NEET SCAM

এনটিএ বাতিলের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভ দিল্লিতে, প্রশ্নফাঁসে গ্রেপ্তার ২

জাতীয়

NEET SCAM

অভিন্ন কেন্দ্রীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা নিটের প্রশ্নফাঁস ঘিরে বৃহস্পতিবার তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হল দিল্লিতে। এদিন নিট কান্ডের জন্য পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা এনটিএ-কে দায়ী করে দিল্লিতে তাঁদের অফিসে অভিযান চালায় কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন এনএসইউআই’র সদস্যরা। পাঁচিল টপকে সংস্থার সদর দপ্তরে ঢুকে পড়েন ছাত্ররা। 

নিটে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ সামনে আসার পরেই কেন্দ্রীয় এই সংস্থাকে কাঠগড়ায় তোলে বিরোধীরা। প্রসঙ্গত, আরএসএস ঘনিষ্ঠ প্রদীপ কুমার যোশী এনটিএ’র দায়িত্বে ছিলেন। সমালোচনার মুখে পড়ে তাকে সরিয়ে প্রাক্তন আইএএস অফিসার প্রদীপ সিং খারোলাকে দায়িত্বে আনা হয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, এনটিএ’র সক্রিয় সহযোগিতা ছাড়া এত বড় স্তরে প্রশ্নফাঁস সম্ভব নয়। তাই এনটিএ’কে ঢেলে সাজানোর দাবি তুলতে শুরু করেছেন তাঁরা।

একইসঙ্গে এদিন বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের তরফে দিল্লির যন্তর মন্তরে অনশন শুরু হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার হাতে চেন এবং তালা নিয়ে এনটিএ দপ্তরে ঢুকে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। ভিতর থেকে তালাবন্ধ করে দেওয়া হয় সংস্থাটিকে। ‘এনটিএ বন্ধ করো, এনটিএ মুর্দাবাদের’ মত স্লোগানও দেন বিক্ষোভকারীরা। পরবর্তীকালে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভ সরিয়ে দেয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, মহিলাদের উপরেও নির্বিচারে পুরুষ পুলিশ দিয়ে লাঠি চালানো হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, ৫ মে দেশের এবং দেশের বাইরের ৪৭৫০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে নিট হয়। ২৪ লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থী চিকিৎসক হওয়ার জন্য পরীক্ষায় বসেন। ১৪ জুন পরীক্ষার ফল প্রকাশের কথা থাকলেও ৪ জুন ফল প্রকাশ করে দেয় এনটিএ।সংস্থার তরফে জানানো হয়, নির্ধারিত সময়ের আগেই খাতা দেখা শেষ হয়ে গিয়েছিল, তাই সময়ের আগেই ফল প্রকাশ করা হয়। 

কিন্তু ফল প্রকাশের পরে দেখা যায়, নজিরবিহীন ভাবে ৬৭ জন পরীক্ষার্থী ৭২০ নম্বরের মধ্যে ৭২০ পেয়েছেন। হরিয়ানার ফরিদাবাদের একই পরীক্ষা কেন্দ্রের ৬জন পড়ুয়া রয়েছেন তার মধ্যে। তারফলে পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে কারচুপির আশঙ্কা তৈরি হয় পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে। 

এরইমাঝে এনটিএ’র তরফে দাবি করা হয়, প্রশ্নপত্র বিভ্রাট সহ একাধিক কারণে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের গ্রেস মার্কস দেওয়া হয়েছে। মেধা তালিকা খতিয়ে দেখা যায়, গ্রেস মার্কস পাওয়া পরীক্ষার্থীদের অনেকে ৭২০ নম্বরের মধ্যে ৭২০ পেয়েছেন।

এই অবস্থায় পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ সামনে আসে। প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানান, প্রশ্ন ফাঁস হয়নি, সবটাই বিরোধীদের মিথ্যা প্রচার। তারই মাঝে বিহার পুলিশের তরফে প্রশ্নফাঁস চক্রের মুখোশ খুলে ফেলা হয়। পাটনা পুলিশ জানায়, নিটের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। প্রশ্নপত্র মাফিয়া এবং একাধিক পরীক্ষার্থীকে জেরা করে এমনটাই সামনে এসেছে। 

বাধ্য হয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যদিও অমিত শাহ’র মন্ত্রক সিবিআইকে দেওয়া নির্দেশে বলেছে, অল্প কিছু বিভ্রাটের তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এই সংস্থা। 

এরইমাঝে বৃহস্পতিবার সিবিআই জানিয়েছে, প্রশ্নফাঁস কান্ডে জড়িত সন্দেহে পাটনা থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মনীষ কুমার এবং আশুতোষ কুমার নামে দুই অভিযুক্ত টাকা দিয়ে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র কেনা পরীক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করত। সেই নিরাপদ আশ্রয়ে বসেই ফাঁস হওয়া প্রশ্নের উত্তর মুখস্ত করত অসাধু পরীক্ষার্থীরা। পাটনার একটি মন্টেসারি প্লে-স্কুলকে এই কাজের জন্য ব্যবহার করা হত। 

সিবিআই জানিয়েছে, এখনও অবধি মোট ৬টি এফআইআর দায়ের হয়েছে প্রশ্নফাঁস কান্ডে। 

প্রসঙ্গত, নিটের পাশাপাশি এমবিবিএস, বিডিএস, আয়ুশের মত চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্যান্য পরীক্ষাও নিয়ে থাকে এনটিএ।

Comments :0

Login to leave a comment