TMC

প্রশাসনের ভরসাতেই ব্রিগেডে ‘গর্জনের’ ডাক দিল তৃণমূল

রাজ্য

 আগামী ১০ মার্চ ব্রিগেডে সভা করবে তৃণমূল। সভার নাম দেওয়া হয়েছে ‘জনগর্জন সভা।’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জি এদিন সোশাল মিডিয়ায় এই সভার কথা জানিয়েছেন।
গত ৭জানুয়ারি ব্রিগেডে সভা করেছে ডিওয়াইএফআই। ‘যৌবনের ডাকে’ সেই ব্রিগেডে সমাজের প্রতিটি অংশের মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। সভা হয়ে উঠেছিল ‘জনতার ব্রিগেড।’ কাজ, শিক্ষার সুযোগের দাবিতে, তৃণমূলের দুর্নীতি, অপশাসন এবং বিজেপি-র সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদের স্পষ্ট প্রকাশ ছিল সেদিনের বিশাল সমাবেশ। ইতিমধ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ কী মাত্রায় আছে, তা জানিয়েছে সন্দেশখালির ঘটনা। তৃণমূল নেতাদের সেখানে মানুষ তাড়িয়ে বেড়াচ্ছেন। পরিস্থিতি দেখে রবিবারই মহেশতলায় অভিষেক ব্যানার্জি জানিয়েছেন যে, ঘোষণা থাকলেও সন্দেশখালিতে তিনি আপাতত যাচ্ছেন না। ব্রিগেড সমাবেশের পরে যাবেন।
রাজ্যে তৃণমূলের নেতারা এখন কোণঠাসা। মানুষ তৃণমূল নেতাদের প্রবল ঘৃণা করেন, সেই আঁচ তারা পেয়েছেন। চুরি, নারী নির্যাতন, জমি লুটের মতো অভিযোগ শুধু সন্দেশখালিতেই আছে তা নয়। রাজ্যের প্রতিটি গ্রামে, শহরে মানুষ তৃণমূলের অত্যাচারে, চুরিতে ক্ষুব্ধ। এই অবস্থায় দলের সেই কোণঠাসা নেতাদের সাহস জোগাতে ব্রিগেড সমাবেশের ডাক দিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি, অভিষেক ব্যানার্জি।
এই ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে আগমনকেই হাতিয়ার করার কৌশল নিয়েছেন পিসি-ভাইপো। আগামী মার্চে তিনদিন রাজ্যে সভা করবেন মোদী। সর্বশেষ সভা আগামী ৮মার্চ, বারাসতে। সেখানে সন্দেশখালির নির্যাতিত মহিলা হাজির করার একটি চেষ্টা শুরু করেছে বিজেপি। মোদীর সেই সভার আটচল্লিশ ঘণ্টা পরে সভাকে প্রধানমন্ত্রীর পালটা সভা হিসাবে দেখিয়ে ‘বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়ছে শুধু তৃণমূল’— এ’ কথা প্রমাণের চেষ্টা হবে আগামী ১০মার্চ। আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি আর তৃণমূলের মধ্যেই শুধু লড়াই— বামপন্থী এবং তাদের সহযোগীদের ঠেকাতে আরএসএস-র এই কৌশলের ভিত্তিতেই প্রধানমন্ত্রীর সভার একদিন পরে মমতা ব্যানার্জিদের ব্রিগেড সভার ডাক।
তবে পুলিশ এবং প্রশাসনের সাহায্য ছাড়া ব্রিগেড সভা করা তৃণমূলের পক্ষে অসম্ভব। রাজ্যের গ্রাম, শহরে যা অবস্থা, তৃণমূলের নেতাদের ডাকে বাস ভরিয়ে মানুষ আসবেন কলকাতায়— এমন কল্পনা তৃণমূলের নেতারাও করছেন না। ফলে এদিন ঘোষণার পরে অনেক নেতাই চিন্তায় পড়েছেন। সেক্ষেত্রে পুলিশ, প্রশাসনের প্রভূত সাহায্য করতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর দলকে। সেই ভরসাতেই আছেন অভিষেক ব্যানার্জি। 
আর একটি ‘ভরসা’র খোঁজেও আছেন তৃণমূলের নেতারা। মমতা ব্যানার্জি মুখ্য বক্তা হলেও আগামী ১০মার্চের সভাতে কয়েকটি আঞ্চলিক এবং জাতীয় দলের নেতাদের সেই সভায় হাজির করার একটি উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তৃণমূলের একটি সূত্র রবিবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন।
অন্যদিকে পুলিশকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রাজ্যের প্রতিটি জেলায় কড়া নজর রাখতে। সন্দেশখালির মতো অবস্থা রাজ্যের অনেক জায়গাতেই আছে। এই সময়ে যদি আরও কয়েকটি জায়গায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্দেশখালির মতো গণজাগরণ দেখা দেয়, তাহলে তা তৃণমূলের পক্ষে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। প্রত্যেক পুলিশ সুপার এবং জেলা শাসককে প্রতি সপ্তাহে অবস্থা পর্যালোচনা করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment