North Bengal Medical College and Hospital

উত্তরবঙ্গে জুনিয়রদের পাশে প্রতীকী অনশনে সিনিয়র চিকিৎসকরা

রাজ্য জেলা

উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অনশন মঞ্চে ফেডারেশন অব মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (এফইএমএ)’র তরফে জুনিয়ার চিকিৎসকদের সাথে অনশন মঞ্চে প্রতীকি অনশনে অংশগ্রহণ করলেন দুইজন সিনিয়ার চিকিৎসক। অনশন মঞ্চে যোগ দিলেন সিনিয়ার চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অর্থপেডিক তথা অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টরসদের পক্ষে উৎপল বন্দোপাধ্যায় ও হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট (এইচওডি) অর্থপেডিক চিকিৎসক পার্থসারথী সরকার। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অনশন মঞ্চে বুধবার সকাল দশটা থেকে ১২ ঘন্টার প্রতীকি অনশনে বসেছেন এই দুই সিনিয়ার চিকিৎসকেরা। 
এদিন প্রতীকি অনশন চলাকালীন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অর্থপেডিক উৎপল বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আজকে অনশনের ১৩দিন। অনশনের দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও সরকারের তরফে কোন নমনীয়তা সংবেদনশীলতা দেখতে পাইনি। গত ১৪ অক্টোবর চিফ সেক্রেটারি ও হোম সেক্রেটারির সাথে বৈঠক হয়েছে। বৈঠক শেষে ন্যায্য মানুষের দাবিগুলি মেনে নিতে সরকারের অপারগতা কোথায় জানতে চেয়েছি। দীর্ঘ দুইমাসের বেশী সময় ধরে চালিয়ে যাওয়া আন্দোলনে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে মানুষ কাদের পক্ষে রয়েছেন। এই সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে না দাঁড়ালে ইতিহাস তথা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আপনাদের কি চোখে দেখবে সেটা ভাবতে শুরু করুন। অনশন,  প্রতীকি অনশন, বিভিন্ন জায়গায় সরকারী ও বেসরকারী চিকিৎসকদের বিভিন্ন আন্দোলন, জুনিয়ার চিকিৎসকদের সাথে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত যোগাযোগ কোনভাবেই সরকারকে নমনীয় করতে পারেনি। তিনি আরো বলেন,  দ্রোহের কার্নিভাল হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্ট পুলিশের ১৬৩ খারিজ করে দিয়েছে। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ হয়েছে। এর থেকে ক্ষমতায় যারা আছেন তাদের প্রতি যদি কোন বার্তা যায়, সেটাই রাজ্যের জন্য মঙ্গলদায়ক হবে। ১০/১২ জন যারা অনশনে আছেন শুধুমাত্র তাদের ইস্যু নয়,  রাজ্যের ইস্যু নিয়ে। প্রচুর সাধারণ মানুষ অনশন মঞ্চে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন। যারা ক্ষমতায় আছেন পুলিশের একটা অংশের অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাদের দিয়ে আন্দোলনকারীদের হেনস্তা করা হচ্ছে গত কয়েকদিনে আমাদের এই অভিজ্ঞতা হয়েছে। ইঙ্গিত পাচ্ছি। আন্দোলনের মর্মবস্তু সেটা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসনের অন্দরমহলে পৌঁছে গেছে। সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হলে মঙ্গলহবে।’’ আন্দোলন চালিয়ে যাবার পাশাপাশি আন্দোরত জুনিয়ার চিকিৎসকদের স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেবারও অনুরোধ জানান তিনি। 


এইচওডি অর্থপেডিক চিকিৎসক পার্থসারথী সরকার বলেন,  ‘‘অনশন আমাদের কাছে শাস্তি। আমরা চাইছি পরিবারের মতো ভেবে সরকার আমাদের দেখুক। নেত্রী দেখুক। নেত্রীকে দেখতে হবে যদি তাঁর বাড়ির কেউ না খেয়ে বসে থাকে তাহলে কি তিনি নয়দিন অপেক্ষা করবেন তাঁকে বোঝানোর জন্য। নির্দিষ্ট সময় পরে তাঁকেও তো নামতে হবে। বুঝতে হবে। সাধারণ মানুষের স্বার্থে ১০ দফা দাবির অর্ডার চাইছে। খুব বড় কিছু চাওয়া হয়নি।’’
উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অনশনরত জুনিয়ার চিকিৎসক সন্দীপ মন্ডলের শারিরীক অবস্থার খোঁজখবর রাখছেন সিনিয়ার চিকিৎসকেরা। দফায় দফায় সিনিয়ার চিকিৎসকেরা অনশন মঞ্চে আসছেন। এদিন অনশনরত জুনিয়ার চিকিৎসক সন্দীপ মন্ডল জানান, ‘‘অভয়ার বিচার চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে যে ১০ দফা দাবি উঠে এসেছে। সেই দাবিতেই টানা ৬৭ দিন অতিক্রান্ত। আমাদের কাজ আন্দোলন করা নয়,  রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া। তবুও বাধ্য হয়ে অনশন আন্দোলনে বসেছি। কিন্তু সরকারের তরফে কোন সদুত্তর পাচ্ছিনা। মনোবল ভাঙেনি। কিন্তু অনশনকারী ডাক্তাররা একের পর এক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এরপরে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়বে। সাধারণ মানুষ আমাদের সাথে আছেন। আন্দোলন চলবে।’’

আরজি কর হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় মহিলা পিজিটি চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের বিচার সহ ১০ দফা দাবিতে কলকাতার ধর্মতলা ও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেই অনশনের সমর্থনে অনশনে বসেছেন লখনউ’র কিং জর্জমেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা। তাদের অশনশন প্রায় ৪০ ঘন্টা পার হয়ে গেছে। 

Comments :0

Login to leave a comment