Post Editorial

নৈরাজ্যে মত্ত আইন রক্ষকরাই

উত্তর সম্পাদকীয়​

 পার্থপ্রতিম বিশ্বাস


‘বাংলা তার নিজের মেয়েকেই চায়’ – রাজ্যের গত বিধানসভা ভোটের ‘হাই ভোল্টেজ’ প্রচারে এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছিল রাজ্যের বর্তমান শাসক তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সরকারের দু’বছর পূর্তির সময়কালে দুটি দৃশ্য দেখেছেন রাজ্যের মানুষ। 
দৃশ্য -১ কালিয়াগঞ্জে প্রকাশ্য রাজপথ দিয়ে দিবালোকে পুলিশ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে এক কিশোরীর  মৃতদেহ ।
দৃশ্য -২ জনতার রোষের শিকার পুলিশ হেলমেট পরে মেঝেতে বসে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইছে।  
আইন রক্ষক: ক্রিয়া বনাম প্রতিক্রিয়া 
‘প্রতিটি ক্রিয়ার সমান এবং বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া থাকে’ –আইজ্যাক নিউটনের এই গতিসূত্র স্কুলের গণ্ডি পেরানোর আগেই জেনে ফেলে এদেশের কচিকাঁচারাও। কিন্তু দুশ্চিন্তা, পদার্থ বিজ্ঞানের সেই সুত্র এখন সমাজবিজ্ঞানে প্রসারিত হলে ‘ক্রিয়া’ এবং ‘প্রতিক্রিয়ার’ ধাক্কায় সমাজ জীবনে ভয়াবহ পরিণতি কেমন হতে পারে। তা নিয়েই আশঙ্কায় দিন কাটছে বঙ্গবাসীর। বলাই বাহুল্য, কালিয়াগঞ্জের কিশোরী মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের যে নির্লজ্জ এবং নির্বুদ্ধিতার রূপ টিভির পর্দায় দেখেছেন মানুষ তাতে পুলিশ পরিবারের মানুষেরাও যে ছি ছি করবে তাতে সন্দেহ নেই। সন্দেহ নেই আইন রক্ষক পুলিশের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ কালিয়াগঞ্জ সমেত উত্তরবঙ্গের জল ঘোলা করেছে। আর সেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নামা রাজনীতির কারবারিরা পরিস্থিতিকে উত্তরোত্তর জটিল থেকে জটিলতর করে তুলেছে। পুলিশের সেই অসভ্য এবং অসংবেদনশীল  আচরণের প্রতিবাদে জনরোষ আছড়ে পড়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ওপর। ফলে পুলিশের নিগৃহীত হওয়ার ঘটনায় ক্রুদ্ধ রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী পুলিশের হাতে বন্দুকের বদলে ‘বালা’ ছিল কি না এমন সওয়াল করেছেন ! তাই  নিউটনের গতিসূত্র মেনে পুলিশ সময় নষ্ট না করে মধ্যরাতের ‘ এনকাউন্টারে ‘ তেত্রিশ বছরের এক তাজা যুবককে বাড়ির উঠানে হত্যা করে সগর্বে ফিরে গেছে থানায়। 
নিয়ন্ত্রণের শিকার পুলিশ 
সারা পৃথিবী জুড়েই পুলিশের ভূমিকা আইন রক্ষকের। ফলে দেশের আইন রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনী সম্পর্কে আম জনতার সমীহ এবং ভরসা থাকাটা কাঙ্খিত। তাই আইন রক্ষকের ভুমিকায় প্রাথমিক প্রয়োজন নিরপেক্ষতা। কিন্তু নিরপেক্ষতার পরিবর্তে আইনরক্ষক পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে উঠলে তাঁর ওপর সাধারণ মানুষের ভরসা কিংবা সমীহের জায়গায় চিড় ধরতে  থাকে। সেই চিড় প্রশস্ত হয়ে উঠলে গোটা ব্যবস্থাটা ভেঙে পড়তে পারে! ফলে তৈরি হয়ে উঠতে পারে সার্বিক নৈরাজ্যের পরিস্থিতি যা আখেরে উন্নত গণতন্ত্রের মুল কাঠামোকে ভেঙে ফেলতে পারে। সাম্প্রতিক কালের রাজ্যের  ধারাবাহিক ঘটনাক্রম তেমনই এক বিপদের ইঙ্গিতবাহী । 
