কারচুপি চালানো হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে জনতার অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটাধিকারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে বিজেপি, রাজ্যের একের পর এক নির্বাচনী জনসভায় এই সুরেই বক্তব্য রাখতে শোনা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও। কিন্তু ত্রিপুরার অভিজ্ঞতা দেখিয়ে দিচ্ছে বিজেপি কী!
আগের দফায়, পূর্ব ত্রিপুরা কেন্দ্রে একাধিক বুথে ভোটের হার, কমিশনেরই তথ্যে, দেখা গিয়েছিল একশো শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। যার অর্থ, মোট ভোটদাতার চেয়েও পড়েছে বেশি সংখ্যায় ভোট। ব্যাপক কারচুপির অভিযোগে সরব ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ অভিযোগ দায়ের করেছে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের কাছেও। একাধিক বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। এখনও পর্যন্ত কমিশন কোনও ঘোষণা করেনি।
শুক্রবার দ্বিতীয় দফার ভোটের পর নির্বাচন কমিশনের ত্রিপুরার সিইও’র বক্তব্যও শোনারই মতো। এই আধিকারিক পুনীত আগরওয়াল বলেছেন, ‘‘আমরা বলছি শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। কিন্তু ভোটদাতারা কেমন মনে করছে সেটিই আসল কথা।’’
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেছেন, ‘‘তেলিয়ামুড়ায় একাধিক বাড়ি তছনছ করা হয়েছে। কমলপুরে দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রে হুমকি, ভয় দেখানোর মাত্রা ছিল মারাত্মক।’’ কল্যাণপুরে আবার মহিলা কর্মী পরিচালিত দু’টি বুথে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের সিপিআই(এম) প্রার্থী রাজেন্দ্র রিয়াংয়ের নাম ও প্রতীকে ওপর চুইংগাম সেঁটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
চৌধুরী বলছেন, ‘‘হুমকি হামলা চলেছে। তার ওপর প্রকৃতিও বিরূপ ছিল। কিন্তু তারপরও ৮০ শতাংশ ছাড়িয়েছে ভোট। এর পুরো কৃতিত্ব ত্রিপুরার সচেতন জনতার। সব বাধা উপেক্ষা করে গর থেকে বেরিয়ে আসার সাহস দেখিয়েেছেন তাঁরাই।’’
Comments :0