এদিন পোস্টে সিপিআই(এম) বলেছে, দক্ষিণ কাশ্মীরে উগ্রপন্থী হামলায় নিহত ৩ অফিসারের মৃত্যুতে গভীর শোক জানানো হচ্ছে। তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা রইল।
বুধবার দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার কোকরনাগ অঞ্চলের গারোল গ্রামে অভিযানে নামে কাশ্মীর পুলিশ এবং সেনার যৌথ বাহিনী। যৌথ বাহিনীর কাছে খবর ছিল, ওই অঞ্চলে ২ উগ্রপন্থী লুকিয়ে রয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। তল্লাশি চালাকালীন হঠাৎ গুলিবৃষ্টি শুরু হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন ভারতীয় সেনার ১৯ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের কর্ণেল মনপ্রীত সিং এবং মেজর আশিস ধানোক। গুলিবিদ্ধ হন কাশ্মীর পুলিশের ডিএসপি হুমায়ুন ভাট।
শ্রীনগরে ভারতীয় সেনার ঘাঁটি চীনার কোর’র মুখপাত্র জানিয়েছেন, আহত ৩ অফিসারকে উদ্ধারের জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার হয়। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে আহত অফিসারদের বাঁচানো যায়নি।
২০১৯ সালে সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ করে কেন্দ্র। অন্যতম যুক্তি ছিল সংবিধানের এই ধারার কারণে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা যাচ্ছে না। ৩৭০ ধারা রদ করার পাশাপাশি রাজ্যকে ভেঙে দু’টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল করা হয়। গত কয়েকবছর যদিও পরপর সন্ত্রাসবাদী হামলা যদিও ঠেকানো যায়নি।
নিরাপত্তা বাহিনীর একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, ৩ দশক ধরে চলা উগ্রপন্থী সমস্যায় হাতে গোনা ক্ষেত্রে ডিএসপি, কিংবা কর্ণেল পদমর্যাদার শীর্ষ অফিসাররা এনকাউন্টার চলাকালীন প্রাণ হারিয়েছেন। গত ৩০ বছরে ১২ জনের বেশি কমান্ডিং অফিসার প্রাণ হারাননি। কেবলমাত্র বুধবারের হামলায় প্রাণ হারালেন ৩ শীর্ষস্তরের অফিসার।
সেনা বাহিনীর প্রাক্তন অফিসারদের একটি অংশ জানাচ্ছে, উগ্রপন্থা নির্মূল হওয়া দূরের কথা, বরং দক্ষিণ কাশ্মীরের নতুন নতুন জায়গায় ঘাঁটি তৈরি করছে উগ্রপন্থীরা। গজিয়ে উঠছে নতুন বেশ কিছু সংগঠন। যেমন বুধবারের ঘটনার দায় স্বীকার করেছে নতুন গজিয়ে ওঠা একটি সংগঠন রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট।
সংবাদমাধ্যমে সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন অফিসাররা জানিয়েছেন, দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলা এতদিন শান্ত ছিল। কিন্তু বর্তমানে পুঞ্চ, রাজৌরি হয়ে দক্ষিণ কাশ্মীর অবধি বিস্তৃত ঘন পাইন বনের জঙ্গলকে আশ্রয়ের জন্য বেছে নিচ্ছে উগ্রপন্থীরা। এবং এই অঞ্চলের লড়াই চালানো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় লড়াই চালানোর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ। তারফলেই সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
Comments :0