2024 INDIAN GENERAL ELECTION

তু ঝুট বোলতা হ্যয়, তু ঝুট বোলতা হ্যয়

জাতীয়

BJP TMC CPIM CONGRESS WOMENS RESERVATION BILL SITARAM YECHURY RAHUL GANDHI AMIT SHAH BENGALI NEWS নিশা বৌদ্ধের গানের থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট।

‘‘তু ঝুট বোলতা হ্যয়, তু ঝুট বোলতা হ্যয়’’। বাংলায় তর্জমা করলে দাঁড়ায়, তুমি মিথ্যা কথা বল, তুমি মিথ্যা কথা বল। রাজস্থানের এই ভাইরাল গানের ছত্রে ছত্রে তুলে ধরা হয়েছে মোদী সরকারের ‘হকিকৎ’ বা আসল চরিত্র। সেই গানকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। 

রাজস্থানের রাষ্ট্রীয় ভীম মিশনের গায়িকা নিশা বৌদ্ধের গাওয়া গানের লিরিক্সের অনুবাদ হল, ‘‘ সংবিধানের শপথ নিয়ে তুমি সংসদ চালানোর কথা বল, কিন্তু তুমি এতটাই বেইমান, সেই সংবিধান জ্বালিয়ে দাও। আমি শপথ নিচ্ছি, তোমাকে আর সংবিধান জ্বালাতে দেব না। এবার থেকে সংবিধান মেনেই দেশ চলবে। তুমি মিথ্যা কথা বল, কেবলই মিথ্যা কথা বল। তুমি বলেছিলে, আমায় ভোট দাও, আমি কালো টাকা ফেরত আনব, প্রধানমন্ত্রী হলে আচ্ছে দিন আনব। তুমি মিথ্যা কথা বল, কেবল মিথ্যা কথা বল, মোদী মিথ্যা কথা বলে, কেবলই মিথ্যা কথা বলে।’’

এই গানের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া এক্সে শেয়ার করেছেন সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য সুভাষিনী আলি। তিনি লিখেছেন, ‘‘ ‘তুমি মিথ্যা কথা বল’, এই গানকে আটকাতে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে বিজেপি।’’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, উত্তর ভারতে গানের মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রচার এবং বক্তব্য পৌঁছনোর রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। বিহার, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশের মত রাজ্যগুলিতে গানের মাধ্যমে ভাষা খুঁজে পায় নির্বাচনী প্রচার। কিন্তু সেই প্রচারের অভিঘাত হজম করতে পারছে না বিজেপি, কারণ সহজ সুরের এই গান খুব সহজেই মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে। গানের লড়াইয়ে পালটা ভাষ্য খুঁজে না পেয়ে আদালতের ছুটেছে বিজেপি।

বিজেপি কেবল নিজের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির খেলাপ করেছে এমনটা নয়, কংগ্রেসের অভিবাসী শাখার সভাপতি স্যাম পিত্রোদার বক্তব্য বিকৃত করে কংগ্রেসকে আক্রমণ শানিয়েই চলেছেন খোদ নরেন্দ্র মোদী।

স্যাম পিত্রোদা বলেছিলেন, পশ্চিমী দেশগুলির মত ভারতেও অতি ধনীদের উপর উত্তরাধিকার কর বসানো উচিত। কংগ্রেস যদিও সেই মতকে সমর্থন করেনি। কিন্তু মোদী সেই বক্তব্যকে নিজের মত করে দুমড়ে মুচড়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করে চলেছেন।

রবিবার কর্ণাটকের বেলগাভি, সিরসি, দাভাংগেরে এবং হোসাপেটে’র সভা থেকে মোদী বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের রাজপুত্র এবং তাঁর বোন এক্সরে মেশিন নিয়ে ঘুরছে। ক্ষমতায় এলেই ওরা আপনাদের সম্পত্তি, ব্যাঙ্ক লকার, জমি, বাড়ি, গাড়ি, স্ত্রীধন, মঙ্গলসূত্রের এক্সরে করবে, এবং সমস্ত সম্পত্তি দখল করবে। ওরা বলছে সম্পদের পুনঃবন্টন করবে। কাদের মধ্যে করবে পুনঃবন্টন? আপনাদের সম্পদ ওরা ওদের ভোট ব্যাঙ্কের হাতে তুলে দেবে। মোদী যতদিন বেঁচে রয়েছে, ততদিন এই কাজ করতে দেবে না।’’

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এক্সে লিখেছেন, ‘‘মোদী ইচ্ছাকরে রাহুল গান্ধীর প্রত্যেকটি বক্তব্যকে বিকৃত করছেন, এবং চেষ্টা করছেন সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও আবেগ উষ্কে দিতে। অসামাজিক মানসিকতা থেকে উনি এই কাজ করছেন। নরেন্দ্র মোদী বুঝতে পেরেছেন তিনি এবং তাঁর দল ক্ষমতায় ফিরবে না। তাই মরিয়া হয়ে এই জাতীয় লজ্জাজনক ভাষণ দিচ্ছেন।’’

বিজেপির বক্তব্য বিকৃতির পালটা কংগ্রেসের প্রচারে তুলে আনা হয়েছে, ‘‘তপশিলী জাতি, অন্যান্য অনগ্রসর অংশ ও আদিবাসীদের সংরক্ষণ দুর্বল করার জন্য গত ১০ বছর ধরে ঢালাও বেসরকারীকরণ করা হয়েছে, কারণ বেসরকারী ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নেই।’’

কংগ্রেসের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি ৪০০ আসন চাইছে, কারণ ৪০০ আসন পেলে সংবিধান সংশোধন সম্ভব। এবং সংবিধান সংশোধন করে বিজেপি সবার আগে সংরক্ষণ তুলে দেবে।’’

বিহার, উত্তর প্রদেশের মত রাজ্যে কংগ্রেসের এই প্রচার ব্যপক প্রভাব ফেলেছে। তারফলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’কে জনসভায় দাঁড়িয়ে বলতে হয়েছে, ‘‘বিজেপি ৪০০ আসন পেলেও সংরক্ষণ তুলে দেওয়া হবে না। এটা মোদীর গ্যারান্টি।’’

Comments :0

Login to leave a comment