লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ১০-১২টি আসনে জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে সিপিআই(এম) সহ বামপন্থী প্রার্থীদের। রবিবার অনলাইন সংবাদমাধ্যম প্রিন্টের তরফে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি এমনটাই বলেছেন।
সেলিম বলেছেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা বলছে, রাজ্যে বিজেপির শক্তি কমছে, এবং বামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে। লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে সেই ছবি আরও স্পষ্ট হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’’
মহম্মদ সেলিম নিজে মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী ইতিমধ্যেই কয়েক দফায় তাঁর হয়ে প্রচারে গিয়েছেন। সাক্ষাৎকারে সেই বিষয়টি তুলে ধরে সেলিম বলেছেন, ‘‘রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে বামপন্থীদের সার্বিক বোঝাপড়া হয়েছে। সেই বোঝাপড়ার ভিত্তিতে সিপিআই(এম) ২৩টি আসনে, কংগ্রেস ১২টি আসনে এবং বামফ্রন্টের শরিক দলগুলি ৭টি আসনে লড়ছে।’’
সাক্ষাৎকারে মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘তৃণমূলের মত দলগুলি মানুষকে বোঝাতে চায়, আমাদের সঙ্গে থাকলে তবেই লক্ষীর ভান্ডারের মত সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধা মিলবে। আমরা মনে করি এই প্রকল্পগুলি মানুষের অধিকার। কারোর দয়ার দান নয়। বামপন্থীরা এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্চ ইত্যাদি প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে সবার আগে এই প্রকল্পগুলি চালু করেছিল। আমরা এরাজ্যের দায়িত্বে এলে এই জাতীয় প্রকল্পের পরিধি আরও বৃদ্ধি পাবে, কারণ দুর্নীতির দরজা বন্ধ করা হবে, এবং সমস্ত মানুষ এইগুলির সুবিধা পাবেন।’’
সেলিম বলেছেন, ‘‘তৃণমূল আমাদের কর্মীদের নামে ৮০ হাজারের বেশি মিথ্যা মামলা করেছিল। চেষ্টা হয়েছিল, মানুষের সঙ্গে আমাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার। সাময়িক কিছু সমস্যা কাটিয়ে উঠে ফের মানুষের সঙ্গে নিবিড় সংযোগ গড়ে তুলছেন সিপিআই(এম) কর্মীরা। তারফলেই নির্বাচনের প্রেক্ষাপট বদলে যাচ্ছে।’’
তৃণমূল এবং বিজেপির সংযোগ তুলে ধরে সাক্ষাৎকারে সেলিম বলেছেন, ‘‘গোটা দেশের সামনে সবথেকে বড় বিপদ হল আরএসএস, এবং আরএসএস’র সহযোগীর ভূমিকা নেয় তৃণমূল। শোরুম আলাদা হলেও বিজেপি এবং তৃণমূলের গোডাউন এক।’’
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘ অতীতের পরাজয় থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি। ভুলত্রুটি বিশ্লেষণ করেছি। সংগঠন পুনঃগঠনের কাজ চালিয়েছি আমরা। যুবশক্তিকে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। বাংলার পুনঃজাগরণের বামপন্থী শক্তির পুনরুজ্জীবন দরকার।’’
এই অভিজ্ঞতার নিরিখে তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যের অন্তত ১০-১২টি আসনে জেতার সম্ভাবনা রয়েছে।
সেলিম বলেছেন, ‘‘এরাজ্যে বামপন্থীরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চালিয়েছেন। অপরদিকে বিজেপি চুপ করে ছিল। কারণ তৃণমূলের দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতাদের দলে নিয়ে আশ্রয় দিয়েছে বিজেপি। এরাজ্যের মানুষ এখন বিশ্বাস করছেন, বিজেপির পক্ষে তৃণমূলের দুর্নীতির মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।’’
Comments :0