Argentina vs Netherlands

ডি পল, ডি মারিয়াকে নিয়ে উদ্বেগ

খেলা

Argentina vs Netherlands

স্মৃতির স্মরণি বেয়ে আবার বিশ্বকাপে মুখোমুখি হতে চলেছে আর্জেন্টিনা ও ডাচরা। শুক্রবার দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে দুই দল যখন মুখোমুখি হচ্ছে তখন অবশ্যই আরও ইতিহাস লেখা হবে। এই খেলা আবারও নস্টালজিয়ায় ঘুরে আসা যেতেই পারে। ১৯৭৮ সালের ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েই প্রথম বার বিশ্ব জয় আর্জেন্টিনার। কিন্তু খুব সহজে জয় আসেনি। ৯০ মিনিট খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিত থাকার পর খেলা গড়িয়েছিল অতিরিক্ত সময়ে। শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে যেতে আর্জেন্টিনা। ক্যামপোস দুই গোল করেছিলেন সেই খেলায়। সেই থেকেই বিশ্ব ফুটবলের কমলা ব্রিগেডের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্পর্ক আর্জেন্টিনার। সাও পাওলোতে ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও ০-০ গোলে ড্র করার পর পেনাল্টি শুট আউটে গিয়েই ডাচদের বিরুদ্ধে জিততে হয় আর্জেন্টিনাকে। ফলে আর্জেন্টিনার কাছেও যে খুব সহজ ম্যাচ হবে না তা বলাই যায়। 
তবে একই সাথে এই ম্যাচ আধুনিক যুগের সেরা ডিফেন্ডারদের একজনের বিরুদ্ধে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফরোয়ার্ডদের একজনের। আবার কাতার বিশ্বকাপের সবচেয়ে বয়স্ক কোচ ও সর্বকনিষ্ঠ কোচও মুখোমুখি হবেন এই ম্যাচে। তরুণ আর্জেন্টিনা কোচ স্কালোনি বলেন, ‘এটি আগের ডাচ দলগুলোর মতো উজ্জ্বল নয়, কিন্তু তারা কী করে সে বিষয়ে তারা খুব স্পষ্ট। ম্যাচটি দুটি ঐতিহাসিক দলের মধ্যে একটি দুর্দান্ত ম্যাচ হবে। একজন ছিটকে যাবে, আশা করি আমরা পরের পর্বে।’

আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনিকে বৃহস্পতিবার রাতের সাংবাদিক সম্মেলনে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া এবং রদ্রিগো ডি পল চোটের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কিছুক্ষণ নীরব ছিলেন। পরে ডি’মারিয়া ও ডি পলের চোট নিয়ে স্কালোনি উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'ও (ডি পল) গতকাল প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, ডি মারিয়াও গতকাল প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আমরা বৃহস্পতিবার অনুশীলনে পরখ করব দু’জন খেলতে পারবে কি না। এখনই নিশ্চিত আমরা কিছু বলছি না।  বৃহস্পতিবারই আমাদের শেষ ট্রেনিং হবে এবং আমরা দেখব ওরা খেলার জায়গায় আছে কিনা। তারপর আমরা ম্যাচের দিন গেমপ্ল্যানের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব।'

রদ্রিগো ডি পলের সম্ভাব্য চোট সম্পর্কে সংবাদমাধ্যম কীভাবে জানল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন স্কালোনি। তিনি বলেন, ‘গত বুধবার আমরা বন্ধ দরজার পিছনে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। আমি জানি না আপনি কীভাবে জেনে গেলেন রদ্রিগোর চোট। তাই, তারা যদি ভাল বোধ করে, তাহলে আমরা শেষ প্রশিক্ষণে দেখব তারা লাইন আপে থাকবে কিনা।’
তাঁদের ফেভারিট ধরার বিষয়ে স্কোলানি বলেন, ‘এটি একটি সরু দড়ি দিয়ে হাঁটছি। আমরা বলতে পারি না কে ফেভারিট এবং কারা জিততে পারে।’ একইসঙ্গে যোগ করেন, ‘আমরা জানি যে আমাদের দল অন্যদের হারাবে। যেমন আমরা আগের ম্যাচ গুলোয় হারিয়েছি।’ 
কোন খেলোয়াড় তাকে সবচেয়ে বেশি অবাক করে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, ম্যাক অ্যালিস্টার বৃহস্পতিবার বলেন, 'আমরা লিওকে চিনি এবং সে প্রতিদিন আমাদের চমকে দেয়। আমি বলব এটা লিও মেসি। প্রশিক্ষণ এবং ম্যাচ দু'ক্ষেত্রেই সে অবিশ্বাস্য কাজ করে।' মেসিকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে প্রতিপক্ষ দলগুলোর সাথে দল কীভাবে মানিয়ে নেবে সে বিষয়ে জানতে চাইলে আর্জেন্টিনার ম্যানেজার লিওনেল স্কালোনি বলেন, ' আমরা শুক্রবার দেখতে চাই মাঠে কী হয়। আমরা জানি আমাদের প্রতিপক্ষরা ভিন্ন কিছু নিয়ে আসতে অভ্যস্ত।'