এদেশের শাসন কাঠামোয় আইন রক্ষক  সম্পর্কে চালু সামাজিক প্রতিক্রিয়া হলো তাঁরা একেবারেই তরল পদার্থের মতো। যে পাত্রে তাকে রাখা হয় সেই পাত্রের আকার ধারণ করে। অর্থাৎ  শাসকের আসনে যে দল বসে পুলিশ তাঁদের অনুগত বাহিনীতে পরিণত হয়। ফলে আইনের শাসন বজায় রাখার পরিবর্তে শাসকের আইন মেনে চলার প্রবণতা প্রবল সেই বাহিনীর। এদেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে রাজ্যে রাজ্যে পুলিশ কম বেশি এমন দোষে দুষ্ট। স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলি হাল আমলে যেমন শাসকের নিয়ন্ত্রণের রাজনীতির চাপে তাঁদের স্বাধীন নিরপেক্ষ চরিত্রের জলাঞ্জলি ঘটছে ঠিক তেমনটাই হচ্ছে পুলিশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থার ক্ষেত্রে। কেন্দ্রের সরকারের নিয়ন্ত্রণে যেমন চলছে ইডি – সিবিআই তেমনই রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে চলে সিআইডি। কিন্তু রাজ্যে  সাম্প্রতিক কালে শাসকের নিয়ন্ত্রণের রাজনীতির শিকার হয়েছে পুলিশ খুব দ্রুত লয়ে। ফলে শাসক দলের বশ্যতা শিকারের মাশুল গুনতে হচ্ছে সেই বাহিনীকে হাড়ে হাড়ে। তাই পুলিশকে বোমা মারার নিদান দেওয়া শাসক দলের নেতাকে গ্রেপ্তার করা দূরের কথা উলটে সেই নেতার চেয়ারের ধুলো সাফ করতে হয় আইনের রক্ষাকর্তাদের। ‘ বগটুই ‘ গণহত্যার পর রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীর ঘোষণায় মানুষ জানতে পেরেছে যে পাড়ায় পাড়ায় অশান্তি ঠেকাতে পুলিশ কিংবা দমকল আসবে কিনা সেটা নির্ভর করবে  এলাকার পুলিশ অফিসারের ওপর বিচার বুদ্ধির উপরে নয় সেটা ঠিক হবে সেই এলাকার তৃণমূলের নেতার আদেশেই। ফলে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের মাথার ওপর শাসক দলের নেতাদের ছড়ি ঘোরানোর ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে  সরকারি উদ্যোগেই। 
প্রশ্নে পুলিশের পেশাদারিত্ব 
নিয়ন্ত্রণের রাজনীতির শিকার হয়ে পুলিশের নিরপেক্ষতা কিংবা গ্রহণযোগ্যতা যেমন হারাচ্ছে তেমন হারাচ্ছে তাঁদের পেশাদারিত্ব এবং দায়বদ্ধতা। অবশ্য নিয়ন্ত্রণের শিকার হয়ে গেলে পেশাদারিত্ব কেবল পুলিশ হারায় না সেটি হারাতে থাকে বিজ্ঞানী থেকে ইতিহাসবিদ, শিল্পী থেকে সাহিত্যিক প্রতিটি পেশাতেই। কিন্তু আইনরক্ষক হিসাবে পুলিশের পেশাদারিত্বে বিচ্যুতির অভিঘাত জনজীবনে প্রবল। যেমন কালিয়াগঞ্জে মৃত কিশোরীর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগেই সেই মৃত্যু বিষক্রিয়ায় ঘটেছে এমন কথা জেলার পুলিশ কর্তা যদি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন তখন পুলিশের নিরপেক্ষতা এবং পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বৈকি। মৃতার পরিবার যখন অভিযোগ করেছে কিশোরী ধর্ষিতা হয়ে খুন হয়েছে, সে কথা ধর্তব্যে না নিয়ে ‘ সব চাঙ্গা সি’ মেজাজে রাজ্যের নারী কল্যাণ মন্ত্রীও বিষ খেয়ে মৃত্যুর তত্ত্ব প্রতিষ্ঠায় মাঠে নেমে পড়লেন। কার্যত ‘হাথরাস’ থেকে ‘হাঁসখালি’ প্রতিটা ক্ষেত্রেই খুন-ধর্ষণকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকার মরিয়া চেষ্টায় সব শাসকেরই রং এক। সরকার অপরাধকে স্বীকার না করলে একদিকে যেমন অপরাধ ঠেকানোর পরিকল্পনা এবং উদ্যোগ কার্যকর হয় না তেমনই অপরাধীরা সরকারি এই  উদাসীনতার আড়ালে পার পেতে থাকে। আর সেপথেই সরকারের সুশাসনের তত্ত্ব মিথ্যা প্রচার করতে গিয়েই প্রশাসন মানুষের আস্থা হারায়।  সেই অনাস্থার ফলে প্রতিষ্ঠান বিরোধী মানুষের ক্ষোভ গিয়ে আছড়ে পড়ে  পুলিশ প্রশাসনের ওপর, আর তখন আক্রান্ত হয় পুলিশ। জলজ্যান্ত এক কিশোরীর মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে  যে প্রশাসন নিরপেক্ষ অবস্থান কিংবা সংবেদনশীল আচরণে অক্ষম তাঁদের বিরুদ্ধে জনরোষ হওয়াটাই সঙ্গত। এমন বোধশক্তিহীন প্রশাসনের দাবি  স্থানীয়  মানুষের ক্ষোভের হাত থেকে কিশোরীর ‘মৃতদেহ’ উদ্ধার করতে  মধ্যযুগীয় বর্বরতায়  চ্যাংদোলা করে দেহ হিঁচড়ে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে নাকি  বাধ্য হয়েছিল!   আর এভাবেই  আইনরক্ষকদের প্রতি সমীহ এখন প্রতিদিন উবে গিয়ে  পরিণত হচ্ছে রোষে। বলাই বাহুল্য, সেই রোষ উর্দির বিরুদ্ধে নয় বরং সেই রোষ হয়ে উঠছে শাসকের কুশাসনের বিরুদ্ধে।

