SUJAN CHAKRABORTY

এফআইআর’এ বিস্ফোরণ আড়াল কেন,
ক্ষোভ সুজন চক্রবর্তীর

রাজ্য

SUJAN CHAKRABORTY

মুখ্যমন্ত্রীর অপরাধের জন্য রোজ রোজ বিক্ষোভের মুখে পড়ছে পুলিশ। তৃণমূল, দুষ্কৃতী এবং পুলিশের যোগসাজশ মানুষ বুঝে গিয়েছেন। এগরার মানুষ সে কারণেই তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে ঘিরে ধরে ‘চোর চোর’ স্লোগান দিয়েছেন। খাদিকুলে বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে বুধবার এই মর্মে ক্ষোভ জানিয়েছেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। 

রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুইঞাঁর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলকে ঘিরে বুধবার ‘চোর চোর’ স্লোগান তুলেছেন গ্রামবাসীরা। এতজনের মৃত্যুর পর এসে কী হবে, এই প্রশ্নে উগরে দিয়েছেন ক্ষোভ। 

তিনি বলেছেন, এগরার খাদিকুলে বিস্ফোরণের দায় সরকার এবং পুলিশেরই। মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশমন্ত্রী দায় এড়াতে পারেন না। তদন্তে নেমে বিস্ফোরণ সংক্রান্ত আইনে মামলা কেন করেনি পুলিশ, তুলেছেন সে প্রশ্নও। পুলিশ এফআইআর’এ কেবল অগ্নিকাণ্ড রোধ সংক্রান্ত আইনে মামলা করেছে। 

মঙ্গলবার এগরার খাদিকুল গ্রামে বিস্ফোরণে দশ জনে মৃত্যু হয়েছে। চক্রবর্তী প্রশ্ন তুলেছেন, বাজি তৈরির আড়ালে বোমা কারখানায় বাকি যাঁরা কাজ করছিলেন, তাঁদের কী হলো? তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে এনআইএ তদন্তের দাবি সিপিআই(এম) করছে না। আদালতের নজরদারিতে তদন্ত না হলে দোষীরা ধরা পড়বে না। কেন্দ্রের সিবিআই বা এনআইএ এবং রাজ্যে সিআইডি নিরপেক্ষ কাজ করে না। তবে বিস্ফোরণের ঘটনাতেই তদন্ত করে এনআইএ। 

পুলিশের তরফে দায়ের এফআইআর’এ বিস্ফোরণ আড়াল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন চক্রবর্তী। তিনি বলেছেন, ‘‘অগ্নিকাণ্ড সংক্রান্ত আইনে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। অগ্নিকাণ্ড আর বিস্ফোরণ এক নয়। এক্ষেত্রে বিস্ফোরক ব্যবহার সংক্রান্ত আইনে অভিযোগ দায়ের করা উচিত ছিল। মুখ্যমন্ত্রী একদিকে বলছেন এনআইএ বা জাতীয় তদন্ত সংস্থাকে ডাকতে রাজি। সেক্ষেত্রে বিস্ফোরণেই জোর দেওয়া উচিত ছিল এফআইআর’এ। তা হলো না। আসলে গোড়া থেকেই বিষয়টিকে লঘু করার চেষ্টা শুরু করেছে পুলিশ এবং সরকার।’’ 

খাদিকুলের বাসিন্দারা রাখঢাক না রেখে সরাসরি পুলিশের মদত এবং টাকা খাওয়ার অভিযোগ জানাচ্ছেন। কারখানার মালিক ভানু বাগ তৃণমূলেরই নেতা, বলছেন স্থানীয়রাই। পঞ্চায়েত ভোটের জন্য বোমা বানানো চলছিল, এমন অভিযোগও শোনা গিয়েছে স্থানীয়দের মুখে। এগুলি মনে করিয়ে চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর অপরাধের জন্য পুলিশ রোজ মার খাচ্ছে, তাড়া খাচ্ছে। কালিয়াগঞ্জে এর আগে আমরা দেখেছি। এবার এগরাতেও হলো। পুলিশ অপরাধী না ধরে সাধারণ মানুষের ওপর মিথ্যা মামলা চাপাচ্ছে। পুলিশ তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পাহারা দিতে ব্যস্ত।’’ 

চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘পুলিশের মদত ছাড়া এমন হয় না। ওই এলাকায় এর আগে ছ’বার বিস্ফোরণ হয়েছে। অবৈধ বাজি কারখানা চলছিল কী করে? কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না আর নিরীহ মানুষের প্রাণ যাবে?’’ 

চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘স্থানীয়রা বলছেন মাসে ৫০ হাজার টাকা করে নিত পুলিশ। ওই টাকা কোথায় গিয়েছে দেখা দরকার।’’ 

একাংশের বক্তব্য, ভানু বাগের ভাইও এর আগে বিস্ফোরণে মারা যান। সেই ঘটনার তদন্ত কী হলো, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। এদিন খাদিকুলে যান বিজেপি নেতা এবং বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। 

Comments :0

Login to leave a comment