Paddy Cultivation

বোরো ধানের উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা

জেলা

অপূর্ব মন্ডল- বালুরঘাট


শুধুমাত্র খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকাই কি কৃষকের নিরাপত্তা? বছরের পর বছর ধান চাষ করেও কৃষক কোনো লাভ করতে পারছে না। গত ৫ বছরে ধান চাষের খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ কিন্তু সেই তুলনায় ধানের সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি হয়নি এমনটাই জানাচ্ছেন ভুক্তোভোগী কৃষকেরা। ধানের সহায়ক মূল্য  বৃদ্ধি না করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কৃষকেরা। ধানের উপযূক্ত দাম না পেলে হয়তো আগামী বোরো চাষের মরসুমে অনেক কৃষক বিরত থাকবেন ধান চাষে। ধানের উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কাও থাকবে। জানাচ্ছেন বিভিন্ন এলাকার কৃষকগন। বর্তমানে রাজ্য সরকার ধানের সহায়ক মূল্য ঠিক করেছে ২০৮০টাকা প্রতি কুইন্টালে। তাও নির্দিষ্ট পরিমান ধান প্রতিটি কৃষক দিতে পারবেন। 
রবিবার বালুরঘাট ব্লকের অমৃত খন্ডের কৃষক অচিন্ত মহন্ত বলেন, ধানের বীজ, সার, ট্রাক্টরে চাষের খরচ ভীষণ ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ধান লাগানো ও মারাইয়েও একটা বিরাট খরচ হচ্ছে। শেষে বাড়িতে ধান আসার পর যখন বিক্রি করতে যাচ্ছি তখন ধানের দাম পাচ্ছি না। নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। সেই তুলনায় ধানের সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি হয়নি।
তপন ব্লকের মালঞ্চা পঞ্চায়েতের কৃষক শ্যাম বর্মন বলেন, শুধু ধানের রেজিষ্ট্রেশন করতে দুই দিন যেতে হয়েছে। সেখানেও অনেক হ্যাপা আছে। তারপর কবে মোবাইলে ম্যাসেজ আসবে ধান বিক্রির সেই তারিখে যেতে হবে ধান নিয়ে মান্ডিতে। তিনি বলেন, সারের কালোবাজারিত ফলে যে দাম দিয়ে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছি সেই হারে ধানের দাম বৃদ্ধি হচ্ছে না। এই ভাবে চললে কৃষকরা আগামী দিনে চাষ আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। হিলি ব্লকের পাঞ্জুলের কৃষক মানস মণ্ডল বলেন, ধান কেটে মারাই করার পর সরকারের কাছে মান্ডিতে ধান বিক্রি সহ ব্যাঙ্কে টাকা পেতে দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষা করতে হয়। প্রয়োজনে ধান বিক্রি করতে হলে  গেলে সেই ফড়িয়াদের কাছেই ধান বিক্রি করতে বাধ্য হই। 
কৃষকের ধান বিক্রির ব্যাপারে সারা ভারত কৃষক সভার জেলা সম্পাদক সকিরুদ্দিন আহমেদ বলেন, ইতিমধ্যে আমরা সংগঠনগত ভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ব্লক স্তর থেকে উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকদের ধানের বর্তমান সহায়ক মূল্যকে অতিদ্রুত  বৃদ্ধির ব্যাপারে দাবি রেখেছি। তিনি জানান, প্রতি কুইন্টালে ধানের দাম ২৮০০ টাকা না পেলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।  আমরা মান্ডিতে কৃষকদের কাছ থেকে ধানের ধলতা নেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। তিনি আরো বলেন,আমাদের নেতৃত্বদের কাছে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষকরা অভিযোগ জানাচ্ছেন মান্ডিতে রেজিষ্ট্রেশনের অসুবিধার ব্যাপারে। 
তিনি বলেন, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আরও অসহায় হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। ধান বীজ, জমি চাষ, সেচ, সার, কীটনাশক, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, ধান কাটা শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারণে কৃষকের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ধান চাষের জন্য কৃষকের যা যা প্রয়োজন, তার সবকিছুই কৃষকে কিনতে হয় চড়া মূল্যে। আমরা বাম কৃষক সংগঠনগুলি যৌথ ভাবে দীপাবলি উৎসব পার হলেই প্রতিটি ব্লকে ধানের সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে তীব্র আন্দোলনে নামবো।


 

 

Comments :0

Login to leave a comment