প্রকাশ্য রাস্তায় তৃণমূলের বাহিনী তাঁকে বাধ্য করেছিল কান ধরে বলতে, ‘আমি আর সিপিআই(এম) করবো না।’ তিনি বীরভূমের সিপিআই(এম) নেতা ধীরেন লেট। প্রাক্তন বিধায়কও। আজ সেই ধীরেন লেট মিছিলে হাঁটলেন। যৌবনের মিছিলে। যেই মিছিল মানুষের জন্য ইনসাফ চাইছে, মানুষের দরবারে গিয়ে।
১৯ তম দিনে পা দিল ডিওয়াইএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির ডাকে চলতে থাকা ইনসাফ যাত্রা। গত ৩ নভেম্বর কোচবিহার থেকে শুরু হয়েছে এই ইনসাফ যাত্রা। উত্তরবঙ্গের সব জেলা ঘুরে মঙ্গলবার তা প্রবেশ করেছে বীরভূমে। এদিন ইনসাফ যাত্রায় পা মেলান সিপিআই(এম) নেতা গৌতম ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘গোটা পৃথিবীতে যত পরিবর্তন হয়েছে তাতে জৌবন নেতৃত্ব দিয়েছে। আমরা আশা করছি দেশ এবং রাজ্য যেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তার থেকে যৌবনের শক্তি আমাদের উদ্ধার করবে।’’
মীনাক্ষী মুখার্জি, ধ্রুবজ্যোতি সাহাদের সাথে মিছিলে হাঁটেন প্রাক্তন বিধায়ক তথা কৃষক সভার নেথা ধীরেন লেট। ২০১৫ সালে অনুব্রত মন্ডলের গুন্ডা বাহিনীর হাতে আক্রান্ত হন তিনি। বাঁশ দিয়ে মেরে তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। কান তাঁকে বলতে বাধ্য করা হয় যে সে আর কোন দিন সিপিআই(এম) করবে না। আজ সেই ধীরেন লেট মিছিলে। পরু চুরির অপরাধে জেলে অনুব্রত।
তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল বিজেপি যেই অরাজকতা শুরু করেছে। বালি, পাথর চুরি, মানুষের খাবারও চুরি করছে। যুব সমাজ এবং ছাত্র সমাজ পারে এদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে।’’
কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলন করে ডিওয়াইএফআই রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলা হয়েছিল যে কাজ এবং শিক্ষার দাবিতে তাদের এই পদযাত্রা। তবে এর পাশাপাশি প্রতিদিন প্রতিটা ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে যেই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে সেই কথাও তারা তুলে ধরবেন। তাই হচ্ছে ‘ইনসাফ’ চাইতে মিছিলে হাঁটছেন শ্রমিক, কৃষক, ক্ষেতমজুররা।
কাজ চাই, শিক্ষা চাই। এই দাবিকে সমানে রেখে দুমাস রাজ্য জুড়ে মিছিল করবে ডিওয়াইএফআই। ৭ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এই ইনসাফ যাত্রা। যুব নেতৃত্বের কথায় কাজের দাবিতে তাদের এই পদযাত্রা শুধু নয়। রাজ্যের তৃণমূল এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যে ভাবে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষের সাথে অন্যায় করে চলেছে তার ‘ইনসাফ’ চেয়ে তারা পথে নেমেছে।
কোচবিহার থেকে শুরু হওয়া এই পদযাত্রায় বার বার দেখা যাচ্ছে যে, ছোট বড় বিভিন্ন সভায় যুবরা বলছেন, কাজের দাবি শুধু নয় সাধারণ মানুষে নিত্য দিনের যেই সমস্যা বিচার তারা চায়।
গায়ে সাদা জামা। মাথায় সাদা টুপিতে আঁকা লাল তারা। সবার হাতে বড় সাদা ঝান্ডা। যেই ঝান্ডা রাজ্যের কারখানার জন্য পদযাত্রা করেছিল, বক্রেশ্বর তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে জন্য রক্ত দিয়েছিল। সেই সংগঠন ডিওয়াইএফআই এবার কোচবিহার থেকে কলকাতা পর্যন্ত পদযাত্রা শুরু করলো কাজের দাবি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারকে সুনিশ্চিত করতে।
Comments :0