Kolkata Student Death

অন্ধ্রে পড়তে গিয়ে কলকাতার ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

রাজ্য

Kolkata Student Death


যাদবপুরে র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়ে এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চারিদিক। এরই মধ্যে এই রাজ্য থেকে ভিন রাজ্যে ডাক্তারি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে পড়তে যাওয়া এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। টালিগঞ্জের বাসিন্দা ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের মেয়েকে খুন করা হয়েছে।
বিশাখাপত্তনমে রহস্যজনকভাবে মৃত ওই ছাত্রীর নাম রিতি সাহা। বয়স হয়েছিল ১৬ বছর ৭ মাস। টালিগঞ্জের নেতাজীনগরের বাসিন্দা তাঁরা। রিতির বাবা সুকদেব সাহা জানিয়েছেন,‘‘চিকিৎসক হতে চেয়েছিল আমার ছোট মেয়ে রিতি। তাই নিট পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে বিশাখাপত্তনমে যায়। সেখানকার আকাশ বাইজুসে ভর্তি হয় ২০২২-এ। আকাশ বাইজুসের নিয়ম অনুসারে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার জন্য রিতিকে ভর্তি করা হয় অ্যাচিভার্স জেআর কলেজে। রিতির থাকার বন্দোবস্ত হয় বিশাখাপত্তনমের আক্কাপালম এলাকার একটি হস্টেলে। হস্টেলের নাম সাধনা লেডিজ হস্টেল।’’
সুকদেব সাহার অভিযোগ, ‘‘গত ১৪ জুলাই রাত প্রায় ১২টা নাগাদ আকাশ বাইজুসের প্রধান রবিকান্তের ফোন আসে। আমাকে বলা হয় রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ রিতি ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে। ওকে স্থানীয় ভেঙ্কটরামা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু ওই একই ফোনে কনফারেন্স কলে সাধনা লেডিজ হস্টেলের ওয়ার্ডেন জ্যোতি ম্যাডাম বলেন যে রিতি ছাদ থেকে নয়, সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে। দু’জনের ভিন্ন কথায় আমরা একটু অবাক হই এবং সপরিবারে বিশাখাপত্তনমে রওনা দিই।’’

পরের দিন ১৫ জুলাই দুপুর ২টো নাগাদ রিতির পরিবার সেখানে পৌঁছায়। ওই হাসপাতালে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন রিতির অবস্থার অবনতি হয়েছে। রিতি তখন ভেন্টিলেশনে। পরিবারের অভিযোগ,‘‘অথচ ভর্তির সময় থেকে আমরা পৌঁছানো পর্যন্ত রিতির কোনও চিকিৎসাই হয়নি, শুধু কিছু সাধারণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া। জানা যায় রিতির মাথায় রক্ত জমে আছে এবং ওই হাসপাতালে নিউরোর কোনও চিকিৎসা ব্যবস্থাই নেই। এরপর আমরা অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে রিতিকে স্থানীয় একটি বড় হাসপাতালে ভর্তি করি।’’ পরের দিন, অর্থাৎ গত ১৬ জুলাই দুপুর ১২টা নাগাদ রিতি সেখানেই প্রয়াত হয়।
শনিবার ঘটনার কথা জানার পরেই শোকার্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন সিপিআই(এম) নেতা সুজন চক্রবর্তী ও কল্লোল মজুমদার। রিতির পরিবারের অভিযোগ, তাঁরা স্থানীয় পুলিশের কোনও সহায়তা পাননি। কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই তারা এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে দাবি করে। ময়নাতদন্তের আগে তা পরিবারের সদস্যদের দিয়ে জোর করে লিখিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করে। সুকদেব সাহার অভিযোগ,‘‘আকাশ বাইজুসের পক্ষ থেকে একবারের জন্যও খবর নেওয়া হয়নি।’’ সাহা জানিয়েছেন,‘‘গত ৮ আগস্ট আমরা অন্ধ্র প্রদেশের অমরাবতীর মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করি রিতির এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর যাবতীয় প্রমাণ আদালতের হেপাজতে নেওয়ার জন্য। হাইকোর্ট আমাদের আবেদন গ্রহণ করে। একজন কোর্ট কমিশনার নিয়োগ করেন আমাদের সঙ্গে বিশাখাপত্তনমে গিয়ে ওইসব প্রমাণ সংগ্রহ করার জন্য। কিন্তু এইবারও আমরা একইরকম অসহযোগিতার মুখোমুখি হই। বিশাখাপত্তনম পুলিশের ব্যবহার, আকাশ বাইজুস, সাধনা লেডিজ হস্টেল এবং ভেঙ্কটেশ হাসপাতালের অসহযোগিতা দেখে আমাদের মনে হয়েছে রিতির মৃত্যুর পেছনে নিশ্চয়ই ষড়যন্ত্র রয়েছে। রিতির মৃত্যুর কারণকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে এবং এর পিছনে অত্যন্ত প্রভাবশালী কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার হাত থাকতে পারে।’’

Comments :0

Login to leave a comment