FLOOD WEST MEDINIPUR

প্লাবিত পশ্চিম মেদিনীপুর, জলবন্দি অন্তত ৭ লক্ষ

জেলা

প্লাবিত ঘাটাল সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের বহু এলাকা, জলস্তর বিপদসীমার উপরে।
গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে প্লাবিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বহু এলাকা। জলের নিচে কয়েকশো বিঘা চাষের জমি। লাগাতার বৃষ্টিতে ঘাটাল মহকুমা এলাকা কার্যত জলের তলায়। জলের স্রোতে ভেসে গিয়ে এখনও পর্যন্ত জেলায় এক নাবলক সহ ২ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। জলবন্দি সাত লক্ষ মানুষ। নিরাপদ আশ্রয় সহ পানীয় জল সহ খাদ্যের সঙ্কট ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। পর্যাপ্ত নৌকা, পানীয় জল সহ খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার দাবিতে ঘাটাল মহকুমা শাসককে সোমবার ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে সিপিআই(এম)’র পক্ষ থেকে। 
ভুক্তভোগী পরিবারগুলির অভিযোগ শিলাবতী, কাঁসাই নদীর একাধিক জায়গায় দীর্ঘ দিন মেরামত না হওয়ায় দুর্বল বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে একের পর এক গ্রাম জলের তলায়। ঘাটাল মহকুমার একাধিক  ব্লক সহ কেশপুর, সবং, ডেবরা, নারায়নগড় ব্লক গুলির গ্রামীণ রাস্তা, সড়কের সঙ্গে একাধিক রাজ্য সড়কের উপর দিয়ে বন্যার জলের স্রোত বইছে। বহু মাটির বাড়ি ভেঙে জলের স্রোতে ভেসে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নদী গুলিতে বিপদ সীমার উপর দিয়ে জলের স্রোত। মানুষ বড় অসহায় ও বিপদে প্রশাসন নির্বিকার। ফোন করেও সাড়া না পাওয়ার অভিযোগ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৮০০-র বেশি মৌজা জলের তলায়। বিচ্ছিন্ন দীপ থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য সরকারি  নৌকার কোনো ব্যাবস্থাই নেই। জলের স্রোত ভেঙে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সময় ঘাটালের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের এক বৃদ্ধ বাদল সামন্ত জলের স্রোতে ভেসে গিয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গ্রামের মানুষ ডিঙি নিয়ে সেই দেহ উদ্ধার করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সেই দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায় বলে জানা গেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর থানার ভেলাঘাট মৌজায়। তমাল নদীর জলের চাপে এলাকা প্লাবিত। ঘরবাড়ি জলের তলায় চলে যাওয়ায় সড়ক রাস্তায় আশ্রয় নেন  বহু পরিবার। সেই সড়ক রাস্তার উপর দিয়ে জলের স্রোত ভেঙে পার হওয়ার সময় ৪ জন নাবালক জলে স্রোতে ভেষে যায়। দুই জন পথযাত্রী দেখতে পেয়ে জলে ঝাঁপ দিয়ে তিন জন নাবলকে উদ্ধার করলেও, এক জন নাবালক জলের স্রোতে তলিয়ে যায়। খরব ছড়িয়ে পড়লে বহু মানুষ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে দেহ উদ্ধারে জল নামেন। প্রায় ৪ ঘন্টা সাঁতারে তল্লাশি চালিয়ে সেই নাবালকের দেহ উদ্ধার করেন। পুলিশ প্রসাশন জানিয়েও কোনো নৌকা বা বোট পাওয়া যায়নি বলে এলাকার মানুষ বিক্ষোভ দেখান।
শিলাবতী নদীর দুইটি বাঁধ ভাঙে চন্দ্রকোনায়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বেশ কয়েকটি গ্রামের। হু হু করে জল ডুকছে কৃষি জমি ও একাধিক গ্রামে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার ভবানীপুর ও যাদবপুরে শিলাবতি নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হালদারবেড়, আটঘোরা শ্রীরামপুর, বনমালীপুর, ভবানীপুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ও কৃষি জমি। দাসপুরে শিলাবতী নদীর মুর্শিদনগর এলাকায় নদী বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। মাটির বস্তা দিয়ে জল আটকাতে গ্রামের মানুষ চেষ্টা চালিয়ে যান তাও আবার  নিজেদের খরচে। বস্তা দিয়ে বাঁধ দিয়ে গতকাল রাত থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেন। ঘাটালের হরিসিংহপুর এলাকায় নদীবাঁধে ফাটল, মাটির বস্তা দিয়ে জল আটকাতে মরিয়া স্থানীয়রা। কিন্তু বিগত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে পশ্চিম মেদিনীপুরের নদীগুলি এখনও ফুঁসলে। জলস্তর বিপদসীমার উপরে।

Comments :0

Login to leave a comment