Mamata Banerjee on Citizenship Act

তৃণমূলে চোর আছে, স্বীকার করছেন মমতাও

রাজ্য

দলে চোর রয়েছে স্বীকার করলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। যদিও চুরির দায় সিপিআই(এম)’র ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। মঙ্গলবার হাবড়ার বানীপুরে বিআর আম্বেদকর গভর্নমেন্ট স্পোর্টস কমপ্লেক্স ময়দানে সরকারি সভা হয়। নামে সরকারি সভা হলেও সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে সরকারি পয়সায় দলীয় সভাই করলেন মুখ্যমন্ত্রী। 
এদিন হাবড়ার সভায় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর নামই উচ্চারণ করলেন না মুখ্যমন্ত্রী। শুধু বললেন, ‘তৃণমূলের সবাই চোর নয়’। মানে, অন্তত কেউ কেউ চোর স্বীকার করছেন মমতা। 
অথচ যেদিন রেশন দুর্নীতি মামলায় বনমন্ত্রী হাবড়ার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সল্টলেকের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। দীর্ঘ তল্লাশির পর তাঁকে গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘বালুর সুগার আছে। ওর যদি কিছু হয়ে যায়, তা হলে আমি ইডি আর বিজেপির বিরুদ্ধে এফআইআর করব।’’
আর এদিন মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘‘তৃণমূলের সবাই চোর নয়। দু’এক জন সিপিএম থেকে আসা কেউ কিছু করতে পারে। তাদের জন্য কোর্টে কেস চলছে।’’ 
এদিন হাবড়ার সভা থেকে ২৭১৯ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করেন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ছাড়া অন্যান্য জেলার ৬৪৭ টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর সভাকে কেন্দ্র করে জেলা এবং জেলার বাইরের থেকে অসংখ্য বাস তুলে নেওয়ায় জেলার পরিবহণ ব্যবস্থাই ভেঙে পড়ে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বক্তৃতার অধিকাংশই ছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। সিএএ-র সঙ্গে এনআরসি জুড়ে দেওয়ার কথা বলে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে তিনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন না করার কথা বলেন। 
এদিন শিলিগুড়ি দীনবন্ধু মঞ্চে উন্নয়ন বোর্ডগুলোকে নিয়ে বৈঠকে যোগ দেন মমতা ব্যানার্জী। বৈঠকে ছিলেন উত্তরবঙ্গের আট জেলার প্রশাসনিক আধিকারিক, বিধায়ক, পৌরসভাগুলির চেয়ারম্যান, লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বেশ কয়েকজন প্রার্থীও। এছাড়াও ছিলেন জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। 
এদিন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘২০২০ সালে পাশ হয়েছিলো। আমরা বিরোধিতা করেছিলাম। তবে এতদিন কেন নয়, একেবারে নির্বাচনের মুখেই কেন্দ্রের সরকার সাম্প্রদায়িক বিভাজনের নোংরা রাজনীতি করতেই সিএএ কার্যকর করেছে।’’ 
মমতা বলেছেন, ‘‘আপনাদের ভোটের মাধ্যমেই প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, পৌরপতি, পঞ্চায়েত সব কিছু নির্বাচিত করা হয়। আপনাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে। যেমনটা আসামে করা হয়েছে।’’ 
সোমবারই সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছিলেন যে রাজভবনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে কথা হয়েছে। একজন এনআরসি এনে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার ভয় দেখাবেন। আরেকজন লড়াইয়ের নামে নাটক করবেন। বিভাজন এবং মেরুকরণ করে ভোটে ফয়দা তুলতে চায়, বিজেপি এবং তৃণমূল, দু’দলই। তবে মানুষ এই কৌশল ধরে ফেলেছেন।’’
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব এবং অনুপ্রবেশ নিয়ে জিগির শুরু হয় প্রধানমন্ত্রী পদে অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময়েই। ২০০৩ সালে নাগরিকত্ব বিধি সংশোধন হয়। বামপন্থীরা তার বিরোধিতা করে তখনও। আর মমতা ব্যানার্জি ছিলেন বাজপেয়ী মন্ত্রীসভার সদস্য। 

Comments :0

Login to leave a comment