বিজেপির কৃষক উন্নয়নের দাবি আসলে ফাঁপা। ডিজিটাল পোস্টারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে এই প্রচার তুলে ধরল সারাভারত কৃষকসভা।
কৃষকসভার তরফে নিজেদের এক্স হ্যান্ডেলে একাধিক ডিজিটাল পোস্টারের একটি সিরিজ প্রকাশ করা হয়। সেখানে ‘মোদী কি গ্যারেন্টি’র বাস্তব ছবি তুলে ধরা হয়েছে। বিজেপির অন্যতম প্রধান দাবি হচ্ছে, কৃষকদের জন্য কৃষিবীমার ব্যবস্থা করা। কৃষকসভা তথ্য দিয়ে তুলে ধরেছে, মোদী সরকার প্রধানমন্ত্রী ফসলবীমা যোজনার মাধ্যমে মাত্র ৩৮৭৮ কোটি টাকা কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। বিজেপির দাবি অনুযায়ী, ৪ থেকে ৬ কোটি কৃষক এই যোজনায় নাম লিখিয়েছেন। কিন্তু সরকারি তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে মাত্র ৭.৮ লক্ষ কৃষক এর সুবিধা পেয়েছেন।
কৃষকসভা জানাচ্ছে, এই প্রকল্পের অবাস্তবতার জন্য অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, বিহার, ঝাড়খন্ড এবং মোদীর নিজের গুজরাটের মত রাজ্যের সরকার কেন্দ্রের এই প্রকল্প থেকে মুখ ফিরিয়েছে। কৃষকসভা বলছে, এই যোজনার ফলে লভবান হয়েছে কেবলমাত্র বীমা কোম্পানিগুলি।
বিজেপির আরও একটি দাবি হল কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৬ সালে মোদী ঘোষণা করেছিলেন, ২০২২ সাল, অর্থাৎ স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হবে। কৃষকসভা বলছে, ২০২১ সালের সরকারি সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ সালে দেশের কৃষকদের গড় মাসিক আয় ছিল ১০,২১৮ টাকা। এই আয় সরকারি লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও কম। এর থেকেই স্পষ্ট, বিজেপি প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদীর অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল দেশের সমস্ত প্রান্তকে সেচের আওতায় আনা। ২০১৫ সালে এই খাতে ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। কৃষকসভা বলছে, এই প্রকল্পও ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানে ১.৪ কোটি এমন খেত রয়েছে, যেখানে সেচের কোনও ব্যবস্থা নেই। একইসঙ্গে ২০১৫-২০২১ সালের মধ্যে খরার প্রকোপে সাড়ে তিন কোটি হেক্টর জমিতে ফসল নষ্ট হয়েছে। ২০১৬ সালে দক্ষিণ ভারতের খরার প্রকোপ ১৮৭৬ সালের খরার থেকেও ভয়ঙ্কর ছিল।
এই তথ্য তুলে ধরে কৃষকসভা বলছে, বিজেপির দেওয়া ‘হর খেত কো পানি’ বা প্রতিটি খেতে সেচ সংযোগের দাবি অন্তঃসার শূন্য প্রপাগান্ডা ছাড়া কিছুই নয়।
Comments :0