SANDESHKHALI LAND HIGH COURT

রাজ্যকে নির্দেশে হাইকোর্টের, সন্দেশখালির দখলি জমির নথি দিতে হবে সিবিআই-কে

রাজ্য

 সন্দেশখালি মামলায় দখল করা জমির নথি সিবিআই’র হাতে তুলে দিতে বলল হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেছেন, সিবিআই তদন্তে সাহায্য করতে হবে রাজ্য সরকারকে। সিবিআই’র তরফে সন্দেশখালিকাণ্ডের তদন্তে রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়। একাধিক ক্ষেত্রে রাজ্যের অসহযোগিতার জন্য তদন্তের অগ্রগতি থমকে রয়েছে। 
এদিন বিচারপতি শিবজ্ঞানমের ডিভিসন বেঞ্চে সন্দেশখালির ঘটনার ‘স্ট্যাটাস রিপোর্ট’ জমা দিয়েছে সিবিআই। বিচারপতি এই রিপোর্ট পড়েই বলেছেন, তদন্তের কাজে সিবিআই যে সমস্ত জমির নথি চাইছে তা রাজ্য সরকারকে দিতে হবে। সন্দেশখালিতে জমি দখলের প্রায় ৯০০টি অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিএলআরও অফিস থেকে এই সমস্ত জমির তথ্য পাওয়ার কথা। কিন্তু সেখান থেকে সিবিআই’কে সাহায্য করা হচ্ছে না। 
সন্দেশখালির আন্দোলনের জেরে এর আগে রাজ্য সরকার জানিয়েছিল যে, শাহজাহান বাহিনীর গায়ের জোরে দখল করা জমি ফেরত দেওয়া হবে। আদিবাসীদের জমিও বন্দুকের নলের মুখে দখল করেছিল শেখ শাহাজাহানের বাহিনী। আন্দোলনের চাপে সে সময় সন্দেশখালিতে গিয়ে রাজ্যের এক মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, জমি দ্রুত কৃষকদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তা অবশ্য হয়নি। ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে সন্দেশখালির দু’টি ব্লক। তার মধ্যে শুধু ২ নম্বর ব্লকেই ৩৫৬ বিঘা জমি লুট করেছে শাহজাহান-শিবু বাহিনী। রায়তি জমিতেও লোনা জল ঢুকিয়ে ভেড়ি করে দেওয়া হয়েছে।
সন্দেশখালির সাহসী মহিলাদের আন্দোলনের চাপেই শেখ শাহজাহান, শিবপ্রসাদ হাজরা, উত্তম সর্দার, অজিত মাইতি, আমির আলি গাজি গ্রেপ্তার হয়েছে। জোর করে জমি দখল, চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে দেওয়া, লিজের টাকা না দেওয়া, জবকার্ডের দুর্নীতি, মহিলাদের দলীয় অফিসে মাঝরাতে ঢেকে অত্যাচার করা, শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ— অভিযোগের ফিরিস্তি লম্বা। প্রশাসনের তরফে ক্যাম্পও করা হয়েছিল। তাতে একের পর এক জমি দখলের অভিযোগও জমা পড়ে। তৃণমূলী দুষ্কৃতীদের জমি দখলের অসংখ্য কাহিনি সন্দেশখালি জুড়ে। সেই সব জমি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হলেও প্রশাসনের তরফে জমির কোন নথি তুলে দেওয়া হয়নি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকদের হাতে। 
এদিন বিচারপতি রাজ্য সরকারের আইনজীবীকে বলেন, আদালতের নির্দেশের পর সন্দেশখালির বেশকিছু এলাকায় আলো লাগানো হয়েছে। কিন্তু সিসিটিভি’র ব্যবস্থা করা হয়নি। এছাড়া জমির যে সমস্ত রেকর্ড তদন্তকারী সংস্থা চাইছে তা পাওয়া যাচ্ছে না। এই মামলার শুনানির সময়ই সেখানকার সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে জেলা শাসকের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল। জেলা শাসক এখনও সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দেননি। এদিন এব্যাপারে জেলাশাসককে সতর্ক করে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করা হয়েছে। 
এদিকে এদিন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এই মামলায় যুক্ত হওয়ার আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে।
 

Comments :0

Login to leave a comment