প্রসঙ্গত, গত বছর ১৫ জুলাই শিলঙে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে রাজ্যগুলির মধ্যেকার সীমান্ত বিরোধ নিয়ে আলোচনার পর স্বয়ং অমিত শাহ সাংবাদিক সম্মেলন করে জোরগলায় ঘোষণা করেছিলেন সীমানা বিরোধের নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। শাহ-র এই ঘোষণার পর দশ দিন কাটতে না কাটতেই আসাম ও মিজোরামের পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। সংঘর্ষের চেহারা দেখে অনেকেরই মনে হয়েছে যেন দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ হচ্ছে। এবছরের ২৯ মার্চ দিল্লিতে সীমানা নিয়ে আসাম মেঘালয়ের মধ্যে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন দু’রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেদিনও অমিত শাহ এই চুক্তিকে ঐতিহাসিক ঘোষণা করে বলেছিলেন গত ৫০ বছরে কেউ যা করতে পারেনি তারা সেটা করে দেখিয়েছেন। আসলে কি করেছেন তার নমুনা মিলেছে ২২ নভেম্বর আসাম পুলিশের গুলিতে পাঁচ খাসি মানুষের মৃত্যুতে।
ক্ষমতায় আসার পর মোদী ঘোষণা করেন আগের সরকার ‘লুক ইস্ট’ নীতি নিয়েছিল। আমরা ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি নিয়েছি। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে মোদী-শাহদের ঘনঘন আনাগোনা শুরু হয়। অচিরেই লক্ষ্য করা যায় ভোটে না জিতেও মোটা টাকায় বিধায়ক কিনে সব রাজ্যেই বিজেপি ক্ষমতা দখল করে। ক্ষমতা দখল করলেই হয় না, ক্ষমতা ধরে রাখতে হলে মানুষের স্বার্থে কাজ করতে হয়। সমস্যার সমাধান করতে হয়। কিন্তু মোদীদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই মানুষের হাজারো সমস্যা, কাজ, রুজি, মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদিকে ঘিরে ক্ষোভের আগুন যাতে না জ্বলে তাই দৃষ্টি ঘোরাতে নানা ইস্যুকে খুঁচিয়ে তোলা হয়। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত বিরোধ তেমনই ইস্যু যাকে কাজে লাগিয়ে অনেক কিছু ভুলিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখা যায়। একই কায়দায় সম্প্রতি মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটক সরকার দুই রাজ্যের সীমান্ত বিরোধকে খুঁচিয়ে তুলছেন। সরকারে ব্যর্থতা ঢেকে ভোটে চ্যাম্পিয়ান হবার এটা সহজ ইস্যু। সর্বত্র নানা ইস্যুতে বিরোধ-বিতর্ক, সংঘাত-সংঘর্ষ জিইয়ে রেখে মোদী-শাহ’র ক্ষমতায় লাগাম হাতে রাখতে চান।
Comments :0