ASSEMBLY SALIM

বিধানসভায় নাটক চলছে, মানুষের কথা বলছে বামপন্থীরা: সেলিম

রাজ্য জেলা

শুভ্রজ্যোতি মজুমদার ও অনন্ত সাঁতরা, সিঙ্গুর

লোকসভা থেকে গ্রামসভা মানুষের কথা হচ্ছে না। বেকারি নিয়ে, একশো দিনের কাজ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না। নাটক হচ্ছে, যেমন চলছে এ রাজ্যের বিধানসভায়। সংবাদমাধ্যম সে নাটকের অংশীদার হয়ে পড়ছে। বামপন্থীরা তাই মানুষের কাছে মানুষের কথা বলছে। তাই জনসভা, তাই ইনসাফ যাত্রা হচ্ছে। 
শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে সিঙ্গুরে এই ভাষাতেই বামপন্থীদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতা কমরেড সুহৃদ দত্তের স্মরণসভায় যোগ দিতে সিঙ্গুরে আসেন তিনি। 


বিধানসভায় তৃণমূল এবং বিজেপি’র ‘সংঘাত’ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয় সেলিমকে। তিনি বলেন, ‘‘বিধানসভায় বিরোধী দল নেই। যা আছে তা পুরনো তৃণমূল। সেটিকেই বিজেপি বলে চালানো হচ্ছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘গোট দেশে কোণঠাসা হচ্ছে বিজেপি। এ রাজ্যেও সঙ্কটে রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর জনসভায় লোক হয়নি। বিজেপি সংবাদমাধ্যমে ভেসে থাকার চেষ্টা করছে।’’
বামপন্থীদের রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘যেখানে মানুষের দুর্দশার কথা আছে, বেকারি, ফসলের দাম, স্মার্ট মিটার, একশো দিনের কাজ, আবাসের টাকা চুরির কতা আছে সেই রাজনীতির কথা বলছে বামপন্থীরা। নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি কখনও ৩৭০ ধারা কখনও সেঙ্গল (নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনে) দেখিয়ে মানুষের সঙ্গে চালাকি করছিল। মানুষ তা ধরে ফেলেছেন। লাদাখকে কাশ্মীর থেকে আলাদা করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করেছিল। সেখানে বিজেপি’র বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন মানুষ। এ রাজ্যে উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার কথা বলে চালাকি চলছে। মানুষ মণিপুর দেখেছেন, আদিবাসীদের সঙ্গে তফসিলি মানুষকে লড়িয়ে দিতে দেখেছেন বিজেপি’কে। চালাকিতে কাজ হবে না।’’ 
বিধানসভা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা থেকে বিধানসভা বা গ্রামসভা মানুষের কথা হচ্ছে না। এ রাজ্যের সাংসদরা, তৃণমূল বা বিজেপি’র, লোকসভায় কবে বেকারি নিয়ে বিতর্ক করেছেন? কবে ১০০ দিনের কাজের কথা তুলেছেন? কবে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সংসদে সরব হয়েছেন? জঙ্গল পাহাড় কেটে সাফ করা হচ্ছে। কবে পরিবেশ ধ্বংস নিয়ে সরব হয়েছেন? কেবল নাটক হচ্ছে। মিডিয়া সে নাটকের অংশীদার। আমরা তাই মানুষের কাছে যাচ্ছি।’’ 
রাজ্যের আইন মন্ত্রী মলয় ঘটকের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট চেয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে চিঠি পাঠিয়েছে সিবিআই। কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্তে ওই ব্যাঙ্ককে ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে নথি পাঠাতে বলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে সেলিম বলেন, ‘‘কয়লা পাচার দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ ওঠার এতদিন পরে কেন ব্যাঙ্কে চিঠি? টাকা কেউ রেখে দেবে? দুর্নীতিগ্রস্তদের সবাইকে টাকা সরানোর সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।’’
ইডি, সিবিআই এবং কেন্দ্রের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার তো নীরব মোদী বিজয় মালিয়াকে ব্যাঙ্কের টাকা পাচার করে সরে পড়ার সুযোগ দিয়েছে। তেমন এ রাজ্যেও আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের নির্দেশে ইডি-সিবিআই তৃণমূলকে চুরি টাকা সরাতে সাহায্য করছে।’’
পাঁচ রাজ্যের ভোট এবং বিরোধী রাজনৈতিক বিন্যাস ‘ইন্ডিয়া’ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘আমরা বলেছিলাম ‘ইন্ডিয়া’ নির্বাচনী জোট নয়। বিজেপি বিরোধী দলগুলির মঞ্চ। পাঁচ রাজ্যে সেখানকার পরিস্থিতি অনুযায়ী ভোট হয়েছে। ‘ইন্ডিয়া’-তে আরও দল যুক্ত হবে। তবে তৃণমূল সরে যেতে পারে। ভাইপোকে বাঁচানোর জন্য বিজেপি বিরোধিতা কমিয়ে চলতে হবে।’’   
 

Comments :0

Login to leave a comment