Family of the doctor

মিথ্যা বলছে পুলিশ, ক্ষোভ পরিবারের

রাজ্য

আরজি কর কান্ডে নিহত চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের দিনের একটি ভিডিও ভাইরাল। সেখানে দেখা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে বিপুল পরিমাণ মানুষ অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই অভিযোগ খন্ডন করে  কলকাতা পুলিশ জানিয়েছিল, ঘটনাস্থল ৫১ ফুট জায়গা। তারমধ্যে ঘিরে রাখা ছিল ৪০ ফুট। মাত্র ১১ ফুট বরাদ্দ ছিল উৎসুক জনতার জন্য। সেই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার নিহত চিকিৎসকের বাবা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘‘মিথ্যা কথা বলছে পুলিশ। ষড়যন্ত্র করে প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে।’’
চিকিৎসকের হত্যাকান্ডের পরে পুলিশের তরফে প্রমাণ লোপাট ও তদন্ত ভুল পথে চালিত করার যাবতীয় অভিযোগ খন্ডন করা হয়েছিল। কিন্তু এদিন নিহত ছাত্রীর পরিবারের তরফে পুলিশ প্রশাসন ও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। 
একইসঙ্গে নিহত ছাত্রীর পরিবার তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত, পুলিশের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে ভাইরাল ভিডিও’র সাফাই দিতে দেখা গিয়েছিল এই ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়কেই। তিনি বলেছেন, ‘‘ঘটনাস্থলে সকাল থেকে নিহতের বাড়ির লোক উপস্থিত ছিলেন।’’
ছাত্রীর বাবার বক্তব্য, ‘‘ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় মিথ্যা কথা বলছেন। বিকেল ৩টের আগে আমাকে সেমিনার রুমে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আর আমি যখন ভিতরে ঢুকি, তখন পুলিশ কমিশনার ছাড়া দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত ছিলনা। কিন্তু ওই ঘরে কোনও কর্ডন ছিলনা, লোকজন অবাধে যাতায়াত করতে পারে। ঘটনার দিনের ভাইরাল ভিডিওতে যেমন ভিড় ছিল বাইরে, বাস্তবেও ঠিক তাই ছিল। প্রমাণ নষ্টের সমস্ত সুযোগ ছিল।’’
তিনি বলেছেন, ‘‘এগারো ফুট জায়গায় কোনওদিন অত লোক থাকতে পারেনা। ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা দেখেছি, লোকের বসার জন্য বেঞ্চের ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় যতগুলো কথা বলেছেন, সবগুলো মিথ্যা বলেছেন। সমস্ত তথ্য প্রমাণ নষ্ট করা হয়েছে।’’
নিহত ছাত্রীর মা বলেছেন, ‘‘আমাদের মূল অভিযোগ পুলিশ প্রশাসন এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সিবিআই সন্দীপ ঘোষকে এতদিন ধরে জেরা করেই চলেছে, কিন্তু কেন গ্রেপ্তার করছে না আমরা সেই প্রশ্ন করতে চাই। কুণাল ঘোষ বলছেন এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা, আমরা এতে অত্যন্ত যন্ত্রণা পেয়েছি।’’
চিকিৎসকের বাবার কথায়, ‘‘যাঁদের ভরসায় মেয়েকে পড়তে পাঠিয়েছিলাম, তারাই ওঁকে মেরে ফেলল।সিবিআই তদন্তেরও কোনও ফল চোখে দেখতে পাচ্ছি না।’’
নিহতের মায়ের কথায়, ‘‘আমাদের সন্দেহ পুলিশ কমিশনার আমাদের সিরিয়ালের সেটের মত সাজানো জায়গা দেখিয়েছেন ঘটনাস্থল বলে। আমাদের মনে হয় আসল ঘটনা সেখানে ঘটেনি। বড় ষড়যন্ত্র করে সবটা করা হয়েছে, তাই এতদিন হয়ে গেলেও কেউ ধরা পড়ছে না।’’
নিহত ছাত্রীর এক আত্মীয়ের কথায়, ‘‘পুলিশ আরজি কর থেকে দৌড়ে দৌড়ে আমাদের মেয়ের দেহ বের করেছে। শববাহী গাড়িতে আমাদের উঠতে দেয়নি। ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দিয়েছে। শ্মশান ঘাটে বাড়ির লোককে ঘেষতে দেওয়া হয়নি। শববাহী গাড়ির দখল ছিল পুলিশের কাছে। আমাদের পণ্যবাহী গাড়ি করে সেখানে পৌঁছতে হয়েছে। শ্মশানেও পুলিশ দেহ ঘিরে রেখেছিল।’’

Comments :0

Login to leave a comment