অক্ষম প্রশাসন – সক্ষম আদালত 
আইন রক্ষকদের বিরুদ্ধে বেড়ে চলা সামাজিক অনাস্থার এক বড় কারণ সাম্প্রতিককালে ঘটে চলা রাজ্যব্যাপী বিপুল দুর্নীতির উপাখ্যান। রাজ্যের প্রশাসনে গোয়েন্দা বিভাগ একটি অতি জরুরি ভূমিকা পালনকারী সংস্থা। সম্প্রতি হাইকোর্টের আদেশে নিয়োগ দুর্নীতিতে শাসক দলের নেতা মন্ত্রীদের যোগসাজশে যে কোটি কোটি  টাকা রাজ্যজুড়ে হাত বদল হয়েছে সেটা প্রবলভাবে সামনে এসেছে। কিন্তু এই দুর্নীতি লোকচক্ষুর অন্তরালে হয়নি। অথচ এই বিপুল দুর্নীতির কোনও খোঁজ আজ পর্যন্ত রাজ্যের পুলিশ কিংবা গোয়েন্দা বিভাগ টের পায়নি ? রাজপথে দিনের পর দিন বসে থাকা চাকরি প্রার্থীরা এই দুর্নীতি নিয়ে ‘হুইসিল ব্লোয়ারের’ কাজ করে গেলেও রাজ্যের প্রশাসন ছিল নির্বিকার। ফলে এখন ইডি – সিবিআই তদন্তে নিয়োগ দুর্নীতির ব্যাপ্তি সামনে আসার পর রাজ্যের মানুষের চোখে রাজ্য প্রশাসনের কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা থাকা স্বাভাবিক নয় , সম্ভব নয়। দুর্নীতির এমন পুকুর চুরি ঢাকতে পুকুরে মোবাইল ফেলা আইনসভার সদস্যরা এখন আইন ভক্ষকের ভুমিকায় অধিষ্ঠিত। ফলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এখন এ রাজ্যে রসিকতায় পর্যবসিত। মনে রাখা দরকার যে রাজ্যে দুর্নীতি কোনও গোপন ডেরায় বসে সন্ত্রাসবাদীদের বজ্র কঠিন সাংগঠনিক কাঠামোয় ঘটেনি বরং পঞ্চায়েত , বিডিও – এসডিও’র নাকের ডগায় রেট চার্ট বানিয়েই দুর্নীতি  হয়েছে। আর তাই এই সংগঠিত অপরাধে আইন রক্ষক হিসাবে পুলিশের ওপর মানুষের নতুন করে অনাস্থা তৈরি হওয়াটাই  স্বাভাবিক। 
এই প্রেক্ষিতে পুলিশ প্রশাসনের ওপর ভরসা হারানো আপামর মানুষজনের নতুন ভরসার ‘এপিসেন্টার’ হয়ে উঠেছে রাজ্যের বিচার ব্যবস্থা। ফলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের হাইকোর্টের এক বিচারপতি মসীহা হিসাবে স্থান করে নেন পীড়িত মানুষের মনে। একদিকে রাজ্যের প্রশাসন যখন মানুষকে সুশাসন দিতে অক্ষম তখন আদালতের হস্তক্ষেপ নিত্যদিনের সমাজ জীবনে বেড়ে চলেছে। আর সেই প্রেক্ষিতে শাসকের আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে বিচার ব্যবস্থাকে। আদালতের রায় শাসকের বিরুদ্ধে গেলেই বিচারপতির বাড়ির পাশে হুমকি  পোস্টার পড়ছে , বিচারপতিদের ব্যাক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে , তাদের এজলাস অবরুদ্ধ হচ্ছে। আর আইনের রক্ষকেরা কাঠ পুতুলের মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে অদৃশ্য এক সুতোর টানে। ফলে প্রশাসনিক ব্যর্থতায় রাজ্যের প্রান্তে প্রান্তে তৈরি হচ্ছে নৈরাজ্যের পরিস্থিতি। 
আইনভঙ্গে অভিযুক্ত আইন রক্ষক 
বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে ভোটে জিতে আসা রাজ্য প্রশাসন সম্পর্কে আম জনতার দ্রুত মোহভঙ্গের অন্যতম কারণ হচ্ছে শাসকের নীতিহীন রাজনীতি। আইনের চোখে অভিযুক্ত এবং গ্রেপ্তার হওয়া নেতা মন্ত্রীরা রাজ্যের জেলে বসে জামাই আদর ভোগ করছেন, হাতে হাতকড়া পরে পুলিশের ঘেরা টোপে সাংবাদিক  সম্মেলন করছেন, জেলে বসে দল চালাচ্ছেন, এমনকি হেপাজতে থাকা নেতা ল্যাংচার  দোকানে বসে গোপন সলা পরামর্শ সারছেন! আর এসবই চলছে পুলিশের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনীতে। ফলে এহেন পরিস্থিতিতে আইন রক্ষকদের বিরুদ্ধে আইন ভঙ্গের অভিযোগ মান্যতা পাচ্ছে। সত্যাসত্যের আপেক্ষিক ধারণা দ্রুত পালটে যাচ্ছে মানুষের মধ্যে। ফলে চুরি-ডাকাতি–দুর্নীতির প্রতি ঘৃণার পরিবর্তে এসবের সাথে মানিয়ে নিয়ে বেঁচে থাকার অভ্যাস রপ্ত করতে হচ্ছে মানুষকে। সরকারি প্রকল্পকে হাতিয়ার করে অবাধে চলছে লুট। কয়লা, বালি, পাথরের মতো সম্পদ পাচার করে সরকারি রাজস্ব লুটের মোচ্ছব চলছে আইন রক্ষকদের সঙ্গী করেই। ফলে পঞ্চায়েত থেকে পৌরসভা এখন ‘লাইফ লাইন’ হয়ে উঠেছে শাসক দলের নেতা কর্মীদের। এমন প্রেক্ষিতে শাসকের সীমাহীন দুর্নীতি এবং ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে  বিরুদ্ধে আক্রমণের লক্ষ্য  হয়ে উঠছে আইন রক্ষকদের একাংশ। ফলে জনরোষের এমন প্রতিফলন কখনও আমতার আনিস খানের মৃত্যুতে, কখনও বগটুই গণহত্যায়, কখনও কামদুনি আবার কখনও ঘটছে  কালিয়াগঞ্জে। 
নৈরাজ্যের তরজা রূপ 
হাল আমলে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তুলেছে রাজ্যের তীব্র ঘ্রাণ এবং দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতায় নৈরাজ্যের রাজনীতির বাড় বাড়ন্ত। কারণ রাজ্যে নৈরাজ্যের রঙে এখন মিশছে সাম্প্রদায়িক  রাজনীতির রং। বিস্ময় বাড়তে থাকে যখন রামনবমীর মিছিলে পিস্তল, বুলডোজার, অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাম ভক্তির নামে নৈরাজ্য দেখেও  নিষ্ক্রিয় থাকে প্রশাসন। আর নৈরাজ্য যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় তখন শুরু হয় দুই শাসকের দোষারোপের পালা। দোষারোপের এই তরজায় এখন যুক্ত হয়েছে কেন্দ্রের এবং রাজ্যের দুই স্বশাসিত সংস্থার প্রধানেরাও। শিশু কিংবা নারী সুরক্ষা কমিশনের প্রাথমিক কাজ অপরাধের নিরপেক্ষ তদন্ত করে সরকারকে রিপোর্ট দাখিল করা। কিন্তু ধর্ষণ কিংবা শিশুমৃত্যুর অব্যবহিত পরে এমন কমিশনের কর্তারা  ঘটনাস্থলে পৌঁছেই বিনা তদন্তেই দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে। রাজ্যের পুলিশ কেন্দ্রীয় দলের তদন্তে নানা অছিলায় বাধা তৈরি করছে আর রাজ্যের সুরক্ষা কমিশন সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় নিয়োজিত প্রাণ হয়ে মুল অপরাধ আড়ালের কৌশল তৈরি করছে। রাজ্য কিংবা কেন্দ্র উভয় সুরক্ষা কমিশন তাঁদের স্বশাসিত চরিত্র বিসর্জন দিয়ে নিজের নিজের সরকারের লেজুড় বৃত্তি করছে আর তাতে উপেক্ষিত হচ্ছে মানুষের স্বার্থ । আর এভাবেই সুশাসনের অভাবে প্রশাসনের বিরুদ্ধে তৈরি করছে এক সার্বিক অনাস্থা।

Comments :0

Login to leave a comment