একই সাথে কাতার বিশ্বকাপে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে প্রথম জয়ের সময় আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন সহকারী কোচ পাবলো আইমার। স্কালোনি আবারও সে বিষয়ে তুলে এনে বলেন, ‘আমি আমার ভাইয়ের কাছ থেকে একটি বার্তা পেয়েছি। সে কাঁদছিল। এটা হতে পারে না। এটা যেন ফুটবল ম্যাচের চেয়ে বেশি কিছু। খেলোয়াড়দের বুঝতে হবে এটি একটি ফুটবল ম্যাচ। না হলে প্রতি ম্যাচেই এমন হবে। মানুষকে বোঝানো কঠিন যে আগামীকাল সূর্য উঠবে, জিতবে বা হারবে। আপনি কীভাবে কাজ করেন তা গুরুত্বপূর্ণ।'

৭১ বছরের ডাচ কোচ লুই ভ্যান গলের বিষয়ে স্কালোনি বলেন, ‘ভ্যান গলের মতো কোচের মুখোমুখি হওয়াটাই গর্বের। আরও ভালো লাগছে বিশ্বকাপের মঞ্চ বলে। সকলেই জানি ফুটবলে ওঁর অবদানের কথা। বহু মানুষ তাঁকে অনুকরণ করার চেষ্টা করেন। কী দুর্দান্ত অতীত রয়েছে! ফুটবল এমনই এক মুহূর্ত, যেটা আনন্দ উপহার দেয়।’

অন্য দিকে ডাচ গোলরক্ষক আন্দ্রেস নপ্পের্ট বলেছেন তিনি মেসির বিরুদ্ধে পেনাল্টি শুটের জন্য প্রস্তুত। তিনি বলেছেন, ‘আমি সব সময়ই পেনাল্টির জন্য প্রস্তুত। মেসি মিস করতেই পারে। আমরা সেটা এই বিশ্বকাপে আগেও দেখেছি। ও আমাদের মতোই একজন মানুষ। অবশ্যই ও ভালো প্লেয়ার, কিন্তু আমিও প্রস্তুত।’

মেসিকে আটকানোর বিষয়ে ডাচ সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার নাথান এঁকে বলেছেন, ‘এটা সত্যি শক্ত কাজ। যেমন আমি আগে বলেছি, তিনি সম্ভবত এই সময়ের সেরা একজন। তাই এটা কঠিন হবে। এটি একটি ভালো চ্যালেঞ্জও হবে। আমি দলের জন্য চিন্তা করি। শুধু ডিফেন্ডারদের জন্য নয়, পুরো দলকেই আমি খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আরও অনেক খেলোয়াৎ আছে যা অন্যদের চিন্তার কারণ। আমাদের খুব ভালো খেলোয়াড় রয়েছে। তাই আমরা নিশ্চিত যে আমরা কৌশলগতভাবে খুব ভালো জায়গায় থাকবো।’

নেদারল্যান্ড কোচ লুইস ভান গাল অবশ্য এই খেলা থেকে ২০১৪-র হিসাব মিটিয়ে নিতে চান। গত বছরের আগস্টে লুই ভ্যান গাল তৃতীয়বারের মতো কোচের ফিরে আসার পর থেকে নেদারল্যান্ডস ১৯ ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে। নেদারল্যান্ডস যখন ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হারে তখনও ভ্যান গাল দায়িত্বে ছিলেন।

Comments :0

Login to leave a comment