Amazaon layoff may hit delivery workers in Kolkata

অ্যামাজনের ঘোষণায় শঙ্কা কলকাতার ডেলিভারি কর্মীদেরও

রাজ্য

ছবি প্রতীকি

ডেলিভারির চাহিদা যখন বেশি থাকবে তখন নতুন লোক নেওয়া হবে। আর যখন সেই চাহিদা থাকবে না তখন হবে কর্মী ছাঁটাই। সুইগি,অ্যামাজন, জোমাটো, ফ্লিপকার্টের মতো অনলাইনে জিনিস কেনা বেচা বা খাবার ডেলিভারি সংস্থা গুলি নিয়োগ এবং ছাঁটাইয়ের নীতি এমনই। 

কর্মীদের মধ্যে আবার রয়েছে দু’টি অংশ। একটি অংশ সরাসরি কোম্পানির মাধ্যমে নিযুক্ত। অন্যরা ডেলিভারির সাথে যারা যুক্ত। এই ‘ডেলিভারি বয়’-দের নিয়োগ হয় বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে, সরাসরি সংস্থার কর্মী হিসেবে নয়। 

১০ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করেছে বহুজাতিক সংস্থা অ্যামাজন। অনলাইন ডেলিভারি বাজারে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে এই সংস্থা। ছাঁটাই সরাসরি হবে আমাজনের নিজস্ব কর্মীদেরই। তার প্রভাব পড়বে অনলাইন কমার্সে যুক্ত বিভিন্ন অংশের জীবিকার ওপর। কলকাতায় অনলাইন ডেলিভারির কাজেও প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সিআইটিইউ নেতা সাগ্নিক সেনগুপ্ত জানিয়েছেন যে ন্যূনতম সুরক্ষার দাবিতে আলোচনা হয়েছে রাজ্য সরকারের সঙ্গে। বারবার রাস্তায় নেমে চলছে আন্দোলনও।

ডেলিভারির সঙ্গে যুক্ত অনেকেরই অনিশ্চয়তায় বেড়েছে কলকাতায়। অনলাইন কর্মাস কর্মীদের সংগঠিত করার কাজেই যুক্ত সিআইটিইউ নেতা সাগ্নিক সেনগুপ্ত। তিনি বলছেন, ‘‘ প্রত্যেক অনলাইন ডেলিভারি সংস্থার কর্মীর নিজস্ব আইডি রয়েছে, সংস্থাই দেয়। সেই আইডি যতক্ষণ চালু রয়েছে ততক্ষণ কাজ। আইডি ‘অ্যাক্টিভ’ না থাকলেই কাজও নেই। কিন্তু কখন এই আইডি বন্ধ করা হবে তার কোনও আগাম খবর পান না ডেলিভারি কর্মীরা।’’

কাজের যেমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। ঠিক সেই ভাবে নেই আয়ের নিশ্চয়তা। আজ যিনি ডেলিভারি পিছু ৩৫ টাকা পান, কাল তা নাও পেতে পারেন। ৩৫ টাকা নেমে আসতে পারে ১৫ টাকায়। এখন তেমনই হয়েছে। লকডাউনের সময় যখন অনলাইনের খাবার কেনা, চাল, ডাল, সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বিপুল চাহিদা, কর্মী নিয়োগ বেড়েছিল। ডেলিভারি পিছু আয়ের অঙ্কও বেড়েছিল। সেই সময় ডেলিভারি পিছু একজন সুইগি কর্মী পেতেন ৩৫ টাকা। কিন্তু লকডাউন ওঠার পর সেই ৩৫ টাকা কমে হয় মাত্র ১৫ টাকা, জানা গিয়েছে কর্মীদের থেকেই।

ই-কমার্স কর্মী অরিজিৎ দত্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘‘ডেলিভারি কর্মীদের কোনও চাকরির নিশ্চয়তা নেই। একজন কর্মী যদি ডেলিভারির কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়েন, কোম্পানির দায়িত্ব নেয় না। নির্ধারিত সময় নেই কাজের। আয় রাখতে হলে বাড়াতে হবে কাজের ঘন্টা।’’ 

একজন ডেলিভারি কর্মীর ক্ষেত্রে কাজ করার অবশ্যই দরকার বাইক বা স্কুটি। সেই স্কুটির তেল ভাড়া, ইন্টারনেটের খরচও ওই কর্মীকেই বইতে হয়, জানিয়েছেন অরিজিৎ দত্ত। 

সাগ্নিক সেনগুপ্ত বলছেন, ‘‘শ্রম আইনের আওতায় নেই এই কর্মীরা। ন্যূনতম মজুরি, ছাঁটাইয়ের ক্ষতিপূরণের ব্যাপারই নেই। কাজের নিশ্চয়তা নেই। রাজ্য সরকারের শ্রম দপ্তরের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা চলছে। যাতে রাজ্য সরকার অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য বিশেষ আইন ব্যবস্থা করা হয়। যাতে অনিশ্চয়তার দায় কমাতে বাধ্য করা যায় সরকারকে। কেরালা সরকারের মতো ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডেকে আলোচনার দাবিও জানানো হয়েছে।’’       

Comments :0

Login to leave a comment