CPI(M) RALLY

অধিকার বুঝে নিতে এককাট্টা লড়াইয়ের ডাক

রাজ্য জেলা

CPIM RALLY ঢোলার সমাবেশে মহম্মদ সেলিম।

অনিল কুণ্ডু

বাংলার মানুষ এককাট্টা হয়ে লুটেরাদের বিরুদ্ধে লড়ছেন। সারা বাংলা জুড়ে গ্রাম জাগছে। গ্রাম যত জাগছে তৃণমূলের ভয় বাড়ছে। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরছে। পুলিশ চোর ধরে না, চোরকে পাহারা দেয়। লড়াই চলবে, লুটের টাকা গরিবকে ফিরিয়ে দিতে হবে। 

লুটের বিরুদ্ধে এবং অধিকারের লড়াইয়ে সমর্থনের আহ্বান জানিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার দুই সমাবেশে এ কথা বলেছেন সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ। রবিবার ঢোলা এবং সংগ্রামপুরে হয়েছে এই দুই সমাবেশ। ঢোলার সমাবেশে তৃণমূলের রাজনীতিতে ঘৃণা ছুঁড়ে সমর্থক প্রায় দেড় হাজার মানুষ যোগ দিয়েছেন লাল ঝান্ডার ডাকা সমাবেশে। 

সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সিপিআই(এম) সাংসদ এবং আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য, জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ী এবং জেলা নেতৃবৃন্দ। তাঁরা বলেছেন, লুটের বিরুদ্ধে লড়াই করছে লালঝান্ডা। বিজেপি নয়। বিজেপি’র টিকিটে জিতে তৃণমূল করছে কৃষ্ণ কল্যাণী, অর্জুন সিংরা। দিদি এবং মোদীর লুটের বিরুদ্ধে এককাট্টা লড়াইকে ভাঙতে ধর্মের ভাগাভাগি করছে।  

সেলিম বলেছেন, ‘‘তৃণমূল এবং বিজেপি’র বিরুদ্ধে যারাই লড়ছে, সে কংগ্রেস হোক বা আইএসএফ, সবাইকে এককাট্টা করে লড়তে চায় সিপিআই(এম)। গরিবের লুট হয়েছে। সর্বত্র লুট। ছাত্রদের স্টাইপেন্ড থেকে নিয়োগের দুর্নীতি। দরকারে লুটেরাদের সম্পত্তি নিলাম করে টাকা ফেরাতে হবে গরিবকে।’’ 

সেলিম বলেছেন, ‘‘অনেকে বলছিলেন তৃণমূল করতে হয় বাঁচার জন্য। এখন বলছেন, বাঁচার জন্য তৃণমূল ছাড়তে হয়। বগটুইয়ে তৃণমূলেরই একপক্ষ অন্যপক্ষকে পুড়িয়ে মারল। ক্লাস ফোরের শিশুকেও রেহাই দেয়নি। লুটের জন্য বখরার জন্য খুনোখুনি মারামারি করছে প্রধানের সঙ্গে উপপ্রধান, ব্লক সভাপতির সঙ্গে বিধায়ক।’’ 

উল্লেখ্য, এদিনও মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে তৃণমূলের দু’পক্ষে মারাত্মক সংঘর্ষ হয়েছে। একপক্ষের মারে অন্যপক্ষকে কাতরাতে দেখা গিয়েছে মাটিতে পড়ে থেকে। দলের সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির ‘নবজোয়ার যাত্রা’ নিয়মিত প্রার্থী বছাইয়ে কাড়াকাড়ি মারামারি দেখিয়েছে।

 বিজেপি’র প্রচারকেও আক্রমণ করেন সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘ভাইপোকে জেরায় ডাকা হয়েছে। তা কি বিজেপি’র জন্য? মোটেই না। ২০১৪ থেকে দেশের সরকারে বিজেপি। রাজ্য একের পর এক দুর্নীতিতে জেরবার মানুষ। কারও শাস্তি হয়নি। ভাইপোকে জেরায় ডাকতে বলেছে হাইকোর্ট।’’ পুলিশের ভূমিকার কড়া নিন্দা করে তিনি বলেন, ‘‘উর্দি আছে, থানা আছে, বন্দুক আছে। কিন্তু চোর ধরে না, ধর্ষক ধরে না। উলটে তাদের পাহারা দেয়।’’ তিনি বলেন, ‘‘প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলা, জেল, জরিমানা হয়েছে। লালঝাণ্ডা তোলা যাবে না। লালঝান্ডার দপ্তর খোলা যাবে না। কিন্তু সব কিছুরই শেষ আছে। মানুষ লালঝান্ডা তুলে নিচ্ছেন।’’ 

শমীক লাহিড়ী বলেন, ‘‘কেরোসিনের দাম একশো টাকা পার করেছে। গ্যাসের দাম পার করেছে হাজার টাকা। ধর্মের পরিচয়ে হিন্দু বলে কারও জন্য কেরোসিন বা গ্যাসের দাম কমে না। আসলে লুট হচ্ছে। গরিব সাধারণ মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে। দেশে বা এ রাজ্যে হিন্দু বা মুসলিম বলা হয় লুটের বিরুদ্ধে লড়াইকে ভাঙার জন্য।’’ তিনি বলেন, ‘‘গরিব মানুষের টাকা লুট হবে আর দলবদল করে বেঁচে যাবে, তা চলতে পারে না। দিদি আর মোদী, দু’জনের লুটের বিরুদ্ধেই এই লড়াই চলবে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে।’’ 

বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা শিক্ষা চাই, আমরা রোজগার চাই। বামপন্থীরা শক্তিশালী ছিল যখন একশো দিনের কাজের অধিকার আদায় হয়েছে। বামপন্থীরা দুর্বল হলে একশো দিনের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। আমরা অধিকার চাই। সেই লড়াইয়ে বাংলার মানুষ জাগছেন। আমরা একা নই। প্রতিবাদে মুখর হচ্ছে পাড়া-মহল্লা। আজ অধিকার বুঝে নেওয়ার পালা।’’ তিনি বলেন, ‘‘আদালতের লড়াই আর রাস্তার লড়াই মিললে লুটেরারা পালাবার পথ পাবে না। সেই লড়াই করছে বামপন্থীরা।’’  

Comments :0

Login to leave a comment