5th OCTOBER MARCH

‘অপরাধীদের ধরতে পথে নামতে হবে ৫ অক্টোবর’

জেলা

5th OCTOBER MARCH বারাকপুরে সভা সিপিআই(এম)’র। ছবি: অভিজিৎ বসু

তৃণমূল সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিজেপি সরকারের ইডি এবং সিবিআই। রাজ্যের মানুষ তদন্ত চাইছেন। কারণ যোগ্যদের বঞ্চিত করে টাকার পাহার হয়েছে। তদন্তের দাবিতে রাস্তায় নামা ছাড়া উপায় নেই। ৫ অক্টোবর সিবিআই’র দপ্তর সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান সফল করতে হবে।

এই মর্মে আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার জনসভা হয়েছে বারাকপুরে। সিপিআই(এম) বারাকপুর এরিয়া কমিটির পক্ষ থেকে ব্যারাকপুর স্টেশন চত্বরে জনসভা। বক্তব্য রেখেছেন সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্য শতরূপ ঘোষ এবং গার্গী চ্যাটার্জি। তাঁরা বলেছেন, অপরাধীদের ধরতে পথে নামতে হবে ৫ অক্টোবর।

সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সোমবারই বলেছেন যে এক লুটেরা অন্য লুটেরার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। কার নির্দেশে তদন্তের গতি ঢিমে করা হচ্ছে? ৫ অক্টোবর এই প্রশ্নের জবাব চাইতে যাবেন রাজ্যের মানুষ। চাকরির পরীক্ষায় পাশ করেও যোগ্যরা রাস্তায় আনদোলন করছেন। আর ঘুষের বিনিময়ে চাকরি হচ্ছে। বিপুল টাকার লেনদেন হয়েছে।

সারদা, নারদকাণ্ড থেকে আজকের নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তদন্ত আটকাতে রাজ্যের তৃণমূল সরকার ছুটেছে সুপ্রিম কোর্টে। বিচারপতি বদল হয়েছে, কিন্তু দুর্নীতি আড়াল করা যায়নি। সোমবারও কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্‌হার এজলাসে সেই ছবি বেরিয়ে পড়েছে। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে এমন রিপোর্ট জমা দিয়েছে ইডি যে বিচারপতির ঝাঁকে ঝাঁকে প্রশ্ন ধেয়ে এসেছে। এই মামলায় জড়িত তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি। 

ইডি’র রিপোর্ট দেখে বিচারপতি প্রশ্ন করেছেন যে একজন সাংসদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই, তাঁর বাড়ির ঠিকানা নেই, তাহলে কীসের তদন্ত হচ্ছে? বিচারপতি ইডি’র আধিকারিকদের বলেছেন, আপনাদের দেওয়া রিপোর্টে অভিষেক ব্যানার্জির নামে কেবল তিনটি বিমা আছে বলে জানানো হয়েছে। এই রিপোর্ট কি মেনে নেওয়া যায়

আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের সিইও এবং ডিরেক্টরদের সম্পত্তির হিসাব জমা দেবে ইডি। আদালতের নির্দেশের পর যে রিপোর্ট জমা পড়েছে তা দেখে তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। সাংসদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না থাকলে তাঁর বেতন কীভাবে হচ্ছে, বিচারপতিই তুলেছেন সেই প্রশ্ন। 

এর আগে ২৯ আগস্ট বিচারপতি এমনই প্রশ্ন তুলেছিলেন। এদিন বারাকপুরে সে কথা মনে করিয়েছেন সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ। তাঁরা বলেছেন, অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। অথচ তদন্ত চলছে ঢিমেতালে। বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে অপরাধীদের। 

মঙ্গলবার জনসভায় সভাপতিত্ব করেন প্রভাত ভান্ডারী। বক্তব্য রাখেন তড়িৎ বরণ তোপদার, কল্লোল মুখার্জি ও শিক্ষক আন্দোলনের নেত্রী দীপ্তি কণা মহান্তও।

সেলিম বলেছেন, ইডি-সিবিআই কোন ব্যবস্থাই নেবে না। মধ্য প্রদেশেও শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। সেখানে দুর্নীতিকান্ডে সাংবাদিক, সাক্ষী, ভুক্তভোগী, অভিযোগকারী শতাধিক মানুষ খুন হয়েছেন। কিন্তু তদন্ত এগোয়নি। কারণ, সেখানে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে আরএসএস-বিজেপি-র যোগ ছিলো। সেই শিক্ষায় শিক্ষিত রাজ্যের মমতা ব্যানার্জির সরকার। শুধু শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নয়, এনবিএসটিসি, বনদপ্তর, দমকল, পরিবহণ, পৌরদপ্তর সব জায়গাতেই দুর্নীতি হয়েছে। 

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলছে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। এই মামলাতেই গ্রেপ্তার হয়েছে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের একসময়ের ডিরেক্টর সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। এই সংস্থার সিইও স্বয়ং তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি। ২৯ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ঠিক হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment