শঙ্কর ঘোষাল: বর্ধমান
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই কি ভয় পেয়ে জনসভা আটকাতে ঝাঁপিয়ে পড়লো তৃণমূল? পুলিশ, প্রশাসন ও বালি মাফিয়াদের গোপন আঁতাতে মঙ্গলবার আউশগ্রাম-২ ব্লকের বিষ্ণুপুরে জনসভা করার অনুমতি দিল না প্রশাসন।
এখানেই বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআই(এম) প্রার্থী শ্যামলী প্রধানের সমর্থনে মীনাক্ষী মুখার্জি’র জনসভা করার কথা ছিল। যে মাঠে সভা হবে সেই জমির মালিক লিখিত অনুমতি দেওয়ার পর তাঁদের উপর শাসকদলের দুষ্কৃতী ও খুনের আসামী শেখ লালনের বাহিনী হুমকি দিতে শুরু করে। এই আউশগ্রাম-২ ব্লকের বিষ্ণুপুর অঞ্চলে যাতে কোনভাবেই সভা না হয় তার জন্য তৃণমূলের বাইকবাহিনী মানুষকে ভয় দেখাতে শুরু করে। পুলিশকে সব জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। সভার অনুমতি বাতিলের জন্য জমির মালিককে হুমকি দেওয়া হয়।
এমনকি শেখ লালনের গাড়িতে করে ব্লক অফিসে এনে জমির মালিককে অনুমতি প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়। শুরু থেকে জমির মালিক চেয়েছিলেন তাঁর জমিতেই সভা করুন মীনাক্ষী মুখার্জি।
এলাকার মানুষ বলছেন ভয় দেখিয়ে এই পরিবারকে অনুমতি প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে। পাশেই আরো একটি জমির অনুমতি পত্র থাকা সত্ত্বেও খুবই আশ্চর্যজনক ভাবে প্রশাসন সভার অনুমতি বাতিল করে। বালি মাফিয়া লালনের নেতৃত্বেই হয়েছে এই ষড়যন্ত্র।
মীনাক্ষী মুখার্জির সভাকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষ তেতে ছিলেন। কয়েকদিন আগেই কাছেই মুখ্যমন্ত্রীর সভা ছিল। হেলিপ্যাড তৈরি হয় স্কুল মাঠে, সেখানে হেলিকপ্টার চড়ে মমতা ব্যানার্জি আউশগ্রামে নেমেই বালি মাফিয়া, খুনের আসামী শেখ লালনের সাথে কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রীর জনসভার সব খরচ বহন করে এই বালি মাফিয়া, এমনটাই অভিযোগ এলাকার মানুষের। পুলিশ, প্রশাসনের তৎপরতার পরও আশানুরূপ জনসমাগম হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর সভায়। তখনই ষড়যন্ত্রের ব্লুপ্রিন্ট তৈরি হয় মীনাক্ষী মুখার্জির জনসভা বাতিল করানোর। এখানে বিজেপি অবাধে প্রচার করলেও লাল ঝান্ডাকে ভয় পাচ্ছে তৃণমূল।
সম্প্রতি আউশগ্রামের মানুষ পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে গণদরখাস্ত করে জানায় এই এলাকার অজয় নদে বহু বালির খাদ বালি তোলার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে তা সত্ত্বেও সেখানে মেশিন দিয়ে অবাধে বালি লুট করছে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি লালন। সেই টাকা শাসকদলের নির্বাচনী ফান্ডে জমা হচ্ছে। এমন অভিযোগ জেলাশাসকের কাছে করা হয়। কিন্তু শাসকের মদতে পুলিশ ও প্রশাসন লালনের ১০০ বেশি ডাম্পারকে বেআইনী বালি লুট বন্ধ করতে কোন ব্যবস্থায় গ্রহণ করেনি।
সিপিআই(এম) নেতা তাপস সরকার ও অপূর্ব চ্যাটার্জি অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে শাসকদল মীনাক্ষী মুখার্জির জনসভা বন্ধ করেছে। এই এলাকা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ও বালি মাফিয়া লালনের কথাতেই প্রশাসন চলে। মানুষ থেকে তৃণমূল বিচ্ছিন্ন হচ্ছে বলেই ভয় পেয়ে জনসভা বন্ধ করতে মরিয়া শাসকদল।
সোমবার বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে সিপিআই(এম) প্রার্থী সুকৃতি ঘোষালের সমর্থনে প্রচার করেছেন মীনাক্ষী।
Comments :0