CPIM Protested Rally

লাল ঝান্ডার দৃপ্ত সমাবেশ করেই তৃণমূলের হামলার প্রতিবাদ জানালেন আমতার মানুষ

রাজ্য

Protest Rally রবিবার খালনায় প্রতি বাদ সভায় বক্তব্য রাখছেন সুজন চক্রবর্তী।


শুভাশিস দেব সরকার


সপ্তাহ খানেক আগে আমতার খালনায় সিপিআই(এম)’র মিছিলে হামলা চালায় তৃণমূল। রবিবার সেই খালনাতেই মিছিল করে সন্ত্রাসের জবাব দিলেন গ্রামীণ হাওড়ার মানুষ।
রবিবার হাওড়ার জয়পুর থানা এলাকার খালনায় সিপিআই(এম)’র আমতা ২ নং ব্লক এরিয়া কমিটির উদ্যোগে সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়। সমাবেশের আগে মুকুন্দদিঘি থেকে খালনা অবধি বিশাল মিছিল হয়। সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ আহ্বাণ জানান, এক কোটি মানুষের সাক্ষর সংগ্রহ করে দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে বিপুল জনমত তৈরি করতে হবে।  
সপ্তাহ খানেক আগে তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠেছিল খালনার মিছিলে। তৃণমূল দুর্বৃত্তরা লাল ঝাণ্ডার কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। আক্রান্ত হতে হয়েছিল সিপিআই(এম) নেতা অশোক বাগ, সৌমিত্র ধাওয়া, অজিত রায়কে। আক্রান্ত হয়েও লাল ঝাণ্ডা ছাড়েননি মানুষ। এদিনও একই মেজাজে মিছিল এবং সমাবেশে সামিল হন হাজারো মানুষ। 
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, পার্টির হাওড়া জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ, পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য পরেশ পাল, পার্টি নেতা সন্তোষ অধিকারী, আইনজীবী সব্যসাচী চ্যাটার্জী , প্রয়াত আনিস খানের বাবা সালেম খান প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন শেখ মীরাজুদ্দিন। 
সুজন চক্রবর্তী বলেন, ২০১৮’র পঞ্চায়েত নির্বাচনে জোর করে সমস্ত কিছু দখল করেছিল তৃণমূল। কিন্তু ২০২৩’র পঞ্চায়েতে তা পারবে না। কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ তৃণমূল। তাই নিজেদের নব জগরণ যাত্রাতেই মারামারি করছে নিজেদের মধ্যে। সেই ঝামেলা থামাতে পুলিশকে মাঠে নামতে হচ্ছে। এর থেকেই তৃণমূলের অবস্থা পরিষ্কার। আর তাই বিজেপিকে অক্সিজেন দিচ্ছে তৃণমূল। যাতে বিরোধী ভোট কেটে তৃণমূলকে ভাসিয়ে রাখে তাঁরা। 

রবিবার কালনায় প্রতি বাদ সভায় বক্তব্য রাখছেন শ্রীজীব ভট্টাচার্য। ছবি -শুভাশিস দেব সরকার 


সুজন চক্রবর্তী বলেন, আমাদের টাকা পয়সা নেই । কিন্তু  আমাদের আছে মান, ইজ্জত আর সাধারণ মানুষের ভালবাসা। আর তৃণমূলের নেতারা চোর। সপরিবারে জেলে যাচ্ছে তৃণমূলের নেতারা। সাধারণ মানুষের কাছে এই সমস্ত বিষয় তুলে ধরতে হবে। এখনও যেই সমস্ত সাধারণ মানুষ তৃণমূলে রয়েছেন, তাঁদের বুঝিয়ে লালঝান্ডার দিকে আনতে হবে।  
তিনি বলেন তৃণমূল মানুষকে অপরাধী বানায়। তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের কারণে ৩৬০০০ ছেলে-মেয়ের চাকরী গেল। আসল অপরাধী তৃণমূলের নেতারা, যাঁরা টাকার বিনিময়ে চাকরি বিলিয়েছে। যারা যোগ্য তাদের চাকরির করার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। যারা টাকার বিনিময়ে চাকরী পেয়েছে তাদের চাকরি খারিজ করে যোগ্যদের চাকরী দিতে হবে।
শ্রীদীপ ভট্টাচার্য বলেন, আমাদের কর্মীদের খুন করে, হামলা, আক্রমণ, অত্যাচার  করেও তৃণমূল কংগ্রেস লাল ঝান্ডার শক্তিকে দুর্বল করতে পারেনি। ভবিষ্যতেও পারবে না। গরিব মানুষের স্বার্থে লাল ঝাণ্ডাই লড়াই করে। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে তরুণরা লাল ঝাণ্ডা নিয়ে মিছিল-সমাবেশে আসছে। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আনিস খান  তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছিল। তাই পুলিশকে ব্যবহার করে আনিসকে সরিয়ে দিল। আনিস খুনের বিচার চাইছেন মানুষ। 
ভট্টাচার্য বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির বিরুদ্ধে সমগ্র বাংলায় গ্রামে গ্রামে একজোট হওয়ার লড়াই চলছে। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে গড়ে ওঠা পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ছিল বাংলার গর্ব। গ্রামীন মানুষের সরকার গড়ে তুলেছিল বামফ্রন্ট। আর তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের আমলে পঞ্চায়েতে মানুষের গণতন্ত্র খর্ব করে পঞ্চায়েত দখল করা হয়েছে। 
তৃণমূলের আপাদ মস্তক দুর্নীতি প্রসঙ্গে শ্রীদীপ ভট্টাচার্য বলেন, কোটি কোটি টাকার কেলেঙ্কারি। গরু পাচার কান্ডে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডল তিহার জেলে বন্দী। রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রীও জেলে। বেহালায় মিছিল থেকে দাবি উঠেছে এলাকার বিধায়ক বদলের। তৃণমূল সরকার টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি করেছে। আর চাকরি বিক্রির ঘটনায় যে বিচারপতি তৎপরতা চালাচ্ছিলেন তাকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। 


দিলীপ ঘোষ বলেন, তৃণমূল বিজেপি দুটো সরকারি সমান। জিনিষের দাম, ওষুধের দাম বাড়ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে সর্বত্র কাটমানি চলছে ওপরতলা  থেকে নিচুতলা পর্যন্ত। মমতা ব্যানার্জির সরকারের আমলে প্রতিদিন মহিলাদের ওপর নির্যাতন বাড়ছে। বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাস্ত করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের পঞ্চায়েত গড়ে তুলতে হবে।

Comments :0

Login to leave a comment