'সন্ত্রাসবাদ’ দমনের নামে ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় চলছে বোমাবর্ষণ। ‘সন্ত্রাসবাদ’কে ঠেকানোর নামে হাসপাতালকে চারিদিক থেকে ঘিরে নিয়ে চলেছে সেনা অভিযান। বিমান থেকেও ফেলা হয়েছে বোমা। পরিস্থিতি এমনই, যে ইনকিউবেটরে থাকা ৩১টি প্রাণকে বাঁচানোর জন্য পাঠানোর চেষ্টা চলছে মিশরে। রবিবারের শেষে এই ছিল গাজা ভূখণ্ডের অবস্থা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কারা সন্ত্রাস চালাচ্ছে, আর কারা তা দমন করার কাজে নেমেছে, প্যালেস্তাইনের এই ভূখণ্ডে আবছা হয়ে গিয়েছে সেই ব্যবধান।
গাজা ভূখণ্ডের আল-শিফা হাসপাতালে জীবন সঙ্কটের মুখে ছিল সময়ের আগে জন্মানো ৩৯টি শিশু। আল-জাজিরা জানাচ্ছে, ৩৯টি শিশুর মধ্যে ৩১জনকে নিরাপদে দক্ষিণ গাজায় স্থানান্তরিত করা সম্ভব হয়েছে। তাদের মিশরে পাঠানোর তোড়জোড় ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার থেকে আল-শিফার নিয়ন্ত্রণ নিতে ঝাঁপায় ইজরায়েলি সেনা। চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয় হাসপাতালটিকে। বন্ধ করে দেওয়া হয় হাসপাতালের জ্বালানী এবং ওষুধের জোগান। জ্বালানীর অভাবে জেনারেটর চালানো যায়নি। তারফলে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন হয়ে পড়ে আল-শিফার।
এই অবস্থায় বন্ধ হয়ে যায় হাসপাতালের ইনকিউবেটর। ৩৯টি শিশুকে বাঁচানো যাবে কিনা, সেই আশঙ্কা তৈরি হয়। যদিও সমস্ত সংশয় দূর করে আল-শিফার ডিরেক্টর মহম্মদ জাকুট রবিবার জানিয়েছেন, ৩১জন শিশুকে নিরাপদে হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তারা ৩জন চিকিৎসক এবং ২জন নার্সের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তাদের যত দ্রুত সম্ভব মিশরে পাঠানোর চেষ্টা চলছে।
আল-জাজিরা জানাচ্ছে, প্যালেস্তাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৬টি অ্যাম্বুলেন্সের সাহায্যে শিশুদের দক্ষিণ গাজায় পাঠানো হয়েছে। গোটা উদ্ধারকাজে ভূমিকা নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহ রাষ্ট্রসংঘের একাধিক সংস্থা।
অপরদিকে আল-জাজিরা সহ গাজার স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার আল-শিফা হাসপাতালের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের বন্দুকের নলের সামনে দাঁড় করায় ইজরায়েলি সেনা। খুনের হুমকি দিয়ে তাঁদের বাধ্য করা হয় হাসপাতাল ছেড়ে চলে যেতে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল শনিবার আল-শিফায় পৌঁছয়। তাঁরা নিজেদের প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, তখনও কয়েক শো রোগী হাসপাতালে ছিল। তাঁরা চিকিৎসার জন্য ছটফট করছিলেন। কিন্তু চিকিৎসা দেওয়ার কেউ ছিলনা হাসপাতালে।
Comments :0