RATION SCAM SALIM

হইচই হলে তল্লাশি হয়, মূল অপরাধীদের ধরা হয় না, ক্ষোভ সেলিমের

রাজ্য

ছবি সংগ্রহ থেকে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, আন্দোলন জোরালো হলে কেন্দ্রীয় সংস্থা তল্লাশি করে কিছুদিন। কিন্তু রাজ্যে একের পর এক দুর্নীতিতে তদন্ত হয় না। অপরাধীরা ধরাও পড়ে না। 

খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে তল্লাশির প্রতিক্রিয়ায় এই মর্মে ক্ষোভ জানিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এদিন তল্লাশির মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল প্রধান মমতা ব্যানার্জি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘কিছু হলে’ ইডি এবং সিবিআই’র বিরুদ্ধে এফআইআর করার হুঁশিয়ারিও দেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলেছেন কেন্দ্রে আসীন বিজেপি’র বিরুদ্ধে।

সেলিম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে কোনও ব্যবস্থা নেননি কেন? তিনি কেন দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি? তাঁর নজরদারির মধ্যেই এমন কেলেঙ্কারি ঘটলে তিনি নিজেও দোষী। তিনি এখন অন্যকে দায়ী করছেন কিভাবে।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘ভাইপোকে বাঁচানোর জন্য অন্যদের বলির পাঁঠা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। ধরা যাতে না পড়ে যান তার জন্য আগাম গাওনা গেয়ে রাখছেন।’’  

রেশন দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের, কিন্তু রাজ্য সরকার তদন্ত করেনি। এত বড় মাপের দুর্নীতিচক্র কেবল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সক্রিয়তায় চলতে পারে না , জানিয়েছেন সেলিম।

সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও কড়া প্রতিক্রিয়া দেন। তিনি বলেন, ‘‘রেশন দুর্নীতিতে ধৃত বাকিবুর রহমানের একশো কোটি টাকার হদিস মিলেছে। এই রেশন কেলেঙ্কারিতেই অভিযুক্ত বাকিবুর। ৯৫টার বেশি সম্পত্তি। ১৬ শো কাঠার বেশি জমি, যেন জমিদার! তা’হলে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে তো তল্লাশি হবেই।’’

চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তল্লাশি যেন জ্যোতিপ্রিয়তে আটকে না যায়, অপরাধের মাথাদের ধরতে হবে। বিধানসভার সদস্য থাকাকালীন একাধিক বার প্রশ্ন তুলেছিলাম যে রাজ্যের জনসংখ্যা যত তার চেয়ে বেশি লোককে রেশন দেওয়ার হিসেব হচ্ছে কোথা থেকে। ১০ কোটি মানুষকে রেশন দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল সরকার। অন্তত আড়াই কোটি মানুষের রেশন লুট হয়ে গিয়েছে প্রত্যেক সপ্তাহে সংগঠিতভাবে। জবাব দেননি মুখ্যমন্ত্রী।’’

বৃহস্পতিবার সল্টলেকে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যের বনমন্ত্রী তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। বাকিবুর রহমানের চালকল, হোটেল, রিসর্ট, বারের খোঁজ মিলেছে বলে দাবি ইডি সূত্রের। রেশনের জন্য বরাদ্দ চাল খোলা বাজারে বিক্রির চক্র বিপুল সম্পত্তি করেছে বলে অভিযোগ তদন্তকারীদের। গত সপ্তাহে বাকিবুরকে গ্রেপ্তার করে ইডি। এদিন মন্ত্রীর সল্টলেকের বাসভবনের পাশাপাশি দমদম নাগেরবাজারে একাধিক ফ্ল্যাটে তল্লাশি চলেছে। তল্লাশি হয়েছে তাঁর সহযোগীর বাড়িতেও। অন্তত ৭টি জায়গায় তল্লাশি হয়েছে। 

সেলিম এই প্রসঙ্গেই বলেছেন, ‘‘যখনই আমরা দুর্নীতির অভিযোগে সরব হই, হইচই করি, তখন তল্লাশি হয়। এর বাড়ি তার বাড়ি তল্লাশি হয়। কিন্তু অপরাধীদের ধরা হচ্ছে না কেন।’’

উল্লেখ্য, সারদা চিটি ফাণ্ড, নারদ থেকে নিয়োগ দুর্নীতি বা কয়লা, গোরু পাচার তদন্ত চললেও কোনও মামলায় আদালতে শাস্তি ঘোষণা হয়নি। সে জায়গায় পৌঁছায়নি কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডি বা সিবিআই।

সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো এবং কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লিতে রয়েছেন সেলিম। সেখানেই তিনি প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। 

Comments :0

Login to leave a comment