Gangasagar

নদী পারাপারের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরতে হচ্ছে বহু দর্শনার্থীকে

রাজ্য

মুড়িগঙ্গা নদীর চরে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করা হচ্ছে।

অনিল কুণ্ডু- গঙ্গাসাগর  

গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গন ছেড়ে ঘরমুখী হয়েছেন দর্শনার্থীরা। মকর সংক্রান্তির স্নান সেরেছেন কয়েক লক্ষ মানুষ। মঙ্গলবারও দিনভর সাগরের জলে ডুব দিয়েছেন বহু মানুষ। রওনা দিয়েছেন বাড়ির উদ্দেশ্যে। নদী পারাপারের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরতে হচ্ছে বহু দর্শনার্থীকে। মঙ্গলবার ভোর রাতে ঘন কুয়াশা ও ভাটার কারণে মুড়িগঙ্গা নদীর চরে আটকে পড়ে দুটি যাত্রী বোঝাই ভেসেল। তাঁদেরকে উদ্ধার করে জেটি ঘাটে পৌঁছে দেয় উপকূল রক্ষী বাহিনী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা। স্পীড বোটে ভেসেলে আটকে পড়া আতঙ্কিত যাত্রীদের সকলকেই নিরাপদে কাকদ্বীপের লট এইটে জেটি ঘাটে পৌঁছে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গন ছেড়ে ওই যাত্রীরা কচুবেড়িয়া থেকে কাকদ্বীপের লট এইটে ভেসেলে যাচ্ছিলেন। নদীতে ভাটার কারণে প্রায় ৬ ঘন্টা ভেসেল চলাচল বন্ধ ছিল। 
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক এবিষয়ে জানান, রাত প্রায় ৩টে নাগাদ ওই ভেসেল দুটি যাত্রীদের নিয়ে লট এইটের উদ্দশ্যে যাচ্ছিল। এর মধ্যে একটি ভেসেল নদীর চরে আটকে পড়ে। আর একটি ভেসেল নদীতে জল কম থাকায় চরে আটকে পড়তে পারে এই আশঙ্কায় মুড়িগঙ্গা নদীর মাঝখানে জলে ঘুরপাক খাচ্ছিল। তাঁদেরকেও উদ্ধার করা হয়েছে। সকলকেই নিরাপদে ভেসেল থেকে নামিয়ে জেটিতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের উদ্ধার কার্যে স্পীড বোট, ওভারক্র্যাফ্ট ব্যবহার করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে সকলকে পানীয় জল, শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। 
শীতের ঠান্ডা, ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল সাগরদ্বীপ। ভেসেল, বাস চলাচল বন্ধ থাকায় মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে সকাল প্রায় ৯টা পর্যন্ত দুর্ভোগে পড়তে ঘরমুখী দর্শনার্থীদের। বেলা যতো বেড়েছে গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গন ততোই ফাঁকা হতে শুরু করে। নদী পারাপারের দুর্ভোগ, ভোগান্তি ছাড়া নির্বিঘ্নে কেটেছে এবারের গঙ্গাসাগর মেলা। 
এদিন সকালে মেলা প্রাঙডগনের ৬ নম্বর রাস্তার শেষে সমুদ্র সৈকতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের তরফে সাফাই অভিযান করা হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রীরা ছাড়াও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। এদিন সমুদ্রতটে সকালে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রুী অরূপ বিশ্বাস দাবি করেন মেলায় ১কোটি ১০ লক্ষ দর্শনার্থী এসেছেন এবং সাগর স্নান করে তাঁরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। মন্ত্রী এই দাবি করলেও বেসরকারি বাসের বেশ কয়েকজন কর্মী মঙ্গলবার এই দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে বলেছেন, কচুবেড়িয়া থেকে গঙ্গাসাগর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ৩৫০টি বেসরকারি বাস চলাচল করছে। গঙ্গাসাগর মেলায় যদি এক কোটি মানুষ আসতো তাহলে জন প্রতি ৪০ টাকা ভাড়ায় প্রত্যেকটি বাস সাড়ে ১১ লক্ষ ৪২হাজার ৮৫৭ টাকার ব্যবসা করতে পারতো। কিন্তু বাস ব্যবসা করেছে গড়ে ৫৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী এবারের গঙ্গাসাগর মেলায় সর্বোচ্চ যাত্রী এসেছেন প্রায় ৫ লক্ষ ২৫ হাজার। তবে গঙ্গাসাগর মেলায় যেভাবে দর্শনার্থীদের সংখ্যা রাজ্য সরকারের তরফে ঘন্টায় ঘন্টায় লক্ষ লক্ষ বৃদ্ধি করা হয়েছে তাতে সকলেই হতবাক। সকলেরই একটাই প্রশ্ন এভাবে তিলকে তাল করে কি জাতীয় মেলার স্বীকৃতির জন্য। তবে দুর্ঘটনা বিহীন নির্বিঘ্নে মেলা শেষ হওয়ায় হাফ ছেড়েছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। সরকারি নিয়মানুযায়ী মঙ্গলবার রাতে ক্যাম্প ফায়ার করেন অতিরিক্ত জেলা শাসক (সাধারণ) তথা মেলা অফিসার অনীশ দাশগুপ্ত। 
 

 

 

Comments :0

Login to leave a comment