বিশ্বজিৎ রায়, জেঠিয়া
দেশ,রাজ্যকে বাঁচানোর লড়াইয়ে হাতে হাত রেখে ব্রিগেডের সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি। ডিওয়াইএফআই ও এসএফআই বীজপুর – পানপুর গ্রাম লোকাল কমিটির উদ্যোগে জেঠিয়ার নান্না শিবাজী এফ পি স্কুলের মাঠে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এই জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ডিওয়াইএফআই নেতা সম্পদ ব্যানার্জী। এই সভায় এছাড়াও বক্তব্য রাখেন এসএফআই উওর চব্বিশ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সোনালী মজুমদার, ডিওয়াইএফআই রাজ্য কমিটির সদস্য অভিষেক ভট্টাচার্য সহ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, ‘‘চোর দাঙ্গাবাজদের হাত থেকে দেশ ও রাজ্যকে বাচাতে হবে। দেশের শাসকদল আমাদের সংস্কৃতি, ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে চাইছে। আমরা কি খাব, কি পরবো এটা কি ঠিক করার ঠিকাদারি বিজেপি নিয়েছে? এরা মানুষের ঐক্যকে ভাঙতে চাইছে। বিভাজনের রাজনীতি এদের হাতিয়ার। মোদীরাজ, যোগীরাজ, শাহরাজত্বে মদের নেশায় বুদ হয়ে দলিতদের খুন করা হচ্ছে। খুন কে খুন বলা যাবে না। এরা সংবিধান মানতে চায় না। এদের রাজত্বে আম্বানী, আদানী লাভবান হচ্ছে। মানুষের কোনো লাভ হচ্ছে না। এরা মানুষের স্বার্থে কোনো কাজ করে না। বিজেপি’র শাসনে দেশের মানুষ সুরক্ষিত নেই’’।
তিনি বলেন, ‘‘এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাইপোকে বাঁচাতে দিল্লি যাচ্ছেন। চুরি দুর্নীতি এই রাজ্যে ভয়াবহ আকার নিয়েছে। তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীরা এই চুরি দুর্নীতির সাথে যুক্ত। ছয় বছর ধরে অডিট না করে এই রাজ্যে অনেক বাকিবুরের জন্ম দিয়েছে। গরীবের চাল চুরি করে মন্ত্রী জেলে গিয়েছে। চাকরির দাবিতে যোগ্য ব্যাক্তিরা রাস্তায় দিন কাটাচ্ছেন। শূন্যপদ সৃষ্টি করছে না। গত তেরো বছরে অনেক নারকেল ফাটিয়েছে। কিন্তু একটা শিল্প হয় নি। কাচড়াপাড়ায় রেলের কোচ ফ্যাক্টরী হয় নি। সরকারের কাছে স্কুল খোলা অগ্রাধিকার পায় না। এই রাজ্যে ৮ হাজার ৩২২ টা স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু কয়েক হাজার মদের দোকান খুলে দিয়েছে। এই রাজ্যের বিনয়, বাদল, দীনেশ রাইটার্সে ঢুকে ইংরেজ অফিসারকে মারবার সাহস রাখে। মাতঙ্গিনী হাজরা, ক্ষুদিরামের এই দেশ। এখানে চোর দাঙ্গাবাজদের ঠাই নেই’’।
যুবশক্তি পত্রিকার প্রাক্তন সম্পাদক পলাশ দাস বলেন, ‘‘বিজেপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে নি। রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সঙ্কুচিত হয়েছে। দেশের সম্পদ আদানী আম্বানীদের হাতে তুলে দিচ্ছে। কৃষক ফসলের দাম পাচ্ছে না। বিরোধীশূন্য দেশ ও রাজ্য চাইছে বিজেপি ও তৃণমূল। মোদী রামের ভারতের কথা বলছে। কিন্তু এই দেশ বেকারময়, দারিদ্রময় ভারত হয়ে দাড়িয়েছে। ধর্মকে আশ্রয় করে বাঁচতে চাইছে তৃণমূল ও বিজেপি। তৃণমূল ও বিজেপি একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করছে। আগামী ব্রিগেডের সমাবেশ এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে।
প্রাক্তন এসএফআই নেত্রী গার্গী চ্যাটার্জী বলেন, ‘‘শিল্পে কর্মচঞ্চল এই রাজ্যটাকে কাটমানি খোরেদের রাজ্য পরিণত করেছে তৃণমূল। বামফ্রন্টের সময়ে এখানে শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে ঋষি বঙ্কিম শিল্প তালুক গড়া হয়। সেখানে গত তেরো বছরে একটিও নতুন শিল্প আসে নি। গণতন্ত্র কেড়ে নিতে চাইছে তৃণমূল ও বিজেপি। ব্রিগেড সমাবেশ আগামী দিনে এই দুই দলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নতুন দিক নির্দেশিত হবে।
ডিওয়াইএফআই উওর চব্বিশ পরগনা জেলা কমিটির সম্পাদক সপ্তর্ষী দেব বলেন, আমাদের দেশের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র ভেঙে দিতে চাইছে বিজেপি। এরা সংবিধান মানতে রাজি নয়। মানুষের ঐক্যকে সুদৃঢ় করে এদের বিরুদ্ধে লড়াই আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করতে হবে। আগামী ব্রিগেডের সমাবেশ এই রাজ্যে বৃহত্তর সমাবেশে অংশগ্রহণ করার জন্য যুবদের আবেদন জানান তিনি।
Comments :0