JALPAIGURI DIPAWALI

বৃদ্ধার নিষ্প্রদীপ ঘরে জ্বলল আলো, অন্য দীপাবলী নাজিরপাড়ায়

জেলা

বৃদ্ধা প্রাণবালা রায়ের ঘরে আলো জ্বালাচ্ছেন সিপিআই(এম) কর্মীরা। ছবি: প্রবীর দাশগুপ্ত

দীপশুভ্র সান্যাল, জলপাইগুড়ি 

আলোর উৎসব, কিন্তু সবার ঘরে কি জ্বলে আলো? 

জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন সদর ব্লকের খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ নাজিরপাড়ার বৃদ্ধা  প্রাণবালা রায়ের ঘরে আলো জ্বালানোর উপায় ছিল না। তাঁর ঘরেই দ্বীপ জ্বালালেন সিপিআই(এম) কর্মী সমর্থকরা। 

খড়িয়া পঞ্চায়েতে সিপিআই(এম) সদস্য গৌরী রায় শীল, প্রাক্তন উপপ্রধান অনিল চন্দ্র রায়, এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুবীর রায় এবং পার্টির কর্মী ও নেতারাই নিলেন অর্থসংগ্রহের উদ্যোগ। দীপাবলীর সন্ধ্যায় আলো জ্বালানো হলো পানোবালা রায়ের ঘরে। 

কখনও দিনমজুরি, কখনো মানুষের বাড়িতে কাজ করে দুই নাতি নাতনি নিয়ে সংসার চালান প্রাণবালা রায়। দুই সন্তানের একজন অসুখে, আরেকজন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁদের স্ত্রীরাও শাশুড়ির সঙ্গে থাকেন না। ছোট্ট দুই নাতি-নাতনিকে নিয়ে রয়েছেন বৃদ্ধা। বিদ্যুৎ নেই বাড়িতে।

অন্ধকার ঘরে রাতের বেলায় কখনো কুপি, কখনো মোম জ্বালিয়ে রান্নাবান্না থেকে সংসারের অন্যান্য কাজকর্ম সবই করতে হয় তাঁকে। কখনো পা পিছলে পড়ে, কখনো অন্ধকারে গুঁতো খেয়ে শীত গ্রীষ্ম বর্ষায় এভাবেই দিন কাটছিল তাঁর। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের মাথাদের কাছে গিয়েছিলেন। তবে কোনও ফল হয়নি। ভাঙা ঘরে থাকলেও জোটেনি সরকারি সহায়তা।

খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ৩০টি আসনের মধ্যে ৩টিতে জয়ী হয়েছে সিপিআই(এম)। একটি আসনে কংগ্রেস। ১১ টি আসনে জয়ী হয়ে বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়েছে বিজেপি। পঞ্চায়েত গঠন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি’ও এমন মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসেনি। বরং, অসহায়ের পাশে দাঁড়িয়ে ঘর নির্মাণের মতো বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন সিপিআই(এম) সদস্যরাই। সিপিআই(এম)’র উদ্যোগের পাশে দাঁড়িয়েছেন এলাকাবাসী। 

সিপিআই(এম) সদর দক্ষিণ পূর্ব এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুবীর রায় বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট সরকারের উদ্যোগে স্বল্প আয়ের মানুষদের বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা ছিল। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ফেলো করি মাখো তেল ব্যবস্থা চালু করছে। রাজ্যের তৃণমূল সরকারও সেই পথেই চলছে। তাই আমরা বিকল্প উদ্যোগ নিয়ে  মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণ নাজিরপাড়া বুথের বৃদ্ধা পানোবালা রায়ের অন্ধকার ঘরে  দীপাবলীর সন্ধ্যায় আলো জ্বালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’

রবিবার সকাল থেকেই বাড়িতে বিদ্যুতের সরঞ্জাম টুনি লাইট, বাল্ব এনে পার্টি কর্মীরা নিজেরাই সেগুলি হাতে হাতে লাগানোর ব্যবস্থা করেন। দীপাবলীর সন্ধ্যায় জ্বালানো হয় আলো। সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার মানুষও।

Comments :0

Login to leave a comment