Nitish Kumar

নীতীশ-কংগ্রেস কথা বৃহৎ বিরোধী ঐক্য গড়তে বৈঠক শীঘ্রই

জাতীয়

Nitish Kumar

বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে বৃহৎ ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। এব্যাপারে কংগ্রেসের পাশাপাশি অন্য বিরোধীরাও উদ্যোগী হয়েছে। সোমবারই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং রাহুল গান্ধীর সঙ্গে আলোচনা করেন। শীঘ্রই অ-বিজেপি দলগুলি একযোগে বৈঠকে বসবে বলে এদিনই জানানো হয়েছে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। সেই বৈঠকেই বিরোধী ঐক্য সংক্রান্ত বড় ধরনের ঘোষণা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। দু’একদিনের মধ্যে বৈঠকের দিন, স্থান জানিয়ে দেওয়া হবে।
নীতীশ কুমার রবিবারই দেখা করেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে। এদিন তিনি কথা বললেন খাড়গে এবং রাহুল গান্ধীর সঙ্গে। মূল লক্ষ্য, যাবতীয় মতভেদ দূরে সরিয়ে রেখে ২০২৪ সালের আগে বৃহৎ আকারে বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলে বিজেপি-সঙ্ঘ পরিবারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া। কর্নাটক বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পর বিরোধীরা আরও বিপুল উৎসাহে সর্বাত্মক ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে। এদিন খাড়গে টুইট করে বলেছেন, ‘দেশ আরও ঐক্যবদ্ধ হবে। শক্তিশালী গণতন্ত্রই আমাদের বার্তা। রাহুল গান্ধী এবং আমি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে। দেশকে নয়া অভিমুখে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েই আলোচনা হয়েছে আমাদের মধ্যে।’

কংগ্রেসের দুই নেতার সঙ্গে নীতীশের এক ঘন্টারও বেশি সময় কথা হয়। শীঘ্রই সমস্ত বিরোধী দলের নেতারা বৈঠকে বসে ২০২৪ সালের ভোটে লড়ার প্রাথমিক রূপরেখা তৈরি করবেন বলে জনতা দল (ইউ) সূত্রে জানা গিয়েছে। বৈঠকের পর বেণুগোপাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘‘বিরোধী নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসার তারিখ এবং স্থান দু’একদিনের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে।’’ ওই বৈঠক পাটনায় না দিল্লিতে বসবে, তা নিয়ে কথাবার্তা চলছে। সেকথাও শীঘ্রই জানিয়ে দেওয়া হবে, বলেছেন বেণুগোপাল।

এদিন নীতীশের সঙ্গে কংগ্রেস নেতাদের আলোচনায় ছিলেন জনতা দল (ইউ) সভাপতি লালন সিং। গত মাসেও খাড়গের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন নীতীশ কুমার। সেই সময় নীতীশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, তিনি কয়েকজন আঞ্চলিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন। সেই প্রতিশ্রুতিমতো নীতীশ একে একে বেশ কয়েকজন আঞ্চলিক দলের নেতা-নেত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। মূল উদ্দেশ্য, বিজেপি’র বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করা। সেই লক্ষ্যেই এক ছাতার তলায় অ-বিজেপি দলগুলিকে আনার একদিক থেকে উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছেন নীতীশ কুমার। মূলত যে দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের নানা কারণে মতপার্থক্য রয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন নীতীশ কুমার। অন্যদিকে, কংগ্রেস কথা বলছে সমমনোভাবাপন্ন দলগুলির সঙ্গে।

কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করে আমলা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত দিল্লি সরকার-কেন্দ্রের সংঘাতে তাঁরা যে আপ’র পক্ষে, সেই বার্তাই দিয়ে এসেছেন নীতীশ কুমার। কেজরিওয়ালের মতোই তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গেও সু-সম্পর্ক নেই কংগ্রেসের। তবে নীতীশের সঙ্গে এঁদের সম্পর্ক ভালো। এরকম আরও দু’একজন বিরোধী নেতা-নেত্রী আছেন যাঁদের সঙ্গে কংগ্রেসের মতান্তর থাকলেও নীতীশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক। এঁরা যাতে সবাই উপস্থিত থাকতে পারেন সেজন্য নীতীশের ইচ্ছা ওই বৈঠকটি পাটনায় করা হোক। আবার কংগ্রেসের ইচ্ছা, বিরোধী বৈঠক করা হোক দিল্লিতেই। আর বিরোধী দলগুলির সঙ্গে কথা বলায় নেতৃত্ব দিন খাড়গে। ইতিমধ্যে খাড়গে ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন এবং শিবসেনার আরেক গোষ্ঠী প্রধান উদ্ধব থ্যাকারের সঙ্গে। এরই সঙ্গে বামপন্থীরা বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সর্বাত্মকভাবে। এই উদ্যোগে রয়েছেন এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ারও। সম্প্রতি কর্নাটকে নয়া মন্ত্রীসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সার্বিক না হলেও বড় ধরনের বিরোধী ঐক্য লক্ষ্য করা গিয়েছে। পরবর্তী ধাপে সেই ঐক্যকে আরও জোরদার করে বিজেপি-কে ধাক্কা দেওয়াই লক্ষ্য।

এদিকে, কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনে আপ সাংসদদের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় অর্ডিন্যান্স’র বিরোধিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গেরা। এদিন নীতীশ কুমারের সঙ্গে আলোচনার পরেই সম্ভবত কংগ্রেসের পক্ষ ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বস্তুত, এর ফলে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী ঐক্য নতুন মাত্রা পেতে পারে।

Comments :0

Login to leave a comment