MS Swaminathan

প্রয়াত সবুজ বিপ্লবের জনক

জাতীয় আন্তর্জাতিক

প্রয়াত এমএস স্বামীনাথন। সবুজ বিপ্লবের জনক। বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন এই বৈজ্ঞানিক। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। 
তামিলনাড়ুর থাঞ্জাভুর জেলায় ৭ আগস্ট ১৯২৫ সালে তাঁর জন্ম। একজন কৃষিবিদ, কৃষি বিজ্ঞানী, উদ্ভিদ জেনেটিসিস্ট, প্রশাসক হিসাবে তিনি সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেছেন। উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি যা ভারতের গরীব, প্রান্তিক কৃষকদের বেশি উৎপাদন নিশ্চিত করতে সাহায্য করেছিল। 


স্বামীনাথন ১৯৪৯ সালে আলু, গম, চাল এবং পাটের জেনেটিক্স নিয়ে গবেষণার মধ্যে দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ভারত যখন ব্যাপক দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি, খাদ্যশস্যের অভাব যখণ প্রকট হচ্ছে তখন স্বামীনাথন এবং নর্মান বোরলাগ এবং অন্যান্য বিজ্ঞানীরা গমের উচ্চ ফলনশীল জাত বীজ উদ্ভাবন করেন।

স্বামীনাথন, যিনি জাতিসংঘের দ্বারা "অর্থনৈতিক বাস্তুবিদ্যার জনক" হিসাবে তিনি পরিচিত হন। স্বামীনাথন ১৯৬০-৭০ দশকে 'সবুজ বিপ্লব'-এর সাফল্যের জন্য সি সুব্রামানিয়াম এবং জগজীবন রামের মতো কৃষিমন্ত্রীদের সাথে কাজ করেছিলেন। যার ফলে রাসায়নিক-জৈবিক প্রযুক্তির অভিযোজনের মাধ্যমে গম ও ধানের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
ভারতে উচ্চ-ফলনশীল গম এবং ধানের জাতগুলির প্রবর্তনের জন্য বিকাশ ও নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য, তিনি ১৯৮৭ সালে প্রথম বিশ্ব খাদ্য পুরস্কারে ভূষিত হন, যার পরে তিনি চেন্নাইতে এমএস স্বামীনাথন রিসার্চ ফাউন্ডেশন স্থাপন করেন। স্বামীনাথন ১৯৭১ সালে র্যা মন ম্যাগসেসে পুরস্কার এবং ১৯৮৬ সালে আলবার্ট আইনস্টাইন বিশ্ব বিজ্ঞান পুরস্কারে ভূষিত হন।

তিনি পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ এবং পদ্মবিভূষণেও ভূষিত হয়েছেন। এছাড়াও তিনি এইচ কে ফিরোদিয়া পুরস্কার, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী জাতীয় পুরস্কার এবং ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কারের প্রাপক।
প্রয়াত বৈজ্ঞানিক ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ এবং পরে ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৭৯ সালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের মুখ্য সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৮সালে স্বামীনাথন প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক ইউনিয়নের সভাপতি হন। ২০০৪ সালে তিনি জাতীয় কৃষক কমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত হন। খরচের দ্বিগুন দাম এবং চাষের প্রকৃত খরচ বের করার সুপারিশ এই কমিশনেরই।

দেশে তার কাজের বাইরেও, স্বামীনাথন বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কৃষি ও পরিবেশগত উদ্যোগে নিজের অবদান রেখেছিলেন। টাইম ম্যাগাজিন তাঁকে বিংশ শতকের সবচেয়ে প্রভাবশালী ২০ জন এশিয়ানদের একজন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

Comments :0

Login to leave a comment